ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: যথাসময়ে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না গ্রামবাসী, আন্দোলনের হুমকি

হাসান আজাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১০
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: যথাসময়ে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না গ্রামবাসী, আন্দোলনের হুমকি

দিনাজপুর: দেড় দশক আগেও বড়পুকুরিয়া খনি এলাকার গ্রামবাসীরা ছিল অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের দলে। আর এখন দারিদ্র্য, অনিশ্চয়তা আর শঙ্কা তাদের প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়ায়।

নব্বই দশকের শুরুতে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে উত্তোলন শুরুই কাল হয়েছে তাদের জীবনে। প্রতিনিয়ত ফাটল দেখা দিচ্ছে বসতবাড়িতে, দেবে যাচ্ছে আবাদি জমি। ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও সঠিক সময়ে তা পৌঁছাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে। সমঝোতা স্মারক নিয়েও চলছে টালবাহানা। তাই আন্দোলনের কথা ভাবছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

গ্রমাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়লা উত্তোলনের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় প্রতিনিয়ত হচ্ছে ভূমিধস। ক্ষতির শিকার গ্রামবাসীরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানালে সরকার জরিপের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দিতে শুরু করে। কিন্তু সঠিক সময়ে না দেওয়ায় ক্ষতিপূরণের টাকা তারা কাজে লাগাতে পারছেন না।

গ্রামবাসীরা জানান, সরকার দশ দফা চুক্তি বাস্তবায়ন না করে উল্টো স্থানীয় সাংসদের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঘোষণা করায় তারা ক্ষুব্ধ। গ্রামবাসী পাচ্ছে না সময়মতো খণ্ডকালীন টাকা। ফলে ফুলবাড়ীর মত পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর অবস্থা:

পাত্রাপাড়া, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, পাতিগ্রাম, কালুপাড়া, বড়পুকুরিয়া, জিগাগাড়ী, মৌপুকুর। সরকারি হিসেবে এই ৮টি গ্রামের মোট ৬৪৬ একর জমি ক্ষতির শিকার বলে বলা হলেও এর আয়তন আরও বেশি হবে বলে দাবি করেছেন খনি এলাকার বাসিন্দারা। সরকারের হিসেবের বাইরে রয়েছে বলরামপুর, গোপালপাড়া, আমরাপুকুর, শাহাগ্রাম, মধ্যদূর্গাপুর ও চৌহাটি। ।

সরকারের হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ৬৪৬ একর জমির মধ্যে ৪৮৬ একর দুই বা তিন ফসলি জমি। এছাড়া বাকি এলাকায় রয়েছে স্কুল, কলেজ, বাজার, মাদ্রাসা, ঈদগাহ, কবরস্থান, খেলার মাঠ, চালের মিল, চাতাল, ব্যাংক এবং দুই হাজার ৬শ’ ঘরবাড়ি।

খনি এলাকায় সরকারের তালিকাভুক্ত পাত্রাপাড়া, বৈদ্যনাথপুর, বড়পুকুরিয়া, মৌপুকুর ও জিনাগাড়ি গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এইসব গ্রামের ছোট-বড় সবাই আতঙ্কে ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনযাপন করছে। গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। দিন দিন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ’

পাত্রাপাড়ার কৃষক নায়েব কুদ্দুসের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, তার বাড়ির তিনটি ঘরের দেয়ালই বড় বড় ফাটল। বাঁশ, সিমেন্ট দিয়ে দেয়ালগুলো কোনমতে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি বাড়ির ছাদেও রয়েছে ফাটল।

কুদ্দুস বলেন, ‘খনির কাজ শুরু হওয়ার ৪/৫ বছর পর থেকে বাড়িঘরে ফাটল ধরে। পরে ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রাত দুইটার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দসহ বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি আমার দক্ষিণ ভিটার ঘরের একটি দেয়াল ভেঙে পড়েছে। আমার মতো অনেকেরই ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে বা ফাটল ধরেছে। ’

একই গ্রামের ছদরুল, বাবুল, মতিয়ারসহ অনেকেই তাদের ক্ষতির কথা জানালেন এই প্রতিবেদককে।

বৈদ্যনাথপুরের শাহআলী, আম্বিয়া আলি, শাহ আলম, মোদাচ্ছের জানালেন একই কথা। বড়পুকুরিয়ার মোখলেছুর রহমান জানান, তার ২০ একর চাষের জমি ছিল।   ১২ একর জমিই দেবে গেছে। বাকিগুলোতে ফাটল বা এবড়ো-থেবড়ো অবস্থায় আছে।

