মিরপুর থেকে: মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ১৯৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত শতকে জয়ের কাছে গিয়েও ৪ রানে হেরেছে রাজশাহী কিংস। শতক হাঁকিয়েও শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দলকে জেতাতে পারেননি সাব্বির (৬১ বলে ১২২ রান)।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলস নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে তোলে ১৯২ রান। এবারের আসরে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। জবাবে, ১৮৮ রানে থেমে যায় রাজশাহীর ইনিংস।
টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী কিংসের দলপতি ড্যারেন স্যামি। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দুপুর দুইটায় নামে বরিশাল-রাজশাহী। বরিশালের হয়ে ব্যাটিং শুরু করতে ক্রিজে আসেন দিলশান মুনাবেরা এবং ডেভিড মালান। শুরুর ওভারেই বিদায় নেন মুনাবেরা। ফরহাদ রেজার করা ইনিংসের তৃতীয় বলেই উমর আকমলের তালুবন্দি হন তিনি।
পঞ্চম ওভারে আবারো বরিশালের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানেন ফরহাদ রেজা। ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার ডেভিড মালানকে। উইকেটের পেছনে সোহানের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে তিনি ১১ বলে করেন ১৩ রান। দলীয় ২১ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।
এরপর জুটি গড়েন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শাহরিয়ার নাফিস এবং দলপতি মুশফিকুর রহিম। ম্যাচের ১৪তম ওভারে চতুর্থ বলে দলীয় শতক আসে বরিশালের। এই জুটি থেকে ৭১ বলে আসে ১১২ রান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে বিদায় নেন নাফিস। দুর্দান্ত খেলে ৪৪ বলে চারটি চার আর চারটি ছক্কায় তিনি করেন ৬৩ রান। উইকেটের পেছনে স্যামির বলে সোহানের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল। এবারের বিপিএলে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে দুটি অর্ধশতক হাঁকান নাফিস। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন বরিশালের এই ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে করেছিলেন ৫৫ রান।
নাফিস ফিরে গেলেও চলমান আসরে দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন মুশফিক। প্রথম ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে ৫০ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিক দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৩৩ রান। আর তৃতীয় ম্যাচে রাজশাহীর বোলারদের শাসন করে অপরাজিত থাকেন ৮১ রানে। তার ৫২ বলের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর ৪টি ছক্কার মার। শেষ দিকে মুশফিকের সঙ্গে উইকেটে থাকা থিসারা পেরেরা তিন ছক্কায় করেন ১১ বলে ২৪ রান। এ জুটি থেকে আসে ২৪ বলে ৫৯ রান।
১৯৩ রানের টার্গেটে রাজশাহীর হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন রকিবুল হাসান এবং মুমিনুল হক। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই বিদায় নেন রকিবুল। মনির হোসেনের বলে শাহরিয়ার নাফিসের তালুবন্দি হন রকিবুল। এরপর জুটি গড়েন সাব্বির-মুমিনুল। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আল আমিন ফেরান মুমিনুলকে। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী। মুমিনুল ১১ বলে ১২ রান করে থিসারা পেরেরার দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন। পরের বলেই উমর আকমলকে এলবির ফাঁদে ফেলেন আল আমিন।
এরপর জুটি গড়েন সাব্বির আর সামিত প্যাটেল। এই জুটি থেকে ৪০ বলে উঠে ৬৮ রান। ইনিংসের ১৩তম ওভারে আবু হায়দারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সামিত প্যাটেল। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় বিদায় নেওয়ার আগে প্যাটেল ১৫ বলে ১৫ রান করেন।
ক্রিজে থেকে বরিশালের বোলারদের স্বস্তিতে থাকতে দেননি সাব্বির রহমান। মাত্র ৫৩ বলেই নিজের প্রথম বিপিএল শতক তুলে নেন তিনি। ৯টি চার আর ৯টি বিশাল ছক্কায় ১২২ রান করে বিদায় নেন সাব্বির। ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে আল আমিন ফেরান সাব্বিরকে। ৮৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ৬১ বলে ইনিংসটি সাজান সাব্বির। দলীয় ১৫৯ রানে সাব্বিরের বিদায়ে রাজশাহী পঞ্চম উইকেট হারায়।
এরপর দলপতি ড্যারেন স্যামির দিকে তাকিয়ে ছিল রাজশাহী। কিন্তু, ইনিংসের ১৯তম ওভারে রায়াদ এমরিতের বলে বোল্ড হন স্যামি। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১৯ বলে ২৭ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রাজশাহীর দরকার হয় ৯ রান, হাতে ছিল চার উইকেট। শেষ ওভারে বরিশালের হয়ে বল করতে আসেন থিসারা পেরেরা। এই লঙ্কানের বলে মাত্র ৪ রান নিতে পারেন আবুল হাসান এবং নুরুল হাসান সোহান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ১৩ নভেম্বর ২০১৬
এমআরপি