একবার ভাবুন তো, আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কোনো বরফের জারের মধ্যে। পা থেকে গলা পর্যন্ত ডোবা বরফে।
আমাদের শরীর কতো বেশি ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে? সেটা অবশ্য নির্ভর করে কতোটা ঠাণ্ডা তার ওপরে। এভারেস্টের চূড়ায় কতো ঠাণ্ডা? নিশ্চয় মাইনাস ডিগ্রি।
কারও পক্ষে কি শীত নিবারণের পর্যাপ্ত কাপড় ছাড়া এতো ঠাণ্ডায় দীর্ঘক্ষণ থাকা সম্ভব?
না, পৃথিবীতে একজন মানুষ আছেন। নাম তার উইম হফ। বয়স ৫৫। এভারেস্টের ২৪ হাজার ফুট ওপরেও যিনি ছিলেন শুধু তার শর্টস পরে। বিশ্ব তাকে জানে আইসম্যান বা বরফমানব হিসেবে।
তবে এভারেস্ট আরোহণ তার জন্য খুব সুখকর ছিলো না। কারণ, সামিটের ৫ হাজার ফুটে গিয়ে তিনি পায়ে মারাত্মক আঘাত পান। এ কারণে শেষ পর্যন্ত এভারেস্ট জয় করা হয়নি তার।
উইম ইতোমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন। নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের ব্রায়ান্ট পার্কে রেকর্ড ভাঙার বীরত্বগাথায় খালি শরীরে তিনি ১ ঘণ্টা ৫২ মিনিট ৪২ সেকেন্ড নিজেকে বরফে ডুবিয়ে রাখেন।
শুধু তাই নয়, বরফের মতো মরুভূমিতেও যথেষ্ট পারদর্শী তিনি। নামিবিয়ার মরুভূমিতে তিনি একটি ম্যারাথন শেষ করেছেন কোনো রকম পানি পান ছাড়াই!
এখানেই থেমে নেই উইম। এই ডাচ অধিবাসী মাউন্ট কিলিমানজারোর শীতল চূড়ায় মাত্র দু’দিনে পৌঁছেছেন তার শর্টস পরে।
ফিনল্যান্ডের একটি পোলার সার্কেলে তিনি প্রায় ৪৩ কিলোমিটার ৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে ম্যারাথন শেষ করেছেন যথারীতি শর্টস পরে মাইনাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রার ভেতর!
কে জানে, ভবিষ্যতে তিনি আরও কি কি ঘটনা ঘটিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবেন!
কিন্তু এতোসব বীরত্বগাথা তিনি কীভাবে সম্ভব করেছেন? কী ছিলো তার অনুপ্রেরণা। হফ জানান, তার নার্ভাস সিস্টেম এবং প্রতিরোধ ক্ষমতার রহস্য মনোযোগ ও মেডিটেশন।
কিন্তু হফের বক্তব্য কতোটা ঠিক সেটা পরীক্ষা করতে টেকনিক্যাল গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে।
এই মুহূর্তে হফ তিন ঘণ্টার ওয়ার্কশপ এবং এক সপ্তাহের কোর্স করিয়ে মানুষকে তার মতো কিছু করে দেখাতে আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করছেন। বানাতে চাচ্ছেন ভবিষ্যতের আইসম্যান।
কী হবেন নাকি পরবর্তী ডানপিটে বরফমানব?
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