তিনি বলেন, বই-খাতা-কলম ছুড়ে ফেলে ছাত্রলীগ যে ক্রমান্বয়ে কসাইয়ে পরিণত হয়েছে তার প্রমাণ গতরাতের রক্তাক্ত ঘটনা।
বুধবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, দু’দিন আগে রাতে ঢাবির হলে হলে ঢুকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বেছে বেছে নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ। গত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগদানকারী ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে হল ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এতে কমপক্ষে ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মোর্শেদা নামে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। ছাত্রলীগ হল শাখার সভানেত্রী এ ঘটনার সাথে জড়িত।
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশুভ চক্রান্ত হচ্ছে কি না এ প্রশ্ন এখন দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারাগারে তাকে ন্যূনতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাকে একটি সূর্যালোকহীন, নির্জন, স্যাঁতস্যাঁতে পুরনো ও বসবাস অযোগ্য ভবন-যা বহুদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণহীন ও সাধারণ কয়েদিদের জন্যেও বাসযোগ্য ছিল না; সেখানেই রাখা হয়েছে। এটি যেন মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি নির্যাতনের শামিল।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব আরো বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গঠিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার সদস্যের সরকারি মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শামছুজ্জামান বলেছেন, খালেদা জিয়ার রক্ত পরীক্ষা ও এক্সরে রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। তার এক্স-রে রিপোর্টগুলোতে দেখা যাচ্ছে ঘাড়ে ও কোমরের হাড়ে সমস্যা আছে। তার ফিজিও থেরাপির প্রয়োজন। তার দুটো হাঁটুই প্রতিস্থাপন করা। সেই জায়গাতেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।
খালেদা জিয়াকে যে এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছে তা মামুলি ব্যাপার। তাকে এমআরআইসহ আরও আধুনিক পরীক্ষা করলে বোঝা যেত তার প্রকৃত স্বাস্থ্যগত অবস্থা কী, যোগ করেন রিজভী।
জামিন পাওয়ার পরও সরকার প্রধানের নির্দেশে খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, আইনগতভাবে খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা পাওয়ার অধিকারী। অথচ সে সুযোগ তাকে দেওয়া হচ্ছে না। এখানেই সরকারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তাকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার ষড়যন্ত্র রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদিক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