সোমবার (১৫ মে) দুপুরে রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত বলধা গার্ডেনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৯০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঐতিহাসিক বাগানটি আজ আর আগের মতো নেই। ইজারাদার ও বন বিভাগের অবহেলার কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই বাগানটি প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
বলধা গার্ডেনের প্রধান গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পরবে বিশাল আবর্জনার স্তূপ। গাছের ডালপালার ভেঙে যাওয়া অংশ ও দর্শনার্থীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে। বাগানের ভেতরে এ ধরনের ময়লার স্তূপ আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় রয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বাগানের পরিবেশ।
বলধা গার্ডেনে দর্শনার্থীদের অন্যতম একটি আকর্ষণের কেন্দ্র হল পদ্মপুকুর। কিন্তু এখন শুধু নামেই রয়েছে পদ্মপুকুর। পদ্মপুকুরে কোনো পদ্মফুলের গাছ নেই, পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে পুকুরের পানিও নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বাগানের ভেতরে কয়েকটি পদ্মফুলের গাছ থাকলেও তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে বাগানের ভেতরের জায়গায় জমে আছে বৃষ্টির পানি। পানিতে গাছের ডালপালা ও পাতা পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। বাগানের ভেতরে টয়লেটগুলোর ব্যবহারের অনুপযোগী। এছাড়া দেখাশুনার অভাবে অনেক দুর্লভ গাছপালাও ধ্বংসের পথে।
তাছাড়া পার্কটিতে খোলামেলা ভাবে চলছে এক শ্রেণীর তরুণ তরুণীর অসামাজিক কর্মকাণ্ড। সব মিলিয়ে বলা চলে বলধা গার্ডেনে এখন আর দর্শনার্থীদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার পরিবেশ নেই।
পার্কটিতে হাটতে আসা কয়েক জন দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা বাংলানিউজকে বলেন, খোলামেলা অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও পার্কের ভেতরে পচা গন্ধের কারণে একটু বসা বা চলাফেরা করার কোনো সুযোগ নেই। আর এসব সমস্যা দেখারও কেউ নেই। বাগানটি আর আগের মতো নেই, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
বাগানটিতে আগত দর্শনার্থী মো. লিটন বাংলানিউজকে বলেন, যেখানেই চোখ পরে সেখানেই এক শ্রেণীর তরুণ তরুণীর অসামাজিক কর্মকাণ্ড দেখা যায়। তাছাড়া বাগানটিতে চারিদিকে শুধু ময়লা আবর্জনা। এখানে কোনো সুস্থ মানুষ ৫ মিনিটও টিকতে পারবে না। আমি চিন্তা করেছি এই পার্কে আর কোনো দিন আসবো না।
বলধা গার্ডেনের এ বেহাল দশা সম্পর্কে ইজারাদার নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা শুধু ইজারা নিয়েছি বাগান পরিচালনার। গাছ পালার দেখাশুনা বা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা আমদের কাজ না। এগুলো বন বিভাগের কাজ। তাদের ১২ জন মালি আছে কিন্তু একজনও কাজ করে না।
বাগানের ভেতরে চলা অসামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলে, কোনো তরুণ,তরুণী অসামাজিক কোনো কাজ করতে চাইলে আমরা বাধা দেই। আর কেউ যদি লুকিয়ে কিছু করে তাহলে আমরা কি করবো।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইজারাদারই বেশি টাকা আয়ের জন্য এসব অসামাজিক কর্মকাণ্ড করতে সাহায্য করছে। এক শ্রেণীর তরুণ,তরুণীদের আকর্ষণ করতে তারা এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
বলধা গার্ডেনের অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে বাগানের ভেতরে থাকা বন বিভাগের অফিসে গেল ঐ অফিসে কাউকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা মে ১৫,২০১৭
এমএ/বিএস