ঢাকা: আগে বোলিং কিংবা ব্যাটিং যাই হোক না কেন, কেবল গতির ঝড়েই উড়ন্ত সূচনা করতে পারে টিম বাংলাদেশ। আর এতেই প্রতিপক্ষ আন্ডারডগ আফগানদের ব্যাটিং লাইনআপ তাসের ঘরের মতো টুটে যেতে পারে।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় (বাংলাদেশ সময়) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার মানুকা ওভালে নিজেদের প্রথম ম্যাচে একটা শুভ ও উড়ন্ত সূচনা চায় টাইগাররা।
ইতোমধ্যে সেই শুভ সূচনার প্রত্যাশার আশাবাণী সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন দলের অধিনায়ক ও পেস আক্রমণের অগ্রদূত মাশরাফি বিন মুর্তজা।
মূলত সে শুভ সূচনা হতে পারে পেস আক্রমণ থেকেই। দলে আছেন গতির ঝড় তুলতে পারা চার পেসার। অভিজ্ঞ পেসার ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, ক্রমেই পরিণত হয়ে ওঠা রুবেল হোসেন, আল-আমিন হোসেন ও তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল তাসকিন আহমেদ।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ও আবহাওয়ার কন্ডিশন অনুযায়ী মানুকা ওভালে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ তিন পেসার নিয়ে খেলবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে অধিনায়ক মাশরাফি বাদে অন্য তিন পেসারের মধ্য থেকে খেলবেন দুইজন। আর বোলিং আক্রমণে ধার ধরে পুঁচকে অফগানদের নাস্তানাবুদ করতে তাদের গতি ঝড়ই তুলতে হবে। করা যাবে না এশিয়া কাপের ভুল। পেস সহায়ক কন্ডিশনে বাংলা ঝড় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, আর সে সক্ষমতা চার পেসারের বাংলাদেশের রয়েছে।
মাশরাফি খেলতে পারেননি ২০১১ বিশ্বকাপ। ইনজুরিতে পড়ে চোখের জলে বিশ্বকাপ না খেলার বেদনা সহ্য করেছেন সেবার। আর সেই বেদনার আগুন থেকেই মাশরাফি নতুন বলে আগুন ঝরাবেন মাঠের ২২ গজে এটাই ১৬ কোটির প্রত্যাশা। ১৪৪ ওয়ানডে খেলে মাশরাফি ইতোমধ্যে নিয়েছেন ১৮৩ উইকেট। আর তাতে তিনি বাংলাদেশের বোলিং ইতিহাসের সর্বকালের সেরা পেসার।
বিশ্বকাপের আগে ব্যক্তিগত নানা বিতর্কের পরও আত্মবিশ্বাসী রুবেল হোসেন। ভালো করেই জানেন এই বিশ্বকাপ আসরটা তার জন্য, তার ক্যারিয়ারের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই তো নিজ অবস্থান থেকে কিছু একটা করে দেখাতে মরিয়া তিনি। ৫৩ ওয়ানডে খেলে ৬৯ উইকেট নেওয়া রুবেল বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের পালে ইতোমধ্যে যোগ করেছেন গতির হাওয়া।
এদিকে, বাংলাদেশর ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে বোলিং বৈচিত্র্য নিয়ে বেশ কাজ করছেন আল-আমিন হোসেন।
১১ ম্যাচে ১৭ উইকেট নেওয়া আল-আমিন জানান, ওয়াইড ইয়ার্কার, স্লোয়ার এবং ওয়াইড বাউন্সার নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ করেছেন। অস্ট্রেলিয়ায় সাফল্য পেতে গতি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়, জোরে বল করার চেয়ে বরং স্টাম্পে বল করলে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বলে মনে করেন তিনি।
গত বছরজুড়ে ভালো ক্রিকেট খেললেও বছরের শেষে এসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ সিরিজে হঠাৎ করেই ছন্দ হারিয়ে ফেলেন আল-আমিন। তবে এবার বল হাতে বিশ্বকাপের বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে চেনাতে চান বাংলাদেশি এই পেস তারকা।
এদিকে, বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে নিজের জাত চেনাতে প্রস্তুত তাসকিন আহমেদ। এই তরুণ পেসার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে জানান, ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টে গতির ঝড় তুলতে চান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন বলেন, বিশ্বকাপে খেলা সবারই স্বপ্ন, আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে। সুযোগ হলে, নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো। এরই মধ্যে তাসকিন ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ৭ উইকেট।
‘পেসার হিসেবে জোরে বল তাকে করতেই হবে’ উল্লেখ করে তাসকিন বলেন, তবে শুধু পেস থাকলেই সাফল্য পাওয়া যাবে না, সঠিক লাইন, লেন্থে বল করাও জরুরি। একই সঙ্গে রাখতে চান বৈচিত্র্যও।
২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন তাসকিন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে জানেন, এখানে সাফল্য পেতে, গতির ঝড় তুলতে কী করা উচিত।
সব মিলিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি ছাড়া তিন পেসারের মধ্যে যারাই খেলুক না কেন সবাই মরিয়া নিজের সেরাটা দিতে। পেসাররা নিজেদের সেরাটা দিয়ে কেমন বাংলা ঝড় তোলেন তারা সেদিকেই কোটি বাঙালির চোখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫
** টাইগারদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির চার বিশ্বকাপ
** ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক রানের নিশ্চয়তাই আসল
** চ্যালেঞ্জটা স্পিনারদেরই