রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একথা বলেন কাদের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের পরিচালক জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫ এর ঘাতকদের আমরা চিনি। পেছন থেকে কারা তাদের সহযোগিতা করলো, পৃষ্ঠপোষকতা করলো, বিদেশে চলে যেতে সাহায্য করলো, তাদেরও আমরা চিনি। তবে বঙ্গবন্ধু ও দেশের মানুষের সঙ্গে জিয়া ও তার পরিবার যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তারা সেই বিশ্বাসঘাতকতাই পেয়েছেন। ৭৫ এর হত্যাকারীদের যদি সেসময় পৃষ্ঠপোষকতা করা না হতো, তাহলে ৮১তে আরেকটি হত্যাকাণ্ড হতো না। জেনারেল জিয়াকে হত্যার সাহস করতো না। যারা ৭৫ এর খুনি তাদেরই বুলেটে খালেদা জিয়া বিধবা হয়েছেন। আওয়ামী লীগের লোকেরা তাকে (জিয়া) খুন করতে যায়নি। তার আপন লোকেরাই তাকে হত্যা করেছে। জিয়া পরিবারের বিশ্বাসঘাতকতাই অনেকের মাঝে বিশ্বাসঘাতকতা উস্কে দিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে প্রাইম টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান স্বীকারোক্তিতে বলেছেন যে, হাওয়া ভবনের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সত্যকে এড়ানোর উপায় নেই। ইতিহাসের প্রথম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ছিলেন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার। শেক্সপিয়ার যেটিকে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড বলেছেন। আমি বলবো, শেক্সপিয়ার বেঁচে থাকলে ৭৫ এর হত্যাকাণ্ডকে নৃশংসতম বলতেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোক জাতিকে চিরজীবন বহন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের চোখে সাহস দেখিয়েছেন যে, আমরা সেসময় পরাধীন ছিলাম; স্বাধীন হতে পারবো। আমেরিকা-পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুকে ভয় পেত, তার নেতৃত্বকে ভয় পেত। তাই তাকে হত্যা করেছে। তবে মানুষের মতো মানুষ হতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে। তিনি এখনো বেঁচে আছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের মধ্যেই।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন একটি আয়োজন করতে পেরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি গর্বিত বোধ করছে। বঙ্গবন্ধু না থাকলেও তার সুযোগ্য কন্যা এখন আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে তাকেও বহুবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখনো হচ্ছে। আমাদের এ বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে অারও বক্তব্য রাখেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ইসমাইল হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
এসএইচএস/এইচএ/