১৯৭৮ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম প্লেব্যাক করেন। ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’ শিরোনামের গানটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পায়।
ব্যক্তি হিসেবে তিনি সবার কাছে প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুতে সঙ্গীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শাম্মীর এভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া চোখ ভিজিয়েছে তার বন্ধু, সহকর্মী ও অসংখ্য ভক্ত-শ্রোতার।
শাম্মীর সংগীত জীবনের শুরু হয় ৬ বছর বয়স থেকে। গানে হাতে খড়ি বরিশালের ওস্তাদ গৌর বাবুর কাছে। এরপর নানা সময়ে নানা জনের কাছে গানের তালিম নিয়েছেন গুণী এই শিল্পী। তার বাবা শামসুল করিম সরকারি চাকরি করতেন।
শাম্মী আখতারের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। ১৯৭৫ সালে খুলনা থেকে ঢাকায় আসেন। তিনি বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। পরবর্তীতে চলচ্চিত্র নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
আকরামুল ইসলামের সঙ্গে ১৯৭৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শাম্মী। তাদের দুই সন্তান কমল ও সাজিয়া। সর্বশেষ রাজধানীর শান্তিনগর চামেলীবাগের বাসায় তাদের বসবাস ছিলো।
‘আমি যেমন আছি তেমন রব, বউ হব না রে’, ‘এই রাত ডাকে এই চাঁদ ডাকে হায় তুমি কোথায়’, ‘আমি তোমার বধূ’, ‘ভালোবাসলেই সবার সাথে ঘর বাধা যায় না’, ‘আমার নায়ে পার হইতে লাগে ষোলো আনা’, 'আমার মনের বেদনা', 'বিদেশ গিয়া বন্ধু'সহ চলচ্চিত্রের প্রায় ৩শ’ গানে কণ্ঠ দিয়েছে শাম্মী। ২০১০ সালে ‘ভালোবাসলেই সবার সাথে ঘর বাধা যায় না’ ছবির জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
সদ্য প্রয়াত গুণী এই সংগীত শিল্পী প্রায় ছয় বছর ধরে স্তন ক্যানসারে ভুগছিলেন। যার কারণে দীর্ঘদিন তিনি সংগীত চর্চা থেকে দূরে ছিলেন। অসুস্থতার কারণে শাম্মী টাকার সংকটে পড়েছিলেন। পেয়েছিলেন সরকারি সহায়তা।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় দুপুরে হঠাৎ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেল ৪টার দিকে শাম্মী আখতার পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বাদ জোহর শান্তিনগর আমিনবাগ মসজিদে জানাজা শেষে শাহজাহানপুর কবরস্থানে গানের এই পাখিকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
জেআইএম/আরবি/