ঢাকা: ভিন্ন মহাদেশের দুই জন। অথচ কতই না মিল তাদের।
ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজটি ক্লার্কের জন্য মোটেই সুখকর হয়নি। তার নেতৃত্বে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই লজ্জাজনকভাবে অ্যাশেজ হাতছাড়া করে অস্ট্রেলিয়া। ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬০ রানেই গুটিয়ে যায় অজিরা। শেষ পর্যন্ত ইনিংস ও ৭৮ রানের দাপুটে জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
অন্যদিকে, গল টেস্টে ভারতকে ৬৩ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। কলম্বোয় সাঙ্গাকারার বিদায়ী টেস্ট জিতে সিরিজটাও নিজেদের করে নিতে চাইবে লঙ্কানরা। এমন একজন গ্রেট ব্যাটসম্যানের বিদায়টা নিশ্চয় মলিন হবে না!
বিশ্বকাপ জিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে রাজকীয় বিদায় ঘটে ক্লার্কের। তবে টেস্টে সঙ্গী হলো একরাশ হতাশা। অ্যাশেজ হাতছাড়া হলেও ওভালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে কী তিনি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবেন? অজিরা নিশ্চয়ই সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। তবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইংলিশরাও কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না।
অধিনায়ক হিসেবে অজিদের এখন পর্যন্ত ৪৬ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ২৩টিতে জয় পেয়েছেন ক্লার্ক। ১৬টিতে ড্র আর বাকি সাতটি ম্যাচে পরাজিত হয়। জয়ের হার পঞ্চাশ শতাংশ। অন্যদিকে, লঙ্কানদের ১৫টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাঙ্গাকারা। যার মধ্যে পাঁচটিতে জয় পেলেও তিন ম্যাচে হার মানতে হয়। ক্লার্কের মতো তিনিও সাত ম্যাচে ড্রয়ের দেখা পান।
অভিজ্ঞতার দিক থেকে অবশ্য ক্লার্কের চেয়ে সাঙ্গাকারা এগিয়ে। বয়সেও অজি তারকার চেয়ে তিন বছরের বড়। এখন পর্যন্ত ১৩৩ টেস্টে (কলম্বো টেস্ট বাদে) ৫৭.৭১ গড়ে ১২,৩৫০ রান করেছেন ৩৭ বছর বয়সী সাঙ্গাকারা। ৫২টি অর্ধশতকের পাশাপাশি রয়েছে ৩৮টি শতক। অন্যদিকে, ১১৪ টেস্ট (ওভাল টেস্ট বাদে) খেলা ক্লার্ক করেছেন ৪৯.৩০ গড়ে ৮,৬২৮ রান। তার দখলে রয়েছে ২৭টি ফিফটি ও ২৮টি সেঞ্চুরি।
ওয়ানডে ক্রিকেটেও দারুণ উজ্জ্বল সাঙ্গাকারা। ৪০৪ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪,২৩৪ রান। ব্যাটিং গড় ৪১.৯৮। শতক হাঁকিয়েছেন ২৫টি। অর্ধশতক ৯৩টি। ক্লার্ক খেলেছেন ২৪৫ ম্যাচ। ৪৪.৫৮ গড়ে রান সংখ্যা ৭,৯৮১। ৫৮টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে আটটি শতক।
আর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ভার্সন টি-টোয়েন্টিতে ৫৬টি ম্যাচ খেলেন সাঙ্গা। ব্যাটিং গড়টাও মন্দ নয়। ৩১.৪০ গড়ে করেছেন ১,৩৮২ রান। আটটি অর্ধশতকও রয়েছে। এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন। টি-টোয়েন্টিতে অতটা সফল ছিলেন না ক্লার্ক। তার ব্যাটিং গড় দেখলেই তা স্পষ্ট। ৩৪ ম্যাচে ২১.২১ গড়ে ৪৮৮ রান করেছেন। এক ম্যাচেই কেবল হাফ সেঞ্চুরি দেখা পান।
ওয়ানডে ম্যাচ দিয়েই সাঙ্গাকারা ও ক্লার্ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন। ২০০০ সালের জুলাইয়ে সাঙ্গা, তিন বছর পর জানুয়ারিতে ক্লার্ক। আগে-পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে আসলেও সময়ের পরিক্রমায় দুজন একই দিনে বিদায়ী ম্যাচে মাঠে নামছেন!
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
আরএম