ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

জন্মদিনে কবি আল মাহমুদ

কবিতা না থাকলে স্বপ্ন থাকে না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১০
কবিতা না থাকলে স্বপ্ন থাকে না

আজ ১১ জুলাই কবি আল মাহমুদের ৭৫তম জন্মদিন। ১০ জুলাই সন্ধ্যায় কবি আল মাহমুদের সাথে কথা বলে জন্মদিনের সকালে গিয়েছিলাম তার মগবাজারের বাড়িতে।

মাসখানেক হলো তিনি তার গুলশানের ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়ে মগবাজারে এসেছেন। অন্যান্য বছরের মতো এবারও বেশ সাদামাটাভাবেই পালন করা হচ্ছে তার জন্মদিন। অনেকেই আসছেন কবিকে শুভেচ্ছা জানাতে। এদের মধ্যে তরুণরাই বেশি। তাদের তীব্র ইচ্ছা কবির সঙ্গে নিজের স্মৃতি ধরে রাখার। তাই কবির সামনে অটোগ্রাফ শিকারি ও ফটোগ্রাফারদের বেশ আনাগোনা।

এক সময় এসে উপস্থিত হন কবি আসাদ চৌধুরী। তারপরই কবিভক্ত বিভিন্ন সাহিত্যসংগঠনের তরুণেরা। কেউ কেউ কবির ছড়া-কবিতাকে সুরারোপ করে গান গাইছে, কেউ দিচ্ছেন শুভেচ্ছা বক্তব্য। এসবেরই ফাঁকে ফাঁকে কবির সঙ্গে কিছু কথাও হলো। যদিও ইচ্ছে ছিল আরও বিশদে কথা বলার, কিন্তু সে সুযোগ কোনোভাবেই করে ওঠা গেল না।

আপনার শরীরের অবস্থা এখন কেমন?
আল মাহমুদ : ভালোই। তবে এখন আর আগের মতো শরীরের জোর পাই না।

এখন কী লিখছেন?
আল মাহমুদ : লিখছি খুব কমই। চোখের দৃষ্টিশক্তি কম হওয়ায় অনেক বছর ধরেই আমি ডিকটেশন দিয়ে লিখছি। মাঝেমধ্যে এক-আধটা কবিতা লিখছি। কখনো কখনো গদ্য লিখছি। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় কিছু লেখার প্রতিশ্রুতি তো আছেই। খুব শিগগিরই একটা উপন্যাস লিখব।

উপন্যাসটার গল্পটা যদি বলতেন?
আল মাহমুদ : ওটা তো এখন বলতে পারবো না। কাহিনী তো আমি নিজেও জানি না...

আজকে আপনার জন্মদিনে দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে কী ভাবছেন?
আল মাহমুদ : আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ততোধিক ভালোবাসি।

উত্তরটা খুব সংক্ষিপ্ত হয়ে গেল। আরও কিছু বলেন।
আল মাহমুদ : হ্যাঁ... অ্যা... জোরে বলো...

বললাম যে, আপনার উত্তরটা খুব সংক্ষিপ্ত হয়ে গেল
আল মাহমুদ : বেশি আর কী বলবো... বুঝতেই তো পারছো এই ভিড়ের মধ্যে কথা বলা বেশ কঠিন। আসলে এই মুহূর্তে দেশে বেশ কিছু সংকট আছে, তবে এই সংকট হয়তো খুব শিগগিরই কেটে যাবে।

বাংলা কবিতার গন্তব্য কোন দিকে বলে মনে হচ্ছে?
আল মাহমুদ : এটা একটা জটিল প্রশ্ন। আমার মনে হয় বাংলা কবিতা অগ্রগতির দিকে যাচ্ছে। আসলে কবিতা ভাষাকে নতুন করে তোলে। সে কাজ এই সময়ে কবিরা করছে।

এই পঁচাত্তরে এসে কবি হিসেবে আপনাকে যদি নিজের সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে বলা হয়, আপনি কী বলবেন?
আল মাহমুদ : আমি তো কবি। আমি কবিতাকে সব সময় প্রাধান্য দিয়েছি। এক সময় ভাবা হতো কবিতা এমন কী ব্যপার। কিন্তু এখন বুঝি, কবিতা না থাকলে স্বপ্ন থাকে না। স্বপ্ন না থাকলে মানুষ ফতুর হয়ে যায়। আমি আমার কবিতায় স্বপ্নকেই ধারণ করতে চেয়েছি।

আপনার সমসাময়িক কবিদের সাথে আপনার সম্পর্ক নিয়ে যদি কিছু বলতেন।
আল মাহমুদ : আমার সমসাময়িক অনেক কবিই এখন বেঁচে নেই। আবার কেউ কেউ বেঁচে থেকেও লিখছেন না। জীবদ্দশায় সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। শহীদের (কাদরী) কবিতা আমার খুব ভালো লাগে। তবে তিনি কম লেখেন।

আপনি আজ ৭৫-এ পা রাখলেন। অনেক লোক এসেছে আপনাকে দেখতে। আপনার অনুভূতিটা যদি বলতেন।

আল মাহমুদ : অনুভূতি খুবই ভালো। আমার খুব ভালো লাগছে... তোমরা সবাই এসেছো। আমার ছোটবেলায় আলাদা করে জন্মদিন পালন করা হতো না। এখন আমার জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু-অনুরাগীরা আমার বাসায় আসে, ভালোমন্দ রান্না হয়, দেখতে ভালো লাগে।

আপনার কোনো অপূর্ণ ইচ্ছা...
আল মাহমুদ : অপূর্ণ ইচ্ছা তো আছে অনেক। সেগুলো এখন তো বলতে পারবো না।

যে জীবন আপনি এখন যাপন করছেন তা নিয়ে কি সন্তুষ্ট?
আল মাহমুদ : মোটামুটি সন্তুষ্ট। আমার কোনো অতৃপ্তি নেই।

মাহমুদ ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ।
 
ফেরদৌস মাহমুদ
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৪১৫, জুলাই ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।