ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

সিলেট ও কৈলাশটিলায় নতুন গ্যাস আধারের সন্ধান

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১২
সিলেট ও কৈলাশটিলায় নতুন গ্যাস আধারের সন্ধান

ঢাকা: সিলেটের হরিপুর ও কৈলাশ টিলা গ্যাসক্ষেত্রে নতুন গ্যাসের আধার আবিষ্কার করেছে বাপেক্স।

তবে তা আরও নিশ্চিত এবং বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন যোগ্য কি-না, সে তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে বলে বাপেক্স সূত্র জানিয়েছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আধার চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তথ্য উপাত্ত আরও নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণের কাজ চলছে। এ কাজে এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে। এরপরেই বলা যাবে এসব আধার থেকে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে কি-না।

বাপেক্সের ত্রিমাত্রিক জরিপ দল (থ্রিডি সিসমিক সার্ভেয়ার টিম) কৈলাসটিলা ও সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে ৩৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করেছে গত ডিসেম্বরে।  

এর আগে ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুর ক্ষেত্র থেকে নতুন করে এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেয়।

এদিকে, বর্তমানে বাপেক্সের এ দলটি তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ করছে।

পাশাপাশি আগামী ১ ফেব্র’য়ারি থেকে বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুজা আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সিলেটে গ্যাসের পরিমাণ বাড়তে পারে। আর কৈলাশ টিলায় আগে তেল পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে আরও কিছু গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। থ্রিডি সিসমিক সার্ভের তথ্যর বিশ্লেষণ ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

আগামী এপ্রিল নাগাদ এ দুটি গ্যাস ক্ষেত্রের থ্রিডির ফলাফল জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

বাপেক্সে সূত্র জানিয়েছে, অ্যাপ্রাইজাল অব গ্যাসফিল্ড (৩ডি সিসমিক) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ২০১০ সালের এপ্রিলের শেষে রশিদপুর, কৈলাশ টিলা, তিতাস, বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র এবং সিলেট অঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানে ত্রিমাত্রিক জরিপ কাজ করার জন্য সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাপেক্স চুক্তি করে।

এ চুক্তির আওতায় বাপেক্স মোট এক হাজার ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপ কাজ করবে। এতে প্রায় ১৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।


জানা গেছে, ৫টি ক্ষেত্রের মধ্যে ইতোমধ্যে রশিদপুরে ৩২৫, কৈলাশটিলায় ১৯০ এবং হরিপুরে ১৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপকাজ শেষ হয়েছে।

এর মধ্যে ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুরে গ্যাস পাওয়ার কথা ঘোষণা দেয় বাপেক্সে। ওই সময় বলা হয়েছিল, রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে।


প্রায় ৫ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাপেক্স। এর মধ্যে গ্যাসক্ষেত্রে পশ্চিমাঞ্চলে ১ দশমিক ৮৭৩ টিসিএফ  নিশ্চিত এবং পূর্বাঞ্চলে আরও ৯৬৭ দশমিক ২ বিসিএফ পাওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল।

এর বাইরে পূর্বাঞ্চলে আরও ২ দশমিক ৪১৬ বিসিএফ গ্যাস পাওয়ারও আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।

এছাড়া কৈলাশ টিলা ও সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র পাশাপাশি হওয়ায় এখানেও বড় ধরনের গ্যাসের আধার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তবে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন যোগ্য কি-না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আর নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। চলতি মাসেই এই দুটি ক্ষেত্রের গ্যাস উপাত্ত বিশ্লেষণের কাজ শেষ হবে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে জানান, বর্তমান সরকার গ্যাস সেক্টরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। এরই মধ্যে দেশের রিজার্ভ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আশাবাদী আরও গ্যাস পাওয়া যাবে।

গ্যাসের নতুন আধার পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সময় হলেই সব কিছু জানতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।