ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

ক্রসফায়ার নিয়ে রুল, সাত বছরেও জবাব পায়নি বাদীপক্ষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৩
ক্রসফায়ার নিয়ে রুল, সাত বছরেও জবাব পায়নি বাদীপক্ষ

ঢাকা: ২০০৬ সালে সন্ত্রাসী টুন্ডা ইসমাইল ‘পুলিশ হেফাজতে’ কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন। ওই বছরই এ নিয়ে ‌একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়।



আজ অবধি ওই রিটের জারি করা রুলের জবাব দেয়নি বিবাদী পক্ষ। উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না শুনানিরও।

পরবর্তী বছরগুলোতে এ ধরনের আরও কয়েকটি রুল জারির পরও জবাব দেয়নি বিবাদীরা। এমনকি রুল শুনানির উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে, ২০১২ সাল পর্যন্ত বর্তমান সরকারের প্রথম চার বছরে ক্রসফায়ারে ৪৬২ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি গুম হয়েছেন অন্তত ১৫৬ জন। এছাড়া গুম হওয়া ১৫৬ জনের মধ্যে মৃতদেহ পাওয়া গেছে মাত্র ২৮ জনের। আইন সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন।

অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “২০১২ সাল পর্যন্ত বর্তমান সরকারের এ চারবছরে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৪৬২ জন ও গুম হয়েছে ১৫৬ জন। গুম হওয়া ১৫৬ জনের মধ্যে ২৮ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের আর কী উদাহরণ থাকতে পারে!”

টুন্ডা ইসমাইল নিহত হওয়ার পর মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয় ২০০৬ সালের ২৫ মে।

এর পর এর বৈধতা নিয়ে বিচারপতি মো. আওলাদ আলী ও বিচারপতি জিনাত আরার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ওই রুল জারি করেন।

‘বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে একই বছরের ৬ আগস্ট আরও একটি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ ওই রুল জারি করেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের জীবনের নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছিল।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের দায়ের করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ রুলটিও জারি করেন।

এর তিন বছর পর ‘বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে আরেকটি রিট আবেদন দায়ের করা হয় ২০০৯ সালের ২৯ জুন।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও কর্মজীবী নারী যৌথভাবে রিট আবেদনটি করে।

এ আবেদনেও হাইকোর্ট ক্রসফায়ার কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

ওদিকে, মাদারীপুর সদর উপজেলার লুৎফর খালাসী ও খায়রুল খালাসী নামে দুই সহোদর ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনায় সুয়োমোটো রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুলে দুই সহোদরকে ক্রসফায়ারে হত্যা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

পরে ২০১০ এর ৩ জানুয়ারি শুনানি মুলতবি করা হয়। এর পর এখন পর্যন্ত আর কোনো শুনানি হয়নি।

২০০৯ সালের ১৭ নভম্বের বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান ও বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আরকেটি রুল জারি করেন। এরও শুনানি হয়নি।

এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বাংলানিউজকে বলেন, “২০০৬ সালে জারি করা রুলের এখন পর্যন্ত জবাব পাইনি। এ রুল শোনার জন্য এখতিয়ার সম্পন্ন কোর্ট পেলে শুনানির জন্য উপস্থাপন করবো। ”

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৩
এমইএস/সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর;জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।