ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘হালদা’র টানে হলমুখী তরুণরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭
‘হালদা’র টানে হলমুখী তরুণরা ‘হালদা’র টানে হলমুখী হয়েছেন তরুণরা, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: জেলা শহর ফেনীতে সিনেমা হলের ব্যবসা প্রায় নিভু নিভু। একটা সময় এ জেলায় প্রায় আধা ডজন সিনেমা হল থাকলেও বর্তমানে সাকুল্যে টিকে আছে মাত্র দুটি। হলের ভেতরকার নাজেহাল অবস্থা ও ভালো ছবির আকালে জেলার তরুণরা হলমুখো হয় না বললেই চলে। কিন্তু ‘হালদা’র ব্যাপারে সে প্রেক্ষাপট ভিন্ন, তরুণরা দলবেঁধে এখন হলে।

রোববার (০৩ ডিসেম্বর) শহরের দুলাল সিনেমা হলে রাত সাড়ে ৯টার শোতে গিয়ে দেখা যায় ছবিটি নিয়ে তরুণদেও উচ্ছ্বাস। হলের ভেতরকার দুর্গন্ধ এবং ছারপোকার কামড় খেয়েও বেশ উন্মুখ হয়ে পুরো ছবি দেখে হল থেকে বেরিয়েছেন তারা।

হলের ব্যবস্থাপক জানান, আয়নাবাজির পরে এ ছবিটি দেখার জন্য প্রচুর দর্শক হলে এসেছেন। প্রতিটি শোতেই দর্শকের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক।

জলদস্যুদের গল্পের সঙ্গে পরিচয় অনেকের। সিনেমার একদম শুরুতেই সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দারুণভাবে। নৌকা ডাকাতির পর সর্বস্ব হারানো জেলে মনু মিয়াকে জানে বাঁচিয়ে তার বাড়িতে ঠাঁই হয় এতিম বদির।

এরপর জমে যায় গল্পের রসায়ন। মনু মিয়ার মেয়ে হাসুকে ভালো লেগে যায়। হাসুও ভালোবাসতে শুরু করে বদিকে। দুজন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে হালদার পাড়ে ঘর বাঁধার। কিন্তু হাসুর বাবার গরিবির কাছে হার মানে সে স্বপ্ন। বিয়ে করতে হয় স্থানীয় প্রভাবশালী নিঃসন্তান নাদের চৌধুরীকে।

এভাবেই এগিয়ে যায় গল্প।

এসবের মাঝে ডুবে যেতে যেতে দর্শক দেখতে থাকে নদী পাড়ের কিছু অসাধু মানুষের কারণে হালদা মরে যাওয়ার করুণ চিত্র।
 
পরিচালক তৌকির আহমেদ দুর্দান্ত সিনেমা বানিয়েছেন বলতেই হবে। জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মোশাররফ করিম, ফজলুর রহমান বাবু, রুনা খান, দিলারা জামানসহ প্রত্যেকের কাজটিকে মনে হবে ক্যারিয়ারে সেরা কাজ। ছবিতে হালদা নদীর সৌন্দর্য খুব চমৎকারভাবে ক্যামেরার ফ্রেমে ফুটে উঠেছে, বলছেন দর্শকরা।

রাত ১২টায় শো শেষ করে বের হওয়ার পর তরুণদের চোখে দেখা যায় একটি ভালো ছবি দেখার উচ্ছ্বাস। হল থেকে বেরিয়েই ছবি নিয়ে আলোচনায় মেতে থাকতে দেখা গেছে তাদের। স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক আর এম আরিফুর রহমান জানান, আয়নাবাজি ছবিটিও হলে এসে দেখেছি। তার চাইতে হালদা অনেকগুণ ভালো। গল্প, নির্মাণ সব মিলিয়ে অসাধারণ। এ ছবিটি জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।

ছবিটি দেখে বের হওয়া সাংবাদিক নজির আহম্মদ রতন, আতিয়ার সজল, শেখ আবদুল হান্নান ও দিদার বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি অসাধারণ ছবি। ভালো ছবি তৈরি হওয়ার উৎসাহ দেওয়ার জন্য হলেও এসে দেখা উচিত।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও সমাজকর্মী আমের মক্কী বলেন, জীবনে এ প্রথম হলে এসে ছবি দেখছি। হালদার মতো ছবি তৈরি না হলে কখনোই হলে আসা হতো না।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
এসএইচডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।