ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

খুলনায় মোড়ে মোড়ে পিঠার ঘ্রাণ

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৬
খুলনায় মোড়ে মোড়ে পিঠার ঘ্রাণ মানজারুল ইসলাম

খুলনা মহানগরীর পথে পথে, মোড়ে মোড়ে মৌসুমী পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। চিতই, ভাপা, পান পিঠা আর নতুন খেজুর গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে থমকে দাঁড়ান পথিক।

খুলনা: খুলনা মহানগরীর পথে পথে, মোড়ে মোড়ে মৌসুমী পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। চিতই, ভাপা, পান পিঠা আর নতুন খেজুর গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে থমকে দাঁড়ান পথিক।

পুরো শীতজুড়ে চলবে এ ব্যবসা। চাইলেই যে কেউ পারছেন সেখান থেকে শীতের পিঠার আস্বাদ নিতে।

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার পাশে কিংবা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পিঠা খাওয়া এখন অতি পরিচিত দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে খুলনায়। কর্মজীবী মানুষ চলতি পথে কিংবা সন্ধ্যার আড্ডায় নাশতাটা সেরে নিচ্ছেন শীতের পিঠা দিয়ে। শিক্ষার্থীরা বন্ধুসমেত চলে আসছে কাছে-দূরের পছন্দের পিঠার দোকানের সামনে।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দেখা গেছে, মোড়ে মোড়ে মাটির চুলায় পিঠা তৈরি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি দোকানের সামনে স্বাদের পিঠা খাওয়ার ধুম লেগেছে। তবে বেশি ভিড় দেখা গেছে মহানগরীর তারের পুকুর পাড়ের নুরুল আলম নুরুর চিতই পিঠা ও আল-আমিনের ভাপা পিঠার দোকানের সামনে। নতুন চালের পিঠা খেতে অনেক সময় কাড়াকাড়ি বেঁধে যায় এ দুই দোকানে। মাত্র ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে পছন্দমতো পিঠার স্বাদ নিতে পারছেন সাধারণ মানুষজন।

নগরীর তারের পুকুর পাড়ে পিঠা কিনতে আসা এম রহমান বলেন, গ্রামের বাড়িতে শীতের সময় পিঠা খাওয়ার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো শহুরে জীবনে এখন স্মৃতি। এখন শহরেই মিলছে নানা রকম পিঠা। শীতের পিঠার এ রসনা বিলাসের সুযোগ হাতছাড়া করি না। প্রায় কিনে নিয়ে যাই বাসায়। তবে বিরক্তির বিষয় একটি তারের পুকুর পাড়ে কখনও লাইনে না দাঁড়িয়ে পিঠা কেনা যায় না।

পিঠা খাওয়ার সময় কথা হয় প্রাইভেটকার চালক হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতা বাড়ে। তখন গরম পিঠা খেতে খুব মজা লাগে।

নেছাউন নামের এক চাকরিজীবী নারী বলেন, ব্যস্ত নাগরিক জীবনে ঘরে পিঠা বানানোর সময় তেমন হয় না। সে কারণে বাইরের দোকানের পিঠাই একমাত্র ভরসা।

আযম খান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী পবিত্র কুমার বলেন, ব্যাচেলর মানুষ, লেখা পড়ার কারণে মায়ের থেকে দূরে থাকি। চাইলেই মায়ের হাতের সুস্বাদু পিঠা খেতে পারি না। তাই শীতের মৌসুমী পিঠা খেতে ইচ্ছে হলে দোকানে চলে আসি। মাঝে মাঝে লম্বা লাইন পড়ে গেলেও পিঠা না খেয়ে যাই না।

তারের পুকুর পাড়ে পিঠা বিক্রেতা নুরুল আলম নুরু বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৫৫-৭০ কেজি চালের গুড়ার চিতই পিঠা বিক্রি হয় আমার দোকানে। পিঠার সঙ্গে গুড়, সরিষা বাটা দেওয়া হয়। প্রতিটি পিঠার দাম ২টাকা।  

তিনি জানান, এতো বেশি ভিড় হয় যে মাঝে মধ্যে হিমশিম খেতে হয়। অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হয়।

ভাপা পিঠা বিক্রেতা আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমার দোকানে প্রতিদিন ১০-১২ কেজি চালের গুড়ার ভাপা পিঠা বিক্রি হয়। প্রতিটি পিঠার মূল্য ৫টাকা।

তাদের মতো নগরীর ময়লা পোতা, মডার্ন মোড়, খান জাহান আলী রোড, খালিশপুর, দৌলতপুর, পিটিআই মোড়, রূপসা ঘাট, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা পিঠা তৈরি করেন। আর এ দোকানগুলো বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।