নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলন করলেন আগে। অথচ তার কাছে দুই-তিনটির বেশি প্রশ্ন নেই, এমন দৃশ্য দেখা যায় কমই।
কোয়াব মূলত ক্রিকেটারদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেন-দরবার করে। অথচ দুর্জয় বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালকদের একজন। ক্রিকেটারদের দাবি নিয়ে তিনি কি বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন? এমন প্রশ্ন প্রায়ই ঘুরেফিরে এসেছে গত কয়েক বছরে। দুর্জয় অবশ্য এবার বলছেন, এখন আর বোর্ডের সঙ্গে ‘কনফ্লিক্ট’ নেই তাদের।
শনিবার মিরপুরে কোয়াবের বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত) আগে ছিল। যখন বোর্ড কোয়াবকে স্বীকৃতি দিত না। এখন বোর্ড স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের কোয়াবের প্রতিনিধি হিসেবে একজন কিন্তু নির্বাচন করতে পারে, পরিচালক হতে পারে। ক্রিকেটারদের এক্সেসটা বোর্ডে বাড়ার জন্য আমরা তিন জন সাবেক অধিনায়ক আছি। যার মধ্যে একজন ক্যাটাগরি থ্রিতে নির্বাচন করেছে। বাকি দুইজন আমরা ডিভিশন থেকে এসেছি। ’
‘আমাদের মিঠু ভাই আছেন, তানভির আহমেদ টিটু, মাহবুব আনাম ভাই, জালাল ইউনুস ভাই আছেন। অনেকগুলো সাবেক ক্রিকেটার আছেন। ফলে ক্রিকেটারদের এক্সেসটা বাড়ার কারণে আমাদের কাজগুলো অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। এখন কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টে ক্রিকেটাররাই যদি না যায়, আমরা তো যাব না। কাজেই ক্রিকেটারদের আগ্রহ বা চাহিদা আমরা বোর্ডের ভেতরে থেকে যদি সমাধান করতে পারি, আমার মনে হয় এর চেয়ে ভালো কোনো অপশন নেই। ’
এখন বোর্ডের সঙ্গে মিলে কাজের সুযোগ বেশি দেখেন দুর্জয়, ‘যেহেতু আমরা এখন বোর্ডের দ্বারা স্বীকৃত। বোর্ডের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আগের চেয়ে অনেক বেশি। বোর্ডের এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া আছে। সেগুলো বাস্তবায়নই এখন মূল উদ্দেশ্য। ’
নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর নিজেদের কাজের পরিধি নিয়ে দুর্জয় বলেন, ‘আমাদের কাজ করার যে পরিধি, সেটা একই থাকবে। এর সঙ্গে নতুন সংযোজন করব। আজকেও আমরা বোর্ড প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু দাবি, অনুরোধ তুলে ধরেছি। যেগুলো ক্রিকেটারদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। সেগুলো বাস্তবায়ন এবং আরও নতুন কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া। ’
‘এছাড়া (কোয়াবে) নারী ক্রিকেটারদের সংযোজন। এটা নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে একটা ট্রাস্টের কথা বলেছি। যেটা বিভিন্ন সংস্থায় দিয়ে থাকেন। সেটা পাওয়ার ব্যাপারে বোর্ড সভাপতির সঙ্গে কথা বলে কাজ করব। ইনশাআল্লাহ্ আমরা পাবো। ’
কোয়াবের বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রায় পাঁচশ ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে বড় তারকাদের দেখা মিলেছে কমই। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ ছিলেন মঞ্চে। কিন্তু সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজার মতো তারকারা কেউই ছিলেন না। এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন দুর্জয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের সবার যোগাযোগ হয়েছে। তাদেরকে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে। তামিম, সাকিব যাদেরকে আমরা রিচ করতে পেরেছি, তারা তাদের থাকতে না পারার বিষয়টি জানিয়েছে। একটা সিরিজ শেষ হয়েছে, তাদের পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য থাকতে পারেনি। ওরা এ পর্যন্তই আমাদের ইনফর্ম করেছে। ’
এতদিনেও কোয়াবের কোনো কার্যালয় নেই। এ নিয়ে দুর্জয় বলছেন, শিগগিরই স্থায়ী অফিস তৈরি করতে পারবেন তারা। সেটি হতে পারে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের কোথাওই।
তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের অফিস হিসেবে, আমাদের সূচনা লগ্নে আমাদের মিঠু ভাইয়ের ইন্টার স্পোর্টসের কাছের বাসাকে ব্যবহার করতাম। কারণ সেখানে ক্রিকেটারদের যাতায়াত ছিল। তো আমাদের যে ঠিকানা নেই, তা নয়। আবার এটা সমস্যাও হয়। পৃথিবীর সব ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের অফিস আছে, তাদের পেইড সিইও আছে, তাদের একটা অফিস সেটআপ আছে। যেটা থেকে ক্রিকেটারদের আর্থিক সহায়তায় চালানো হয়। ’
‘আমার মনে হয়, কোয়াব এখন যেই জায়গায় দাঁড়িয়েছে, ক্রিকেটারদের যেই সাড়া পাচ্ছি, অচিরেই কোয়াবের একটি স্থায়ী ঠিকানা হবে। বোর্ডের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, সেটি যদি হোম অব ক্রিকেটেই হয়, এখানের একটি রুম যদি আমরা কোয়াবের অফিস হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, সেটাই হবে সবচেয়ে ভালো। আমাদের সঙ্গে বোর্ডের যে সম্পর্ক, রুম থাকলে আমরা পেয়ে যাব। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এমএইচবি/এএইচএস