ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আইসিসি থেকে অপসারিত হচ্ছেন শ্রীনি!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৫
আইসিসি থেকে অপসারিত হচ্ছেন শ্রীনি! নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন

ঢাকা: সবকিছুই নিজের বলয়ে রাখার এমন স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা পেয়ে বসেছিল নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনকে যে- ঘরের লোকদের অর্থাৎ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই)  কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পর্যন্ত গুপ্তচর লাগিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে এ ধরনের হীন কাণ্ড আর কতো করা যায়? আর পারছেন না শ্রীনিবাসনও।

অপকর্ম করতে করতে এখন একেবারে তলিয়ে যেতে শুরু করেছেন তিনি। ক্ষমতার পালক নির্মমভাবে খসতে শুরু করেছে তার!

ক্রিকেট বোর্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী বিসিসিআইয়ের সমর্থন নিয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির চেয়ারম্যান পদে বসে প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপকর্মের আখড়া বানিয়ে ফেলেছিলেন শ্রীনিবাসন। কিন্তু ‘সেইসব দিনগুলি’ শেষ হয়ে এসেছে। এজন্য শ্রীনিবাসনের অপকর্মের বড় শিকার বাংলাদেশ বা অন্য কাউকে পাল্টা আঘাত করতে হচ্ছে না, ‍তার ক্ষমতা নিঃশেষের গল্প লেখার ভূমিকায় খোদ বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারাই।

‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’কে আইসিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করতে সর্বমুখী ছক কষছেন বিসিসিআই চেয়ারম্যান জগমোহন ডালমিয়া আর ক্ষমতাসীন বিজেপির আশীর্বাদপুষ্ট বোর্ডের সচিব অনুরাগ ঠাকুর। বিসিসিআই সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এই খবরই দিচ্ছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

সূত্রগুলো বলছে, ঘরের লোকদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির খবর ফাঁসের পর শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে আইসিসিতে আর দেখতে চাইছেন না ডালমিয়া ও অনুরাগ গোষ্ঠী। আর সেটা বোর্ড এবং নিজেদের স্বার্থেই। আইসিসির চেয়ারম্যান পদে যে বিসিসিআইয়ের সুপারিশে শ্রীনিবাসন অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন, এখন সেই বিসিসিআই-ই অপসারিত করতে যাচ্ছে তাকে! অবশ্য, আইসিসিতে শ্রীনি থাকবেন কিনা সে বিষয়ে নিজেদের ইচ্ছা বাস্তবায়নে বিসিসিআইয়ের নীর্তি-নির্ধারক পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশের ভোট পাওয়া লাগবে ডালমিয়া-অনুরাগ জোটকে। সেটা সংখ্যার হিসেবে ২১।

সূত্রগুলো জানাচ্ছে, এই ২১ ভোট পেতে উঠে পড়ে লেগেছেন ডালমিয়া-অনুরাগরা। আর আগামী ২৪ মে আইপিএল ফাইনালের দিন ডাকা হতে পারে বিসিসিআইয়ের বিশেষ সভা।   ২৪ মে’র আগে ডালমিয়া-অনুরাগরা যদি ২১ ভোট নিশ্চিত করে ফেলতে পারেন, তবে সেদিন বিশ্বক্রিকেটের ‘খলনায়ক’ শ্রীনিবাসনের ধপাস পতনের খবর আসতে পারে- তা প্রত্যাশা করাই যায়।

বিশ্বকাপের ফাইনালে সমালোচিত কেলেঙ্কারি ঘটানো শ্রীনির সঙ্গে আইপিএল চেয়ারম্যান নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল ডালমিয়ার। ‍অবশ্য, এক্ষেত্রে ডালমিয়া ভালো সহযোগিতা পাচ্ছিলেন বোর্ড সচিব অনুরাগের। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ডালমিয়া-অনুরাগরা তক্কে তক্কে ছিলেন। সম্প্রতি ১৪ কোটি রুপি দিয়ে বিসিসিআইয়ের সদস্যদের ওপর শ্রীনির গুপ্তচরগিরির তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পাল্টা আঘাতের বড় সুযোগ পেয়ে যান তারা।

এই কেলেঙ্কারি তদন্তে অনুরাগ ঠাকুরকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে বিসিসিআই। তদন্তের প্রধান কর্তা হিসেবে অনুরাগ একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়ে ফেলেছেন শ্রীনিকে। জবাবে শ্রীনি উল্টো আইসিসি থেকে অনুরাগকে একটি চিঠি পাঠান। এই চিঠি চালাচালিতে উষ্ণতার মাত্রা আরও বেশি বাড়তে শুরু করেছে।

আর এতে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালসহ ম্যাচ গড়াপেটা ও বিভিন্ন অপকর্মে অভিযুক্ত শ্রীনি পুড়তে শুরু করলেও তার খামখেয়ালি ও স্বৈরতন্ত্রে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটভক্তরা উষ্ণতা নিতে থাকবেন- ‍তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৫
এইচএ/

** শ্রীনির তথ্য চুরি, ক্ষেপেছেন ভারতের ক্রিকেট কর্তারা
** বির্তকিত শ্রীনিবাসনের মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।