ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ফুটবলের দুঃখ এমএ আজিজ স্টেডিয়াম

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
ফুটবলের দুঃখ এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

চট্টগ্রাম থেকে: চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফুটবলের জন্য স্থায়ী কোনো প্রেসবক্স নেই! ভাবা যায়? দেশের এতো বড় ও ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সের কিয়দাংশে অথবা ছাদের উপরে প্রস্তাবিত প্রেসবক্সে বসে নাকি গণমাধ্যমকর্মীরা ফুটবলের খবর লিখবেন! পক্ষান্তরে এখানে ক্রিকেটের জন্য প্রেসবক্সটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।

অথচ এই স্টেডিয়ামেই দু’দিন বাদে উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার আসর ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল’।

চলবে দুই রাউন্ডের খেলাও।

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের প্রেসবক্স নিয়ে এমন চমকপ্রদ তথ্য দিলেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামিম, ‘গেল বছরের শেখ কামাল টুর্নামেন্টে আমরা ছাদের উপর ও কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের জন্য বসার ব্যবস্থা করেছিলাম। এবার প্রিমিয়ার লিগে প্রেসিডেন্ট বক্সের অর্ধেক ভিআইপি অতিথি আর অর্ধেক সাংবাদিকদের বসার জন্য ব্যবস্থা করবো। প্রেসবক্স যে একেবারেই নেই সেটা নয়। এখানে প্রেসবক্স আছে। আমাদের মাঠের সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে যে বক্সটি দেখছেন সেটাই আমাদের প্রেসবক্স। কিন্তু সেটি মূলত আমরা ক্রিকেটের জন্যই করেছিলাম। ফুটবলের জন্য স্থায়ী ভিত্তিতে তা নেই। তাই খুব দ্রুতই স্থায়ী একটি প্রেস বক্সের ব্যবস্থা করবো বলে ভাবছি। ’

প্রেসবক্স না থাকার পেছনে এই অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক যুক্তি দেখালেন হঠাত করেই দেশের গণমাধ্যমের বৃদ্ধিকে, ‘আসলে প্রেসবক্সের চাহিদাটা আগে এতো বেশি ছিল না। কেননা আগে আমাদের চট্টগ্রামে একটি-দুটি দৈনিক পত্রিকা ছিল। তাছাড়া এখনকার মতো আগে অনলাইন কিংবা বেসরকারি টিভি কিংবা রেডিও ছিল না। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের পুরাতন ভবনে সংবাদমাধ্যম থেকে ৬-৭ জন সাংবাদিক আসতেন। যার কারণে খুব একটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি। ’

উল্লেখ্য, এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের নতুন ভবনটি যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালে। আর এখানেই অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের ক্রীড়ার সকল কার্যক্রম।

প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলকে সামনে রেখে মাঠের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায় এখনও মাঠ প্রস্তুতির কোনো কাজ শুরু হয়নি। লম্বা ঘাসে আবৃত হয়ে আছে পুরো স্টেডিয়াম। তাছাড়া ২০ জুলাই এই মাঠে হয়ে যাওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল তাতে করে মাঠও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মঞ্চ তৈরিসহ অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্ততিতে মাঠে মানুষের যত্রতত্র আনাগোনা ও গর্তে মাঠ তার স্বাভাবিকতা হারিয়েছে।

এদিকে অনুষ্ঠানের পরদিন মাঠ থেকে মঞ্চ সরানোর দায়িত্বে থাকা কর্মীরা আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য দিলেন। তারা জানান, অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরিতে যে পেরেক ব্যবহার করা হয়েছিল, তার অধিকাংশই মাটির ভেতরে আছে। যা অপসারণ করা যাচ্ছে না। সেই পেরেকের আঘাতে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের ইনজুরি।

তবে সৈয়দ শাহাব উদ্দিন জানান, ২৪ জুলাইয়ের আগে মাঠ খেলার জন্য পুরোদস্তুর প্রস্তুত হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে ঢাকা থেকে নাকি ভেন্যু কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন।
 
স্টেডিয়ামের ছাদের উপর প্রস্তাবিত প্রেসবক্স দেখে চোখ কপালে উঠার মতো অবস্থা! সেখানকার প্রতিটি কক্ষই এতটা অগোছালো ও অপরিচ্ছন্ন যে, দু-তিনদিনের মধ্যে ওই কক্ষগুলো গণমাধ্যম কর্মীদের বসার যোগ্য করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। নিয়মিত পরিচর্যা না থাকায় ওই কক্ষে পানি জমেছে। ছাদের উপরে প্রেসের জন্য যে তিনটি বক্স তৈরি করা হয়েছে তার সামনেই ছাদের বিশাল উঁচু রেলিং। যেখান থেকে মাঠের কিছুই দেখা সম্ভব না।

তবে শামিম আশ্বাস দিলেন, সাংবাদিকদের সুবিধার্থে ওই রেলিংগুলো ভেঙে দেয়া হবে। তাহলে তো আরও বিপদ! রেলিং না থাকলে অসতর্কতাবশত চারতলার ওই ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশিই। সব কিছু মিলিয়ে মনে হলো চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফুটবল সত্যিই অবহেলিত ও অনাদৃত। ফুটবলের জন্য এই মাঠটি সত্যিই দুঃখের নামান্তর বৈ আর কিছুই না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ২১ জুলাই ২০১৬
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।