ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

সুন্দরবনের দস্যু দমনে যৌথ অভিযানে নামবে পুলিশ-র‌্যাব-কোস্টগার্ড

গাজী জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১০
সুন্দরবনের দস্যু দমনে যৌথ অভিযানে নামবে পুলিশ-র‌্যাব-কোস্টগার্ড

ঢাকা: সুন্দরবনের বন ও জলদস্যু দমনে যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে পুলিশ, র‌্যাব ও কোস্টগার্ড। এছাড়া বনপ্রহরীদের হাতে কাঠের বন্দুকের পরিবর্তে তুলে দেওয়া হবে আধুনিক অস্ত্র।



শনিবার বাংলানিউজকে একথা জানান বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এ সময় পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের আকর্ষণ বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনার কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সুন্দরবনে যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে ও বন প্রহরীদের হাতে যে ধরনের অস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে  হিংস্র বন্যপ্রাণীর আক্রমণ ঠেকানো কঠিন। এসব পুরনো অস্ত্র দিয়ে দস্যুদের সঙ্গেও লড়াই করা সম্ভব হয় না। ’

সুন্দরবন এলাকায় কাঠ পাচার, মাছ ধরা ও মধু সংগ্রহকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ডাকাত গ্রুপের তৎপরতা হরহামেশা চোখে পড়ে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডাকাত দলের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে অনেক সময় বনপ্রহরীদের গুলি-পাল্টাগুলি চালাতে হয়। কিন্তু ডাকাতদের হাতে আধুনিক অস্ত্র থাকায় পুরনো অস্ত্রসর্বস্ব বনপ্রহরীদের পক্ষে তাদের প্রতিহত করা সম্ভব হয় না। ’

হাছান মাহমুদ জানান, ডাকাতদের সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত সুন্দর বন এলাকায় ১০ প্রহরীর প্রাণহানি ঘটেছে। তাই সুন্দরবনকে দস্যুদের কবল থেকে রক্ষা করতে বন প্রহরীদের পাশাপাশি সরকার যৌথ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এরই মধ্যে সুন্দরবনের আশপাশের এলাকায় যৌথ বাহিনী তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে বলেও বাংলানিউজকে জানান বন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরো জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ ও র‌্যাব পাঠালে সুন্দরবনের ভেতরে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সুন্দরবনের প্রায় ২ হাজার ৩শ’ বর্গমাইল দুর্গম এলাকা দস্যুদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। তাদের ছত্রছায়ায় এ এলাকা থেকে প্রতিদিনই লুটে নেওয়া হচ্ছে মূল্যবান বনজ সম্পদ। এছাড়া প্রায়ই বনরক্ষী ও বনজীবীদের ওপর হামলা চালিয়ে  জাল, নৌকা, ট্রলার, নগদ টাকা ও অস্ত্র লুটে নিচ্ছে তারা।

কোস্টগার্ড সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যখনই বিশেষ আটক অভিযান চলে, তখনই গ্রেপ্তার এড়াতে সন্ত্রাসীরা সুন্দরবনে গা ঢাকা দেয়। তারা কখনো কাঠ পাচার, কখনো বাঘ ও হরিণ শিকার, আবার কখনো দস্যুবৃত্তিকে পেশা হিসেবে নেয়। বর্তমানে এসব প্রবণতা বেড়েছে।
 
কঠোর নজরদারীর অভাবে সুন্দরবন থেকে বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাঠ পাচার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০০৩-২০০৪ সালে বন থেকে পাচারকালে ৪৩ হাজার ৭৩৩ ঘনফুট কাঠ ও ৫১ পাচারকারী আটক হয়। ২০০৪-২০০৫ সালে পাচারকালে আটক করা হয় ৪৩ হাজার ২১১ ঘনফুট কাঠ ও ৬৪ পাচারকারীকে। ২০০৫-২০০৬ সালে কাঠ উদ্ধার হয় ২৪ হাজার ১১০ ঘনফুট, আটক হয় ১২৫ জন। ২০০৬-২০০৭ সালে ৩৩ হাজার ৪৮৯ ঘনফুট কাঠ ও ৩০ কাঠ পাচারকারী আটক হয়। ২০০৮ সালের মে পর্যন্ত উদ্ধার হয় ১১ হাজার ৮০৬ ঘনফুট আটক হয়  ৪৭ জন পাচারকারী।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ অক্টোবর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।