ঢাকা: নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সব ধরনের প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ইতালি সরকার। সে দেশের নতুন পরিবেশ আইনে প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
ইতালির এ সিদ্ধান্তকে একটি সম্ভাবনা হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। দেশটিতে পাটজাত পণ্য রপ্তানির বাড়তি এ সুযোগ কাজে লাগাতে সরকার এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বাংলানিউজকে শনিবার একথা জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া।
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের সামনে একটা বাড়তি সুযোগ হিসেবে এসেছে। আমরা তা গ্রহণে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘যতো দ্রুত সম্ভব আমরা এ সুযোগ গ্রহণে কাজ করবো। ’
এরই মধ্যে বন্ধ থাকা পাটকলগুলো চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারিভাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন পাটকল বসানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। ’
দিলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগও আশাব্যাঞ্জক। ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন কারখানা স্থাপন করছেন। সরকার তাদের সহযোগিতা করছে। ’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের পাটের কোনো অভাব নেই। বর্তমানে দেশের সকল পাটকল নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালু রাখার মতো পাট দেশেই মজুদ আছে। প্রয়োজনে উদ্বৃত্ত কাচাঁপাট রপ্তানি বন্ধ করা হবে। ’
কৃষকরা পাটের যে দাম পেয়েছে তাতে আগামী মৌসুমে পাটের উৎপাদন আরো বাড়বে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
এ সময়ের মধ্যে নতুন আরো কয়েকটি বড় ধরনের বেসরকারি পাটকল উৎপাদনে আসবে বলেও জানান তিনি।
শিল্পন্ত্রী বলেন, ‘ইতালিসহ ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা আমাদের কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে। ’
উল্লেখ্য, ইতালিতে একজন মানুষ প্রতিবছর গড়ে ৩৩৩টি প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করে। পুরো ইউরোপের এক-পঞ্চমাংশ প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার হয় ইটালিতে। সব মিলিয়ে এক বছরে প্রায় ২০ বিলিয়ন ব্যাগ ব্যবহার হয় সেখানে। সরকারি সিদ্ধান্তে এখন তাদের সমান সংখ্যক পাটের ব্যাগ দরকার। এ চাহিদা একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো পাট উৎপাদনকারি দেশের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পাট মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০০২ সালে আইন করে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে তৈরি পোশাকের পর রপ্তানি আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য।
নতুন এ আইনের বাস্তবায়ন সহজ ছিল না ইতালির জন্য। প্রথমে ২০১০ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সে দেশের সরকার। কিন্তু ব্যবসায়ীদের চাপে তা ব্যর্থ হয়। পরে ইতালির পরিবেশমন্ত্রী স্তেফানিয়া প্রেস্তিগিয়াকোমো`র নেওয়া কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে পরিকল্পনাটি এক বছর পরে বাস্তবায়িত হলো।
সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও পর্যাপ্ত পাটের ব্যাগের সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি । বর্তমানে পর্যাপ্ত পাটের ব্যাগের অভাবে দেশটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে কাগজ ও কাপড়ের তৈরি পরিবেশবান্ধব ব্যাগ।
স্থানীয় সময় ১৮২৬ ঘন্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১১