ঢাকা: ঘূর্ণিঝড়, জাহাজডুবি কিংবা আত্মহত্যা, কতভাবেই না সমুদ্রে তলিয়ে যায় মরদেহ। সে মানুষ হোক বা জীবজন্তু; প্রশ্ন হলো, সলিল সমাধি হওয়া সেইসব মরদেহের কী হয়, কোথায় যায়!
এ প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেন কানাডার সিমন ফ্রেসার ইউনিভার্সিটির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ গেইল অ্যান্ডারসন।
প্রতিবছর লাখো মরদেহ সমুদ্রে মিলিয়ে যায়। কিন্তু আসলে কেউ জানেন না এরপর কী ঘটে, বলছেন এ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ।
এজন্য সম্প্রতি অ্যান্ডারসন ও তার দল সমুদ্রগভীরে একটি পরীক্ষামূলক গবেষণার আয়োজন করেন। জলের নিচে ভিডিও ধারণসহ গবেষণার যাবতীয় সাহায্যে এগিয়ে আসে ভিক্টোরিয়া এক্সপেরিমেন্টাল নেটওয়ার্ক আন্ডার দ্য সী (ভেনাস) নামে একটি ল্যাবরেটরি। সব প্রস্তুত, কেবল একটি জিনিস বাদে। পরীক্ষার জন্য চাই একটি মরদেহ!
অবশেষে সমাধান মিলল। শোনা যাক অ্যান্ডারসনের মুখেই, এক্ষেত্রে শূকরই আমাদের প্রথম পছন্দ ছিল। এ প্রাণীটির সঙ্গে মানুষের গড় আকারের বেশ মিল। মানুষ ও শূকরের মরদেহে একই রকম ব্যাকটেরিয়া দেখা যায়।
সব প্রস্তুত এবার পরীক্ষা শুরুর পালা। পরীক্ষাক্ষেত্র হিসেবে নির্বাচন করা হলো ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যানক্যুভার দ্বীপের একটি জনবিচ্ছিন্ন অঞ্চল। একটি সাবমেরিনের মাধ্যমে ৩৩০ ফুট নোনা জলের গভীরে দড়ি বেঁধে ফেলা হলো শূকরের মরদেহ।
এদিকে, ভেনাসের ল্যাবরেটরি থেকে সারাক্ষণ চোখ রাখা হচ্ছে মরদেহের উপর। প্রতি মুহূর্তে অক্সিজেনের মাত্রা, তাপ, চাপ, লবণতা ও অন্য বিষয়াদি।
তারা খেয়াল করেন, সমুদ্রের গভীরে সব জায়গায় সমান পরিমাণ অক্সিজেন নেই। কোথাও কম, কোথাও বেশি। এজন্য মরদেহ পচনের ক্ষেত্রে সময়ের তারতম্য ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একঝাঁক কাঁকড়া গিয়ে শূকরের মরদেহটি ঘিরে ধরে। তারপর শুরু হয় তাদের রাজকীয় ভোজন!
এ বিষয়ে গবেষকদের মত, বেশিরভাগ মরদেহ সাধারণত সমুদ্রপ্রাণীদের খাবারে পরিণত হয়। সেক্ষেত্রে হাড়গোড়গুলোই পড়ে থাকে।
তবে গবেষণার স্বার্থে শূকরের হাড়গুলো তারা ঠিকই সংগ্রহ করেছেন। এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে আরও গবেষণা চালাবেন অ্যান্ডারসনের দল।
বাংলাদেশ সময়: ০০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৪