ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

৫ বছরে ৫ লাখ বাংলাদেশি শিশু বিদেশের যৌনপল্লীতে!

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১২
৫ বছরে ৫ লাখ বাংলাদেশি শিশু বিদেশের যৌনপল্লীতে!

ঢাকা: সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইকেল ম্যাকগ্রাথ বলেছেন, গত ৫ বছরে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি কন্যাশিশু বিদেশের যৌনপল্লীতে পাচার করা হয়েছে। পাচারের পর যৌনকর্মে নামতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে।

ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়েছিল ওই শিশুদের।

ম্যাকগ্রাথ বলেন, এদের মধ্যে ৩ লাখ শিশু ভারতে ও ২ লাখ শিশু পাকিস্তানের বিভিন্ন যৌনপল্লীতে রয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ (এনএইচআরসি) আয়োজিত ``ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ: ফলো-আপ অন দ্য রিকমেন্ডেশনস অন চাইল্ড লেবার অ্যান্ড ট্র্যাফিকিং`` শীর্ষক কর্মশালায় মাইকেল ম্যাকগ্রাথ এই ভীতিকর তথ্য জানান।

বুধবার গুলশানের ব্র্যাক-ইন সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন  মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রেজাউল হকের সভাপতিত্বে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মাইকেল শিপার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব রোখসানা হোসেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী পরিচালক গীতা চক্রবর্তী, উদ্দীপনের নির্বাহী পরিচালক এমরানুল হক চৌধুরী, রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন গুহ ও কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মাইকেল ম্যাকগ্রাথ আরও বলেন, ‘‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌``পাচার রোধে বাংলাদেশ সরকার চমৎকার সব পলিসি গ্রহণ করছে এবং দেশটির আধুনিক আইনও রয়েছে, কিন্তু তার যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটছে না। ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ``

তিনি এ সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে বেসরকারি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার পরামর্শ দেন।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‌‘মানবাধিকার কমিশন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শিশুশ্রম রোধের ব্যাপারে একটি স্ট্র্যাটিজি প্ল্যান তৈরি করবে।

এছাড়া মানবাধিকার কমিশন ভুক্তভোগী বা অপরাধী কিশোরদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে ইতোমধ্যে কিছু সুপারিশ পেশ করেছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মাইকেল শিপার বলেন, বিশ্বব্যাপীই শিশুশ্রম ‌ রয়েছে। এটা এখন আর্ন্তজাতিক সমস্যা। তবে বাংলাদেশে শিশুশ্রম রোধে  ``উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন`` নামে সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর তৃতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ এখন চলছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে এরই মধ্যে ১৪ হাজার শিশুশ্রমিককে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে মুক্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ৫০ হাজার শিশুকে স্কিলড বা করে তোলা হবে।

রোখসানা হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে যতো শিশু পাচার হচ্ছে তার সিংহভাগ যাচ্ছে ভারতে ও মধ্যপ্রাচ্যে। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে গঠিত টাস্কফোর্সের কারণে বর্তমানে উভয় দিক থেকেই পাচার অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়া জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের পুলিশ বাহিনীর মনিটরিং সেলের কারণেও এক্ষেত্রে সুফল পাওয়া যাচ্ছে বলেও দাবি করেন রোখসানা হোসেন। ।

অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, অভিবাসনের আড়ালে পাচারের ঘটনা বেড়ে চলেছে। তাই শিশুশ্রম ও পাচার রোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২২ ঘণ্টা আগস্ট ৩০, ২০১২
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর  [email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।