ঢাকা: বিড়াল পানি ঘৃণা করে বা ভয় পায় এটা সবাই জানি। কিন্তু আমস্টারডামে চারদিকে পানি থাকা সত্ত্বেও ভয়ের চিহ্ন দেখা যায় না বিড়ালদের চোখে-মুখে।
শুধু তাই নয়, এই পরিবেশ তারা বেশ উপভোগও করে। নিজেরা পানিঘেরা পরিবেশে থেকে পানিতে ঘোরাফেরা করা হাঁসেদের সাঁতার কাটা দেখতে আনন্দ পায়।
যা বলছি এর সবই সম্ভব, কারণ বিড়ালগুলো রয়েছে একটি ক্যাটবোটে। আর এটি তাদের শেল্টার হাউস।
ভাসমানই প্রাসোদপম প্রতিটি কাঠের বাড়ি বা নৌকায় ঠিকানা অনন্ত ৫০টি বিড়ালের। এরা সবাই ছন্নছাড়া বিড়াল। তাদের নিজস্ব কোনো ঘর নেই। তাই তাদের জায়গা হয়েছে নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামের খালের ভাসমান বাড়িতে। এটাই তাদের শেল্টার হাউস।
এদের দেখাশোনার জন্য রয়েছে স্বেচ্ছাসেবী দল। এখানের ভ্রমণপিপাসুরাও উপভোগ করেন এ অভিনব দৃশ্য। উপভোগ করে বিড়ালগুলোও।
১৯৬৬ সালের কথা। বিড়ালপ্রেমী হেনরিট ভ্যান উইল্ড। গাছের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও তাদের সঙ্গে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেয় একটি বিড়াল। তার আরেকটি…তারপর আরেকটি….তারপর আরও একটি…… এভাবে পরিবার বড় থেকে আরও বড় থাকে।
হেনরিটের তখন আরও বড় জায়গা দরকার হয়ে পড়লো। অন্য কোথাও সরানো প্রয়োজন হয়ে পড়লো বিড়ালগুলোকে। এমন সময় তার বাড়ির সামনেই উপযুক্ত একটি জায়গা পেয়ে গেলেন হেনরিট। এটা একটি খাল, যেখানে মানুষ ভাসমান ঘর তৈরি করে থাকেন।
সুতারং, তার মাথায়ও দারুণ এক চিন্তা এসে জুটলো। হাউসবোটের অনুকরণে বানিয়ে ফেললেন ক্যাটবোট। একটিতে যখন তাদের স্থান সংকুলান না হতে থাকে তখন বানিয়ে ফেলেন আরেকটি।
আর হেনরিটের সেই ক্যাট শেল্টার হাউস আজ পর্যটকেদের আকর্ষণের একটি জায়গা। বিশেষ করে যারা পশু বা বিড়ালপ্রেমী তারা এ স্থানটিতে এসে সময় কাটাতে ভোলেন না।
শেল্টার হাউসটিকে প্রাসাদ বললে মোটেও ভুল হবে না। এখানে তাদের ঘরে ঢুকতেই রয়েছে একটি রিসিপশন। সেখানে রয়েছেন কয়েকজন দক্ষ সহায়তাকারী কর্মী। তারা অপনাকে সব ধরনের তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে।
কি রয়েছে ঘরের ভিতরে? এ প্রশ্ন জাগতেই পারে। তাহলে জেনে নিন। রিসিপশন পার হয়ে একটি রুম। সেখানে বিড়ালের জন্য মনোরম বেড, খাবারের পাত্র, থাকার জন্য আলাদা বক্স রয়েছে।
এছাড়া রয়েছে তাদের খেলাধূলা, খেলতে খেলতে ঘুমিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা। বিশ্বের সব দেশের পর্যটকরা এখানে বেড়াতে যেতে পারেন। তবে সারাদিন নয়, নির্দিষ্ট একটি সময়ে শুধু ভ্রমণ করা যায় এখানে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৪