মৌলভীবাজার (শ্রীমঙ্গল): মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চা শ্রমিকদের হাতে মারা পড়লো দু’টি বড় গুঁইসাপ।
ফিনলে চা কোম্পানির লাখাইছড়া বাগানের পাশে উজার করা বনে সম্প্রতি এই বিপন্ন প্রজাটির প্রাণী দু’টির সন্ধান পাওয়া গেলে চা শ্রমিকরা মেরে খেয়ে ফেলেন বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী বড় গুঁইসাপ (Water monitor বা Ring lizard) বাংলাদেশে বর্তমানে বিরল বা বিপন্ন। এদের কালোগুঁই বা রামগদিও বলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চা শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, জুলেখানগর চা বাগানের উজার করা জঙ্গলে গুঁইসাপ দু’টির সন্ধান পাওয়া গেলে মেরে খেয়ে ফেলা হয়- শুনেছি।
তিনি আরো বলেন, একটির ওজন ছিলো সাড়ে ৮ কেজি এবং অন্যটির সাড়ে ৭ কেজি। আমাদের এলাকায় সাঁওতাল, উড়াও সম্প্রদায়ের লোকজন এই প্রাণিটির মাংস খায়। প্রতি কেজি মাংস সাড়ে তিনশ’ টাকায় বিক্রিও হয়।
প্রকৃতিপ্রেমী ও বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী সাঈদ বিন জামাল বাংলানিউজকে বলেন, কালোগুঁই উভচর এবং দক্ষ সাঁতারু। এদের ওজন ৭ থেকে শুরু করে ২০ কেজি পর্যন্ত হয়। কখনো কখনো ৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এরা বাংলাদেশে বৃহত্তম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রজাতির গিরগিটি।
সুন্দরবন ও উপকূলীয় বনাঞ্চল, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের কিছু এলাকা এবং সিলেটের মিশ্র চিরসবুজ বনাঞ্চলে এদের দেখা পাওয়া যায়। শকুনের মতো এরাও মরা-পচা খেয়ে পরিবেশ পরিষ্কার রাখে। বাসস্থান সংকট, চামড়ার লোভে হত্যা ইত্যাদি কারণে বর্তমানে প্রাণীটি বিলুপ্তির মুখে, যোগ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের সহকারী বন্যপ্রাণী সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বন্যপ্রাণী ধরা, হত্যা এবং এর মাংস খাওয়া আইনত নিষিদ্ধ। বন্যপ্রাণী আটকের খবর পাওয়া মাত্রই আমরা উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এ ঘটনাটি জানলে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। যারা এগুলো ধরেছে বা মেরে খেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৬
বিবিবি/এএটি/এটি