ভারতের কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ মারা গেছেন। রোববার (১৬ জানুয়ারি) রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কত্থক নাচের এই সাধক শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তার মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছে নিকট আত্মীরা।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন পণ্ডিত বিরজু মহারাজ। রোববার রাতে দিল্লির বাড়িতে নাতির সঙ্গে খেলছিলেন তিনি, সেই সময় আচমকাই তার শরীর খারাপ করে। পরে দ্রুত দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সক। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কালকা-বিনন্দাদিন ঘরাণার শিল্পী ছিলেন বিরজু মহারাজ। তার জন্ম ১৯৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি লখনউয়ের এক নামী কত্থক নৃত্যশিল্পীদের পরিবারে। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল ব্রিজমোহন নাথ মিশ্র, ছোট থেকেই নাচ-গানের পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি।
বিরজু মহারাজের গুরু ছিলেন তার বাবা অচ্ছন মহারাজ। খুব ছোট বয়সেই বাবার কাছে কত্থক নাচের তালিম শুরু তার। এর পাশাপাশি কাকা শম্ভু মহারাজ এবং লাচ্চু মহারাজ বরাবর অনুপ্রাণিত করেছিলেন বিরজু মহারাজকে।
শিশুশিল্পী হিসাবেই বাবার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতেন তিনি। কৈশোরে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘গুরু’ তকমা জুড়ে গিয়েছিল তার নামের আগে। রামপুরের নবাবের দরবারে নৃত্য পরিবেশন করতে বিরজু মহারাজ। মাত্র ২৮ বছরে সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার জেতেন বিরজু মহারাজ। নাচই ছিল তার প্রথম ভালোবাসা। তবে শাস্ত্রীয় সংগীতের ওপরও চমত্কার দখল ছিল এই পণ্ডিতের।
১৯৮৩ সালে ভারত সরকারে পক্ষ থেকে পদ্মবিভূষণ পান বিরজু মহারাজ। পেয়েছেন কালীদাস সম্মানও। এই কত্থক গুরু বেশ কিছু ছবিতে কোরিওগ্রাফির দায়িত্বভার সামলেছেন। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে। নতুন শতাব্দীতে ‘দেবদাস’, ‘বাজিরাও মস্তানি’র মতো ছবিতে বিরজু মহারাজের কোরিওগ্রাফি মুগ্ধ করেছে অপামর ভারতীয়কে। ‘বিশ্বরূপম’ ছবিতে কোরিওগ্রাফির জন্য চলচ্চিত্রে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন বিরজু মহারাজ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
জেএইচটি