ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

ফিচার

তাইওয়ানের সমুদ্রতলে প্রাচীন মানব ফসিল!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫
তাইওয়ানের সমুদ্রতলে প্রাচীন মানব ফসিল!

ঢাকা: আমাদের আদি পুরুষেরা দেখতে কেমন ছিল বা আদি পুরুষেরও আদিরা দেখতে কেমন ছিল, কেমন ছিল তাদের চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, আচার-আচরণ ও জীবনযাপন পদ্ধতি- তা নিয়ে বরাবরই আমাদের আগ্রহ সবার।

সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছাকাছি সমুদ্র তলদেশে পাওয়া গেছে এমনই আদিপুরুষের অতি প্রাচীন এক ফসিল।

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির এই মানব ফসিলটি ৪০ হাজার বছরের পুরনো। তাদের ধারণা আধুনিক মানুষের আগমনের বহু আগে এশিয়ায় এই প্রজাতির মানুষ বসবাস করতো।


ফসিলটি তাইওয়ানের পশ্চিম উপকূলের ২৫ কিলোমিটার দূরে মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে। পেঙ্গু চ্যানেলের ২০০ থেকে ৪০০ ফুট গভীর থেকে তোলা হয় ফসিলটি। সর্বশেষ বরফযুগের পর থেকে পেঙ্গু চ্যানেলটি এশিয়ার মূল ভূ-খণ্ডের একটি অংশ।

জানা যায়, অজ্ঞাত এক জেলে ফসিলটি পাওয়ার পর স্থানীয় একটি এন্টিক দোকানে বিক্রি করে। পরে এক স্থানীয় সংরক্ষক ফসিলটি সেই দোকান থেকে কিনে নিয়ে তাইওয়ান জাতীয় প্রাকৃতিক বিজ্ঞান জাদুঘরে স্থানান্তর করেন। পরবর্তী ফসিলটি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নজর কাড়ে।


আধুনিক গড়নের মানুষই পৃথিবীতে দীর্ঘ সময়জুড়ে রাজত্ব করছে। এশিয়ার প্রাচীন নিনডারথ্যাল, সাইবেরিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে বসবসরত ডেনিসোভান ও ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেসিয়েন্সিস প্রজাতির মানুষেরা সময়ের সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অন্যদিকে ইরেক্টাস প্রজাতির মানুষেরা দেখতে ছিল অনেকটাই বর্তমান সময়ের মানুষের মতো বলে জানান বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা বলেছেন, ফসিলটি এখন থেকে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার বছর আগের পুরনো। ফসিল মানবটির চোয়াল ও দাঁত সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি যুগের কথা বলছে। এখন থেকে প্রায় আড়াই মিলিয়ন থেকে ১১ হাজার ৭শ’ বছর আগে প্লাইস্টোসিন যুগের মানুষের চোয়াল ও দাঁত আকারে ছোট ছিল। কিন্তু প্রাপ্ত এই ফসিলটির চোয়াল ও দাঁত জাভা এবং উত্তর চীনের হোমো ইরেক্টাস প্রজাতির মানষের চেয়েও অনেক চওড়া ও প্রশস্ত।

তাইওয়ানে প্রাপ্ত প্রথম প্রাচীন মানবের জীবাশ্মটির চোয়ালের নিচের ডানপাশের পাটিতে প্রাচীন ধাতের দাঁত দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা।

অন্যদিকে গবেষকরা বলছেন, ৪ লাখ বছরের পুরনো এই ফসিলটি দক্ষিণ চীনের ৫৯০ কিলেঅমিটার দূরে হেক্সিয়ান থেকে আগত।

গবেষণাটির সহযোগী জাপানের প্রকৃতি ও বিজ্ঞান জাদুঘরের নৃবিজ্ঞানী ইউসুক কাফিউ বলেন,  ফসিলটির স্বতন্ত্রতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে কংকালের অন্য অংশগুলো হাতে পাওয়া জরুরি।

তিনি আরও বলেন, বাকি অংশগুলো পাওয়া গেলেই এর স্বজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত বলা সম্ভব।

এই গবেষণাটি আরও বলছে যে এশিয়াতে একই সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির মানুষের বসবাস ছিল।

প্রাপ্ত ফসিলটি কোন সময়কার বা কোন প্রজাতির তা এখন শুধুই জানার অপেক্ষা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।