ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

একসময় পাম্প, শ্যালো ও ডিপ টিউবওয়েলেও পানি উঠবে না: খাইরুল ইসলাম

মনোয়ারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১২
একসময় পাম্প, শ্যালো ও  ডিপ টিউবওয়েলেও পানি উঠবে না: খাইরুল ইসলাম

ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. খাইরুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত।

 বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের স্বাস্থ্যবিভাগে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি এনজিওতে কাজ করেন।

টাঙ্গাইল জেলার ভূঁয়াপূরে তার জন্ম। মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজে (মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের পূর্বতন নাম) লেখাপড়া শেষে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিপসম এবং যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে জনস্বাস্থ্যে এমফিল করেন।
 
ওয়াটার ও স্যানিটেশনকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের অনেক নীতি নির্ধারণী কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন। জনস্বাস্থ্য নিয়ে দেশি-বিদেশি জার্নালে লেখালেখি করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত বর্তমানে ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ব্রিটেনভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটার এইড বাংলাদেশ ১৯৮৬ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। তবে ওয়াটার এইড মূল আন্তর্জাতিক সংস্থার শুরু ইংল্যান্ডে ১৯৮১ সালের ২১ জুলাই। এটি ইংল্যান্ডের একটি দাতব্য ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অব ওয়েলস ১৯৯১ সাল থেকে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বারবারা ফ্রস্ট। বর্তমানে ওয়াটার এইড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বের প্রায় ১৫টি দেশে কাজ করছে। তবে বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম চালানো ওয়াটার এইড প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এইড ইউকে, ওয়াটার এইড আমেরিকা, ওয়াটার এইড অস্ট্রেলিয়া, ওয়াটার এইড সুইডেন উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালেও কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি মূলত পানি এবং জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে।

সম্প্রতি ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. খাইরুল ইসলাম বাংলানিউজের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মনোয়ারুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হলো এর দ্বিতীয় কিস্তি।

বাংলানিউজ: পানি সমস্যায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট কি? পানি নিয়ে যে রাজনীতি হয় সে ব্যপারে বলুন।

খাইরুল ইসলাম: জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বুত্রোস বুস্ত্রোস ঘালি বলেছিলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে পানির জন্য। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ পান, পরিচ্ছন্নতা এবং পয়ো:নিষ্কাশনের জন্য পানিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই সব দেশের সরকার পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাধ্য। সেই অনুযায়ী প্রতিদিন একজন নাগরিকের ২০ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাবার অধিকার রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। পুরোটাই বিনামূল্যে। বাংলাদেশে শিল্প কারখানায় ধনীরা পানির বড় অংশ ব্যবহার করছে। এতে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।

পয়ঃশোধন করার কথা থাকলেও ঢাকা ওয়াসা তা না করে বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলছে। সে বর্জ্য বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষা, মেঘনা নদীতে গিয়ে মিশছে। নাগরিক বর্জ্যের সাথে যোগ হচ্ছে শিল্প বর্জ্য। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য পুরাতন পুকুর ও জলাশয় সংষ্কারের পাশাপাশি নতুন পুকুর ও জলাশয় খনন করতে হবে। পানি নীতি ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন সীমিতকরণের পাশাপাশি জলাভূমি ভরাট করার বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। উপকূলীয় এলাকায় ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততার সাথে অভিযোজনের জন্যও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশের কৃষিবিদগণ ইতিমধ্যেই স্বল্প পানিতে উৎপাদনক্ষম এবং লবণাক্ত পানিতে উৎপানক্ষম ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন করেছেন। ভবিষ্যতে তারা এই ধরনের অন্যান্য ফসলের প্রজাতি উদ্ভাবন করবেন বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই এ সমস্যার সমাধান করতে হলে ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগের পানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। ’’

বাংলানিউজ: ভূ-উপরিভাগের পানি ব্যবহারে কী করতে হবে? আর এতে কি সমাধান আসবে? বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ বিষয়টি নিয়ে বলুন।

