ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাংলার প্রাণের কাছে

বাংলার প্রাণের কাছে

লোকজ সংস্কৃতিতে চলে পানের আপ্যায়ন

মাহবুব আলম, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৬
লোকজ সংস্কৃতিতে চলে পানের আপ্যায়ন ছবি: নূর

লালমনিরহাট থেকে: বাড়িতে অতিথি এলে পান না দিয়ে বিদায় করা- এটা কোনোমতেই ভালো চোখে দেখা হতো না গ্রামাঞ্চলে। যুগ যুগ ধরে পান খেয়ে মুখ লাল করেছেন দাদি-নানিরা।

এখনও অজগাঁয়ের কৃষাণী আর বুড়োরা পান খাওয়ার অভ্যাস বজায় রেখেছেন।

বাড়িতে চেনা-পরিচিত কিংবা কোনো আগন্তুক এলে আর কিছু না হোক এগিয়ে দেওয়া হয় পানের বাটা। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে প্রায় উচ্চবিত্তের মধ্যেও দেখা মেলে পানের কদর। কালক্রমে তা লোকজ সংস্কৃতিতে ঢুকে গেছে।

শুধু কী তাই! আঞ্চলিক গানের শিল্পী শেফালী ঘোষ তো সুন্দর মুখ পেলে মহেশখালীর রসালো পানের খিলি খাওয়াতে চেয়েছিলেন আর রুনা লায়লা তো ‘পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিয়া’ও বন্ধুর দেখা পেলেন না!

আর মাঝিকে ‘ঘাটে লাগাইয়া ডিঙ্গা’ পান খেয়ে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নিনা হামিদ! পান নিয়ে তাদের সেই গান এখনও আবহমান বাংলার মানুষের মুখে মুখে... গুনগুন করেন শহুরে বুড়ো-বুড়িরাও!

কুড়িগ্রাম কিংবা সমৃদ্রপৃষ্ট থেকে বেশ উঁচুতে অবস্থিত দেশের উত্তর জনপদের জেলা লালমনিরহাটের গাঁয়ে অতিথিদের পান দিয়ে আপ্যায়ন করতে দেখা যায়। পূর্বপুরুষদের থেকে পাওয়া এ রীতিকে সংস্কৃতি হিসেবে দেখেন এখানকার নারী-পুরুষ।

জেলা সদরের বড়বাড়ি ইউনিয়নের জলতরঙ্গ সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রের সহকারী আবদুল জলিল এভাবেই মনে করেন। তার ভাষ্যমতে, আমাদের গ্রাম-বাংলায় আত্মীয় হোক বা না হোক- বাড়িতে কেউ এলেই আমরা আর কিছু না পারি অন্তত পান-সুপারি দিয়ে তাদের বসতে বলি। এটা আমাদের একটা কালচার।

‘আমার স্ত্রী পান চিবোন, কিন্তু মেয়েরা না খেলেও অতিথিদের পান দিতে ভুল করে না। ’ যোগ করেন চার সন্তানের জনক জলিল।

প্রাচীন বাংলায়  এ উপমহাদেশে পান বেশ মজাদার ও অভিজাত একটি খাবার হিসেবে প্রচলিত ছিলো। অতিথিদের সামনে আবার পান পরিবেশন করতে ব্যবহার করা হতো কারুকার্যময় পানের কৌটা ।

সঙ্গে থাকতো বাহারি মশলাসহ জর্দা, চুন। এভাবে অতিথি আপ্যায়নকে বেশ অভিজাত একটি বিষয় হিসেবে দেখা হতো। এমনকি নতুন বউরাও পান খেয়ে ঠোঁট রঙিন করতেন বলে কথ্য রয়েছে।

মুঘল আমলেও অন্দর মহলে অনেকে পান খেয়ে ঠোঁট রাঙাতেন বলেই সাক্ষ্য দিচ্ছে ইতিহাস।

হাল আমলে সব এলাকা বা শ্রেণির মানুষের বাড়িতে শুধু পান দিয়ে আপ্যায়ন হয় না। এখন অনেকে পানীয় কিংবা অন্য কিছু দিতে চান। কেউ আবার দাঁতের সৌন্দর্যে জন্যে পান খান না।

তবে বাংলার শহর থেকে শুরু করে আনাচে-কানাচের ছোট দোকানেও হরেক রকম জর্দা দিয়ে পানের খিলি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৬
এমএ/এসএনএস

** বাদল দিনে নেই বৃষ্টির খনা
** বাহে শোন মোর ভাওয়াইয়া গান

** ‘আয়সাই আব্বাস গাইলেন হাঁকাও গাড়ি চিলমারী’
** আহা! সেকি সুর শিরিষের সারিন্দায়! (ভিডিও)
** হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দর এ রে...
** বাংলার প্রাণের কাছে বাংলানিউজ, সঙ্গী হোন আপনিও
** শেকড়ের সন্ধানে উত্তর জনপদে বাংলানিউজের মাহবুব ও নূর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলার প্রাণের কাছে এর সর্বশেষ