তিনি বলেন, ‘আগে আমার চাল কেনা লাগত না। জমির ধান থেকে বছরের চাল হয়ে আরও বাজারে বিক্রি করতাম। আর এখন খাবারের চালটাও কিনতে হয়। ’

পাতিগ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ পেশায় পুরোদস্তুর কৃষক। কিন্তু এখন তার  কৃষিকাজ তেমন একটা নেই। তার অর্ধেকের বেশি জমিই দেবে গেছে। আর তার দুশ্চিন্তা, বাকি জমিগুলো একদিন দেবে যাবে।

একইভাবে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন শাহাগ্রামের ফজলুর রহমান। বড়পুকুরিয়া খনির লাগোয়ো এই গ্রামটির অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফজলুর রহমানসহ আশপাশের জালাল মিয়া, দাউদ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিটি ঘরেরই দেয়ালে ফাটল। তারা জানান, খনির ভেতর বোমা ফাটানো হলে উপরে ভূমিকম্পের মত কাঁপতে থাকে। আর মাটির নিচের কাঁপন থামলে গ্রামের কোনো না কোনো বাড়িতে ফাটল ধরবে, জমি দেবে যাবে।

বড়পুকুরিয়া থেকে কালুপাড়া যেতে প্রধান রাস্তাটির ৩০ একর জমি ৬ থেকে আট ফুট দেবে যায় আজ থেকে তিন সাড়ে তিন বছর আগে। ওই স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, দূর্গাপুর, চৌহাটি, মৌপুকুর, বাগড়া, রসুলপুর,কালুপাড়াসহ আরও কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা বড়পুকুরিয়া বাজারে আসা যাওয়ার জন্য কালুপাড়ার ভেতর দিয়ে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা ছিল এই দেবে যাওয়া রাস্তাটি। এখন সেখানে স্থান ভেদে ৬ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত পানি। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল এক দিঘি।

এলাকাটি দেবে যাওয়ার পর গ্রামবাসীর চাপের মুখে রাস্তাটির বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) কর্তৃপক্ষ সেখানে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে বিকল্প একটি রাস্তা তৈরি করে দেয়।

ডেবে যাওয়া ওই রাস্তাটির পাশেই ছিল একটি কবরস্থান ও ঈদগাঁ। এখন এই ঈদগাটি গম্ভুজ ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। আর কবরস্থান ৫ ফুটের বেশি পানির নিচে।

গ্রামবাসীরা জানায়, বিসিএমসিএল কর্তৃপক্ষ বিকল্প যে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে সেটিও দেবে গেছে। পরে তারা বলেছিল গ্রামের স্কুলের ছাত্রদের জন্য স্কুলে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবে। কবরস্থান দেবে যাওয়ায় দাফনের ব্যবস্থা করা নিয়েও পড়তে হচ্ছে নানা ঝামেলায়। কবর দেওয়ার জন্য যেতে হচ্ছে অনেক দূরে কোনো গ্রামে। গ্রামবাসীদের কেনার জন্য জমির খোঁজ করতে বলেই দায়িত্ব শেষ করেছে খনি কর্তৃপক্ষ।

পেট্রোবাংলার জরিপ অনুযায়ী  ক্ষতিগ্রস্ত ৬৪৬ একর জমির মধ্যে ৪৮৬ একর ধানি জমি। বাকি এলাকায় বড়পুকুরিযা প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, কলেজ, দাখিল মাদ্রাসা, হেফজো খানা, ৫টি মসজিদ, দুটি কবরস্থান, একটি ঈদগার মাঠ, ৫টি অটো মিল ও চাতাল এবং দুই হাজার ৬শ ঘড়বাড়ি।

ক্ষতিপূরণ নিয়ে টালবাহানা ও সমঝোতা স্মারক অস্বীকার:

এদিকে খণ্ডকালীন বা এককালীন ক্ষতিপূরণ নিয়েও সরকার টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খণ্ডকালীন ক্ষতিপূরণ নির্দিষ্ট সময়ে না দেওয়ায় গ্রামবাসীর অনেকেরই নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রামবাসীর সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারকও সরকার অস্বীকার করছে।

বড়পুকুরিয়া গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, ‘২০০৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছি। কিন্তু টাকা দেওয়ার কথা ছিল মে মাসে। একইভাবে এ বছরের ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও পাইনি। জমিজমা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরিবার চালাতে হয় ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে। ’

খণ্ডকালীন ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছে ৮টি গ্রামের ১১শ’ ৪৩টি পরিবার। একর প্রতি আমন ফসলের জন্য ক্ষতিপূরণ ২৬ হাজার টাকা ৫শ’ টাকা এবং ইরি ফসলের জন্য ৩৫ হাজার টাকা।

ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে আন্দোলনরত প্রতিনিধিদের সঙ্গে পেট্রোবাংলার একটি সমঝোতা সই করে। স্মারক অনুযায়ী, স্থাপনার মূল্য পদ্মাসেতু প্রকল্পের জমির সর্বোচ্চ মূল্য অর্থাৎ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের মূল্যের সমান মূল্য দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য মাইনিং সিটি প্রতিষ্ঠা করা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খনিতে চাকরি প্রদান, বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হলেও গেল ২৮ রমজানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সাংসদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার নতুন একটি ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঘোষণা করেন। প্যাকেজ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তরা কৃষিজমির জন্য একর প্রতি ২০ লাখ, বাণিজ্যিক ভূমি একরপ্রতি ২৫ লাখ, দশ শতকের নিচে জমি এবং ভূমিহীনদের জন্য ২ লাখ টাকা এবং দোকানের জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা।

এর আগে আগস্ট মাসে খনি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করতে ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের একটি কমিটি হয়। কমিটি এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী পুনর্বাসন ও জমি অধিগ্রহণে সরকার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা হাতে নেয়। এতে মোট ব্যয় হয় ১৮৯ কোটি ৫৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
 
এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণে ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি ৮০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৪৮৬ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করতে খরচ হবে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রতি একর কৃষি জমির দাম ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ টাকা করে। বসতভিটা ও বাণিজ্যিক ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে মোট ১৬০ একর। প্রতি একর জমির দাম ধরা হয়েছে ৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে ১৬০ একরের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা। ৬৪৬ একর জমির মধ্যে থাকা দুই হাজারের বেশি ছোট বড় স্থাপনার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। আর্থিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। ফসলের ক্ষতি একর প্রতি ২৫ হাজার টাকা করে ১২ কোটি এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। স্থানান্তরের কারণে ব্যবসায়িক ক্ষতি ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণের জন্য কার্যালয় প্রতিষ্ঠা ও খরচ ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

পুনর্বাসনের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪৮৬ একর কৃষি জমির মালিকদের অন্যত্র পুনর্বাসনের খরচ ধরা হয়েছে ৭৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ১৬০ একরের বসতভিটা ও বাণিজ্যিক ভবনের মালিকদের পুনর্বাসনে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এছাড়া খনি এলাকার ৬৪৬ একর জমির ভেতর যে সকল ভূমিহীন দ্ররিদ্র কৃষক পরিবার রয়েছে তাদেরও পুনর্বাসন করা হবে। এরকম পরিবার রয়েছে ৩১৮টি। পরিবারপ্রতি এক লাখ টাকা করে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

জমি অধিগ্রহন ও পুনর্বাসন ছাড়াও এ কাজের জন্য অন্যান্য বিবিধ ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৫৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা। গত ২২ সেপ্টেম্বর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক সভায় এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য া সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎসচিব আবুল কালাম আজাদ, জ্বালানিসচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা আগামী জুনের মধ্যে বড়পুকুরিয়ায় পুনর্বাসন কাজ শেষ করতে চাইছি। এজন্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’  

নতুন প্যাকেজ প্রত্যাখান ও আন্দোলনের হুমকি:

ভূমি প্রতিমন্ত্রী-ঘোষিত প্যাকেজ প্রত্যাখান করেছেন খনি এলাকার গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি- দশ দফা সমঝোতার স্মারকের ভিত্তিতে সব কিছু করা হোক। তা না করা হলে খনি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বড়পুকুরিয়া জীবন সম্পদ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই এই সমঝোতা স্মারক তৈরি ও স্বাক্ষর করা হয়েছে। অথচ সেটিকে পাশ কাটিয়ে আমদের গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা না করে স্থানীয় সাংসদ ক্ষতিপূরণের নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ’

তিনি বলেন, ’আমরা দশ দফার বাস্তবায়ন চাই। নইলে রক্ত দিয়ে হলেও খনির কাজ বন্ধ করে দেব। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ’

একই কথা বললেন বড়পুকুরিয়া ভমি ও সম্পদ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ। তিনি বাংলানিউজে জানান, সরকার যদি ক্ষতিপূরণ নিয়ে টালবাহানা করে তাহলে ফুলবাড়ির মত ঘটনাও ঘটতে পারে।

এই বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ নিয়ে একটি কমিটি আছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন অনুযাযী সরকারের নির্দেশে আমরা কাজ করি। ’

ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন বা জমি অধিগ্রহণের দাম জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘চাপিয়ে কেন দেওয়া হবে। কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে জরিপ করা হয়েছে। সেই আলোকেই ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, অক্টোবর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।