খাইরুল ইসলাম: আমরা ওয়াটার হারভেস্টিং এর কথা বারবার বলছি। দেশের নগরাঞ্চলে সুপেয় পানির প্রয়োজন মেটাতে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানো এবং লবণাক্ততাপ্রবণ উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সমস্যা দূরীকরণে বৃষ্টির পানি একটি সম্ভাবনাময় বিকল্প।

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে সৃষ্ট পানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীতে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকা বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবণাক্ততা এবং সমগ্র দেশে আর্সেনিক দূষনের ফলে নিরাপদ পানির অভাব রয়েছে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। সরকারি বিভিন্ন নির্মাণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এটিকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে রাজউক এটি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এর বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজউকের বিল্ডিং কোডে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে-- যাতে রাজধানীর প্রতিটি ভবনে এই সিস্টেম চালু হয়। শুধু ঢাকা নয়, সব শহরে এটি করতে হবে।

আমরা জেনেছি, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ২১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা বিশ্বের গড় বৃষ্টিপাতের চাইতে ৮০০ মিলিমিটার বেশি। সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে বৃষ্টির পানি পান করা এবং গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহারের সঙ্গে জনগণ খুব বেশি পরিচিত না থাকায় ব্যাপক সম্ভাবনা থাকার পরেও এ বিশাল পরিমাণ বৃষ্টির পানি অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে।

ইউরোপ আমেরিকাসহ ভারত, ব্যাংকক, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডসে বুষ্টির জল সংরক্ষণ ব্যবস্থা (রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম) চালু আছে। এর মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করে ব্যবহার করা হয় এবং এ পানিকে ভূগর্ভে পাঠানো যায়। এভাবে পানি নিচে নামাতে পারলে অস্বাভাবিকভাবে ভূগর্ভস্থ পানির নিচে নামা রোধ করা যাবে।

বাংলানিউজ: পানি সংকট নিয়ে বাংলাদেশের সরকার কতটুকু সচেতন? আইন প্রণয়ণ বা বাস্তবায়ন কোন অবস্থায় আছে? এ ব্যপারে রাজউক, ডিসিসি, ওয়াসা বা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কী করতে পারে? আবাসন খাত কি ভূমিকা রাখতে পারে?

খাইরুল ইসলাম: জাতীয় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, জাতীয় গৃহায়ন নীতিমালা ও সরকারে অন্য সব সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় এটি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
 
রাজউকসহ অন্যান্য  নগর ও পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার নিশ্চিত ও তাদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে মানুষকে জানাতে প্রদর্শনী প্ল্যান্ট তৈরির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে আকৃষ্ট করতে হবে। সরকারের সব ধরনের ভবনে বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাইকোন শেল্টার, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

নতুন যত ভবন হবে সেসব অবকাঠামোগুলোতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এটা হতে পারে বাড়ি, অফিস, ফ্লাইওভার, ফুট ওভারব্রিজ, এয়ারপোর্ট, রেলস্টেশন, হাইওয়ে, স্টেডিয়াম, রেল লাইন, অফিস ও অন্যান্য খোলা জায়গা।

শুধু সরকারিভাবে হলে হবে না, আবাসন শিল্পকে তাদের বিভিন্ন প্রজেক্টে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ব্যবস্থা রাখতে বাধ্য করা এবং এজন্য তাদের বিশেষ প্রণোদনা (ইনসেনটিভ) দেয়া উচিত। আবাসন সেক্টরকে গুরুত্ব দিয়ে এসব ব্যপারে তাগিদ দিতে হবে।

বাংলানিউজ: পানি সেক্টরে বাংলাদেশে কী ধরনের জনশক্তি আছে? এ ব্যাপারে দক্ষ জনবল ও বিশেষজ্ঞ কিভাবে তৈরি করা যায়?

