ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

কে পরবে ইংল্যান্ডের জাতীয় পাখির মুকুট!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৫
কে পরবে ইংল্যান্ডের জাতীয় পাখির মুকুট!

ঢাকা: প্রতিটি দেশের জাতীয় পশুপাখির তালিকা ভিন্ন। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পাখি পালকহীন ঈগল, ফ্রান্সের মোরগ, জাপানের সবুজ পালকের রঙিন পাখি ও বাংলাদেশের দোয়েল।

আর অন্যান্য দেশতো রয়েছেই। তবে জাতীয় পাখির দিক দিয়ে যুক্তরাজ্য এখনও কোনো সুরাহায় আসতে পারেনি। প্রাণিবান্ধব এ দেশে জাতীয় পাখি সনাক্তকরণ এখনও রয়েছে নির্বাচনী পর্যায়ে।

জাতীয় পাখির আসন পূরণ করতে পাখিবিজ্ঞানী ডেভিড লিন্ডো যুক্তরাজ্যবাসীদের কাছে উপস্থাপন করেছেন ওই অঞ্চলের পাখিদের একটি খসড়া। যাতে ঠাঁই পেয়েছিল ৬০টি পাখি। এসব পাখির মধ্যে ইংল্যান্ডবাসী তাদের পছন্দসই পাখিদের ভোট দিয়েছেন।

জাতীয় পাখি নির্বাচন অভিযানের ফাইনাল রাউন্ডে এসে পাখির তালিকায় রয়েছে সেরা দশ পাখি। সেই দশটি পাখির মধ্য থেকে মুকুট পরানো হবে একজন বিজয়ীকে। যে কিনা ইংল্যান্ডের জাতীয় পাখি হিসেবে স্বগর্বে ডানা ঝাপটাবে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পাখি নির্বাচনের জন্য ভোট দেওয়ার সর্বশেষ সময়সীমা চলতি বছরের ০৭ মে। চলুন তবে আমরাও জেনে নিই কারা যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য জাতীয় পাখি।

                                                                  ব্লু টিট

যেকোনো দেশের জাতীয় পাখি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি শর্ত হলো, সে দেশে ওই পাখির সংখ্যা গরিষ্ঠতা বা আধিক্য। ধারণা করা হয়, ব্রিটেনে ব্লু টিট জোড়া রয়েছে প্রায় ত্রিশ লাখেরও বেশি। হলুদ ও গাঢ় নীল রঙের এ পাখিটির বাস গাছের গর্তে ও বাড়ির সিলিংয়ে। ব্লু টিট পাখি দম্পতিদের মাঝে পারস্পরিক বোঝাপড়া বেশ দৃঢ়। কারণ, এক সঙ্গীকে নিয়েই তারা কাটিয়ে দেয় সারা জীবন।
 
                                                                ব্ল্যাকবার্ড

পাখিটির নাম যখন ব্ল্যাকবার্ড, তখন নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, তার রঙ কৃষ্ণকায়। এটি ইংল্যান্ডের সহজলভ্য পাখিদের মধ্যে অন্যতম। যুক্তরাজ্যে রয়েছে প্রায় আশি লাখ জোড়া। রৌদ্রদীপ্ত গ্রীষ্মে এরা সুমধুর সংগীতে ভরিয়ে দেয় চারপাশ। পুরুষ পাখিদের অক্ষি কোটরের চারপাশ উজ্জ্বল হলুদ ও নারীদের নিষ্প্রভ বাদামী রঙের হয়। এরা সাধারণত বনভূমিতে থাকে তবে শীতকালে ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূল নরফোক থেকে দক্ষিণ পশ্চিম ইংল্যান্ডে এসে বসতি স্থাপন করে।

                                                          বার্ন আউল

শিকারি পাখিদের মধ্যে বার্ন আউল বা লক্ষ্মীপ্যাঁচা মহারাজা। রাতের আঁধারে সব পাখি বিশ্রাম নিলেও জেগে থাকে বার্ন আউলের জ্বলন্ত চোখ। শুধুমাত্র এন্টার্কটিকা ছাড়া সব মহাদেশেই এদের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়।

                                                            হেন হ্যারিয়ার

তৃণভোজী বাদামী ও সাদা রঙের পাখিটি যুক্তরাজ্যের জাতীয় পাখি নির্বাচনের তালিকায় সেরা দশের মধ্যে রয়েছে।  

                                                             ম্যুট সোয়ান

দেখেই বোঝা যায়, বেশ শান্ত আর গুরুগম্ভীর সে। তাই বুঝি তার নাম ম্যুট সোয়ান। হুম, ম্যুট সোয়ানই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উড়ন্ত পাখি। এর ওজন প্রায় নয় কেজি। রাজা অষ্টম হেনরির রাজত্বকালে এই হাঁস কেউ শিকার করলে তাকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো।

                                                                  রেড কাইট

ওয়েলসে রেড কাইটের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। রেড কাইট পাখির পুরো শরীর লালচে বাদামী আর হলদে রঙের ঠোঁট। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী।

                                                                          কিংফিশার

ইংল্যান্ডে নদীর তীরে কিংফিশার প্রায়ই দেখা যায়। আর তাই হয়তো জাতীয় পাখির সেরা দশের তালিকায় মাছরাঙার নাম উঠে এসেছে। কিংফিশারের খাদ্য তালিকায় রয়েছে মাছ, ব্যাঙ, ছোট পোকামাকড়। গাছের কোঠরে গর্ত খুঁড়ে তারা বসবাস করে।

                                                               পাফিন

পাখিটার চেহারা দেখেই বোঝা যায় সে কতটা সহজ, সরল আর পরিপাটি। ধবধবে সাদা শরীরে কালো রঙের দু’টো ডানা। গলা আর মাথার অংশও কালো। ঠোঁট ও অক্ষিকোটরে রয়েছে কমলা রঙ। যদিও তারা দেখতে প্রায় পেঙ্গুইনের মতো, তবুও স্কটল্যান্ডে এরা সি প্যারট নামে পরিচিত। ইংল্যান্ডে পাফিনের সংখ্যা প্রায় ছয় লাখের মতো। এদের সাধারণত ইংল্যান্ডের উত্তর উপকূলে দেখা যায়। এমনিতে তারা খরগোশের পরিত্যক্ত গর্তে বাস করে। কখনওবা নিজেরাই খুঁড়ে নেয় গর্ত। তবে পুরো শীতের সময়টাই সমুদ্রপাড়ে কাটাতে ভালোবাসে এরা।

                                                                             রেন

ছোট্ট গায়ক পাখি রেন। তারা নিজেদের মধ্যেই নামে সংগীত প্রতিযোগিতায়। গোল্ডক্রেস্ট ও ফায়ারক্রেস্টের পর রেনই ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ছোট পাখি। যার ওজন মাত্র এক পাউন্ড কয়েনের সমান। ব্রিটেনে এদের সংখ্যা প্রায় ৮৫ লাখ।  

                                                                              রবিন

রবিন পাখি ১৯৬০ সালে যুক্তরাজ্যের প্রিয় পাখি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভোট পায়। শীতের পাখি বলে একে ক্রিসমাসের প্রতীক হিসেবেও ধরা হয়। লাল, সাদা ও কালো রঙের সংমিশ্রণ এ পাখিটির জীবন সীমা মাত্র দুই বছর।


বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।