শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বিষয়টি আলোচনায় উঠলে সংগঠনের অভিভাবক ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত দেন। বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আল নাহিয়ান খান জয় ছাত্রলীগের প্রথম সহ-সভাপতি হওয়ার আগে আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে তিনি শহীদ সার্জেট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
বরিশালের সন্তান নাহিয়ান খান জয়ের দাদা মোশাররফ হোসেন খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। তার বাবা আবদুল আলীম খান বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবে বরিশাল বিভাগে সুপরিচিত। আশির দশকে ঢাকার বৃহত্তর বরিশাল ছাত্রসমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল আলীম।
অন্যদিকে যশোরের মনিরামপুরের সন্তান লেখক ভট্টাচার্যও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি সংগঠনের প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
সূত্র মতে, শোভন ও রাব্বানীর কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা চলছিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় তাদের বিতর্কিত, নেতিবাচক কর্মকাণ্ড এবং অযোগ্যতার বিষয় উঠে এলে সাংগঠনিক অভিভাবক, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই সভায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেন বলেও গণমাধ্যমে খবর আসে।
এরপরে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে গেলে তাদের সাক্ষাৎ দেননি প্রধানমন্ত্রী। পরে গণভবনে প্রবেশে তাদের স্থায়ী পাসও বাতিল করে দেওয়া হয়।
শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে সেখানকার প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন দাবি, দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, ফোন না ধরা, মাদক সেবন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অতিথি হিসেবে রেখে নিজেরা তাদের পরে অনুষ্ঠানে যাওয়া, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বির্তকিতদের পদ দেওয়া, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বঞ্চিত করার অভিযোগ উচ্চারিত হচ্ছিল সাংগঠনিক বলয়ে।
এমনকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে অর্থনৈতিক লেনদেনসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগও শোনা যাচ্ছিল শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে।
ক্ষমা চেয়ে ও অভিযোগ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিলেও শেষতক তাদের পদ হারাতেই হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৯
এমইউএম/এইচএ/