খাইরুল ইসলাম: এখন পানি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, আইডব্লিউএম, ওয়ারপো, ওয়াসা কাজ করছে। এছাড়াও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নযন বোর্ড আছে। অবশ্যই এই সেক্টরে দক্ষ জনবল বা বিশেষজ্ঞ যা আছে তার কোনোটাই যথেষ্ট নয়। আপনি আশ্চর্য হবেন আন্তর্জাতিক পানি আইন নিয়ে বাংলাদেশে একমাত্র উচ্চতর ডিগ্রি নিযেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এভাবে কেন চলবে? আমাদের জনবল তৈরি করতে হবে।

এই সেক্টরে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই উদ্যোগ নিতে পারে। এই বিষয়ে  গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ পেশাদার প্রযুক্তিবিদ গড়ে তুলতে হবে। সাশ্রয়ী মূল্যে রেইন ওয়াটার প্লান্ট বসানো ও সহজলভ্য করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ এর  সম্বন্ধে অনেকেই জানে না। গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাথতে হবে।

বাংলানিউজ: অতিরিক্ত পানির ব্যবহার বা অপচয়ে প্রাকৃতিক কী পরিবর্তন ঘটছে? ঢাকার বাইরে এই সমস্যা কতটুকু?

খাইরুল ইসলাম: প্রাকৃতিক চেইন অনুযায়ী সাধারণত আমরা মাটির নিচে থেকে যে পানি উত্তোলন করে থাকি তা বৃষ্টির পানি, নদীর পানি ও খাল-বিলের মাটি চুঁইয়ে নিচে যায় এবং পুনর্ভরণ হয়। কিন্ত যে পরিমাণ পানি সেচের জন্য মাটির নিচ থেকে তোলা হয় সে পরিমাণ পানি মাটির নিচে যায় না। ফলে পানির স্তর নামছেই।

দেশের উত্তরাঞ্চলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। দেশের লাখ লাখ গভীর ও অগভীর নলকূপ (ডিপ ও শ্যালো টিউবওয়েল) দিয়ে সেচের জন্য পানি উত্তোলন করা হয়। অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। কারণ অগভীর নলকূপের নলটি মাটির ভেতরে একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত যেতে পারে। এই স্তরের বাইরে গেলে কিংবা পানির স্তর আরো নিচে চলে গেলে অগভীর নলকূপ সেখান থেকে পানি তা তুলতে পারে না। পানির স্তর অব্যাহত নিচে নামতে থাকলে একসময় শ্যালো টিউবওয়েলে পানি উঠবে না। ডিপ টিউবওয়েলে (গভীর নলকূপ) এখন আর আগের মতো পানি পাওয়া যায় না। এটাতো একটি অশনি সংকেত।

বরেন্দ্র প্রকল্পের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর জেলায় এমনিতে শুষ্ক। ঐখানকার অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন ওই এলাকাগুলোয় বছরে তিনবার ফসল হলেও একসময় পানির অভাবে এটা ব্যাহত হবে।

অন্যদিকে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার ফলে আবাদ কম হচ্ছে। এসব এলাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় শস্য উৎপাদন করতে হবে। এসব নিয়ে সরকার খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছে না। আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে ভাবতে হবে। নিজেদের প্রয়োজনে, নিজেদের বাঁচার জন্য ভাবতেই হবে। আমাদের আগামী প্রজন্মের কথাও আমাদের ভাবতে হবে।

কৃত্রিমভাবে বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করিয়ে পানির স্তরকে সমৃদ্ধ করতে হবে। রেইন ওয়াটার হারভেস্টিংয়ের সাহায্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন আচ্ছাদিত স্থান এবং বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে পানি সংগ্রহ করে তা পাইপের মাধ্যমে প্রবাহিত করে শহরের উন্মুক্ত মাঠ বা পার্কে কূপ খননের মাধ্যমে তা ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করাতে হবে। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য থাকবে।  

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, কোনো রকম ভবিষ্যত চিন্তা ছাড়াই বাংলাদেশের সেচের প্রায় ৯০ ভাগ এবং পান করার ৯৯ ভাগ পানি মাটির নিচ থেকে তোলা হয়। এতে মহাসংকট তৈরি হবে। কারণ একসময় এ পানি আরো নিচে নেমে যাবে। একসময় পাম্প, শ্যালো ও  ডিপ টিউবওয়েলেও পানি উঠবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ১৬ আগস্ট, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর  [email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।