শ্রীমঙ্গল: শীত এলেই ওরা দখল করে নেয় আমাদের হাওর-বিল ও প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো। কোথা থেকে যে ওরা দলবেঁধে ছুটে আসে! আবার শীত শেষে ওরা কোথায় যে যায়! খুঁজে পাওয়া যায় না আর।
শীত মৌসুমে ওদের মনোমুগ্ধকর বুনো-সৌন্দর্যে প্রাণ ফিরে পায় বাংলার জলজ প্রকৃতি। মাঝে মধ্যে ‘কে-উইও’ ‘কে-উইও’... সমস্বরের শিস ধ্বনিতে প্রাকৃতিক সজীবতাকে প্রকাশ করতে ভুল হয় না তাদের। যতবার ওদের আমি দূরবীনের সাহায্যে দেখেছি চোখ ফেরাতে পারিনি। দৈহিক শোভা, চঞ্চলতা ও বিলের পানিতে মিশে যাওয়া এসব কিছুই যেন দৃষ্টিসীমার নতুন এক চমক!
পাখি পর্যবেক্ষক, বন্যপ্রাণি গবেষক ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ওমর শাহাদাত বাংলানিউজকে বলেন, রাজ সরালি বা বড় সরালি বাংলাদেশের সুলভ পরিযায়ী পাখি। এরা Dendrocygna গণের মাঝারি আকারের সরালি। পৃথিবীতে ৮ প্রজাতি; আর বাংলাদেশে দেখা যায় মাত্র ২ প্রজাতি। অন্যটি হলো পাতি সরালি। শীতে সব জলাশয়েই পাওয়া যায়, তবে বেশি দেখা যায় সিলেট বিভাগের হাওরাঞ্চলে; চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগেও পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, রাজ সরালির ইংরেজি নাম Fulvous Whistling Duck। দৈর্ঘ্য প্রায় ৫১ সেমি। ওজন প্রায় ৭০০ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ বাদামি ও কালোয় মেশানো; দেহতল তামাটে থেকে দারুচিনি রঙের; বগলে সাদাটে ডোরা ও কোমরের সাদা-ছিটা দাগ ওড়ার সময় স্পষ্ট চোখে পড়ে। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারায় কোনো পার্থক্য নেই।
শাহাদাত বলেন, রাজ সরালি নলবন ও উদ্ভিদভরা মিঠাপানির অগভীর হ্রদ, বড় নদী ও মোহনায় বিচরণ করে। সাধারণত বড় বড় দলে থাকে এবং রাতে অথবা মেঘলা দিনে ঘন ঘন ডুব দিয়ে বা সাঁতার কেটে আহার খোঁজে। খাদ্য তালিতায় জলজ উদ্ভিদের বীজ, কুঁড়ি, মৃত মাছ ইত্যাদি। রাজ সরালি বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