ফেনী: ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল ফেনীর ভারতীয় সীমান্তবর্তী পরশুরাম থানাধীন বিলোনিয়াতে পাকবাহিনীর সঙ্গে নব গঠিত মুক্তিবাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল। পাকবাহিনীর নয়জন সেনা নিহত হয়।
এই সীমান্তবর্তী এলাকার ১৭টি ইপিআর ক্যাম্পে কর্মরত বাঙালি ইপিআর সৈনিকরা অস্ত্র নিয়ে যোগ দেন এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, আনছার, মুজাহিদ, ছুটিতে আসা সৈনিকদের নিয়ে পরশুরামে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। অন্যদিকে এসব ইপিআর ক্যাম্পে কর্মরত পাঞ্জাবি বেলুছ রেজিমেন্টের সদস্যরা বিলোনিয়া চেকপোস্টের ইপিআর ক্যাম্পে অবস্থান নেয়। সেখানে যাতে কোনো লোকজন বিলোনিয়া চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যেতে না পারেন, সে কঠোর অবস্থান নিয়ে বিলোনিয়াতে পাকসেনারা পাকিস্তান পতাকা উড়িয়ে রাখে।
চৌঠা এপ্রিল ভোর থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। ভারতীয় ৯২ বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার জে এন প্রধান সারাসীমার বাবুল বৈধ্যের মাধ্যমে অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য সহায়তা করেন। অবশেষে পাঞ্জাবি সৈনিকরা শেষ হয়। এরপর পরই চেকপোস্টের প্লাগস্টান্ড থেকে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু আগুন লাগিয়ে পাকিদের পতাকা পুড়িয়ে ফেলে। পরে সেখানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়। চেকপোস্টের থেকে বালুর বস্তা সরিয়ে সরাসরি বিলোনিয়া সীমান্ত চেকপোস্ট খুলে দেওয়া হয়। শুরু হয় যোগাযোগ ও যাতায়াত।
সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী ও সেদিনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদর মো. মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, তৎকালীন ইপিআর আর কয়েকজন আর্মিসহ আরও বেশ কয়েকজন ছাত্র সেই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। সারা দিনব্যাপী যুদ্ধ হয়েছিল। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা অবধি চলে যুদ্ধ। বিকেলে পাকবাহিনী দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। এটিই ফেনীর প্রথম যুদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এসএইচডি/এএটি