ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আজ ১২১তম নজরুলজয়ন্তী

‘চির উন্নত শির...’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৬ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
‘চির উন্নত শির...’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

ঢাকা: অগ্নিবীণা হাতে ধূমকেতুর মতো তার আবির্ভাব বাংলার সাহিত্যাকাশে ছিলো। এজন্যই বোধহয় তিনি নিজেকেই নিজে বলেছিলেন- ‘বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির’।

আজ সোমবার (২৫ মে) সেই চির বিদ্রোহী, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মজয়ন্তী। করোনা মহামারির বেদনাবিধুর ঈদুল ফিতর উদযাপনের পাশাপাশি জাতি আজ বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে এ কবিকে।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের এই দিনে বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানাধীন চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। শৈশবেই পিতৃহারা হন নজরুল। এরপর থেকেই তার কঠিন পথ চলা শুরু। অতঃপর একদিন সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলার সাহিত্যাকাশে আত্মপ্রকাশ করেন কবি। তার এই আর্বিভাবকে স্বাগত জানিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক উৎসর্গপত্রে লিখেছিলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু/ আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন। ’

ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও কাজী নজরুল মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে নবধারা সঞ্চিত হয় তার থেকে। এটি হলো ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং সুর করেছেন; যা নজরুল সঙ্গীত বা নজরুলগীতি নামে পরিচিত।

মধ্যবয়সে তিনি পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। এক সময় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

১৯৭২ সালে ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাকে জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে দেওয়া হয় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। একই বছর তাকে ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত করা হয়। সে বছরের ২৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী নজরুলের রচিত ‘চল চল চল’ বাংলাদেশের রণসঙ্গীত। তার কিছু গান জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে সংকলিত হয়েছিলো। যার মধ্যে রয়েছে- গীতি শতদল, গানের মালা, গুল বাগিচা, বুলবুল ইত্যাদি। পরবর্তীকালে আরও গান গ্রন্থিত হয়েছে। তবে তিনি প্রায়শ তাৎক্ষণিকভাবে গান লিখতেন। সেসব গান প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে গেছে বলে অনুমান করা হয়। এছাড়া কাজী নজরুল গান রচনাকালে ১৯টি রাগের সৃষ্টি করেন।

নজরুজয়ন্তী উপলক্ষে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে জাতীয়ভাবে উন্মুক্তস্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে না। তবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বেশ কিছু সংগঠন ভার্চ্যুয়ালি নজরুলজয়ন্তী উদযাপন করবে।

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারের জন্য ‘জাগো অমৃত পিয়াসী’ শিরোনামে ৫৫ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান তৈরি করেছে। যা সোমবার সকাল ১১টা থেকে নিকটতম সময় প্রচারিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী প্রচারিত হবে।

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে থাকছে ‘শান্তির জয় হোক, সাম্যের জয় হোক’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনায় যা বিকেল তিনটায় একাডেমির ফেসবুক পেজে প্রচারিত হবে।

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষে ‘নব যুগ ঐ এল ঐ’ শীর্ষক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট। সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাবে অনুষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২০
ডিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।