২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আসলাম তালুকদার মান্না মারা যান। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ার কারণে এই অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তার পরিবার।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না বলেন, মান্নাকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। কোনো প্রস্তুতি না রেখেই মান্নাকে হার্টের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, যেটা উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা শাস্ত্রে ঘটে না।
তিনি আরও জানান, এ বছরই মান্নার মৃত্যু নিয়ে করা মামলার শুনানি হবে, আর মানুষ জানবে মান্নার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে।
মান্নার মৃত্যুর দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শেলী বলেন, মান্না মাঝরাতে যখন বাসায় ফিরেছে তখন বুকে একটু ব্যথা করছিল। রাতে খাওয়া দাওয়া করেছে, কিন্তু ব্যথা তো যায়নি। মান্না অতি সতর্ক একজন মানুষ। তাই ভাবলো ইউনাইটেড হাসপাতালে যাই।
তিনি আরও বলেন, মান্না কিন্তু গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে গেছেন। ডাক্তারের ভাষায় অ্যাকুইট হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। যদি কারো কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় সে কোনোভাবেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবে না। একটা স্টেপও নিতে পারবে না। মান্না যখন হাসপাতালে ভর্তি হলো তখন ভোর পৌনে পাঁচটা। মান্নার চিকিৎসা সাধারণ ডাক্তাররা করেছেন। ট্রিটমেন্ট করে যখন কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে। তখন ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা হার্টের একটা ইনজেকশন দেয়, নাম ‘এসকে’। অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই এসব করা হয়েছে। আমরা কেস করেছি, এগুলো পয়েন্ট আছে।
‘সিঙ্গাপুর বা ব্যাংকসহ উন্নত দেশে অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত রেখে, কার্ডিওলজিস্ট সঙ্গে রেখে তারপর ওই ‘এসকে’ ইনজেকশন দেওয়া হয়। মান্নার বেলায় এসব করা হয়নি। ওই ইনজেকশন দেওয়ার পর মান্না গোঙরানি করে বমি করে দিয়েছে। তাদের ডাক্তার রুটিন অনুযায়ী ৯ টায় এসেছে। ডাক্তার ফাতেমার অধীনে ট্রিটমেন্ট হয়। ওই হাসপাতালে কি প্রোসিডিউর ছিল না? ওই সময় ইমারজেন্সিতে নিয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে রাইট টাইমে রাইট চিকিৎসাটা করতো, দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হিসাব কিন্তু দিতে পারেনি,’ বললেন শেলী মান্না।
তিনি জানান, এই বছরই মামলার একটা শুনানি হবে। এই শুনানি হলে হয়তো একযুগ পরে হলেও ন্যায় বিচার পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। মান্না কীভাবে মারা গেছেন সেটা মানুষ জানবে এবং ভুল চিকিৎসা, দেরি চিকিৎসা এসবই মান্নার জীবনে ঘটেছে বলে দাবি করেন শেলী মান্না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
জেআইএম