চট্টগ্রাম থেকে: বিপিএলের ১৮তম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস। সাকিব আল হাসানের ঢাকাকে ৯ রানে হারিয়েছে খুলনা।
দুপুর একটায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ঢাকা ডায়নামাইটস-খুলনা টাইটানস। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা সাকিব আল হাসানের ঢাকার বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পয়েন্ট টেবিলের চারে থাকা খুলনার দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
খুলনা টাইটানস: ১৫৭/৫ (২০ ওভার)
ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৪৮ (১৯.১ ওভার)
ফল: খুলনা টাইটানস ৯ রানে জয়ী
আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে খুলনা টাইটানস ১৫৭ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে অর্ধশতক হাঁকান দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জবাবে, বিপাকে পড়া ঢাকার হয়ে সেকুজে প্রসন্ন ২২ বলে সাতটি ছক্কায় ৫৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি। ৫ বল বাকি থাকতে ১৪৮ রানে থেমে যায় ঢাকার ইনিংস।
খুলনার হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন আন্দ্রে ফ্লেচার এবং হাসানুজ্জামান। প্রথম ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন সাকিব। আর সে ওভারেই ওপেনার হাসানুজ্জামান রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। আরেক ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার বিদায় নেন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। সাঞ্জামুল ইসলামের বলে তুলে মারতে গিয়ে ফ্লেচার ব্যক্তিগত ২০ রান করে নাসির হোসেনের তালুবন্দি হন।
এরপর ইনিংসের নবম ওভারে বিদায় নেন শুভাগত হোম। খুলনার দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে আরও ৪৪ রান যোগ করেন শুভাগত। ব্রাভোর বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ২০ বল খেলে চারটি চারের সাহায্যে করেন ২৪ রান। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় খুলনা।
চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ে দলের রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন নিকোলাস পুরান আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এই জুটি স্কোরবোর্ডে আরও ২৯ রান যোগ করে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে নিকোলাস ব্যক্তিগত ১৬ রানে বিদায় নেন। ব্রাভোর বলে উইকেটের পেছনে সাঙ্গাকারার গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ৯৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় খুলনা।
১৯তম ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মোহাম্মদ শহীদের বলে ব্রাভোর হাতে ধরা পড়েন চারবার জীবন পাওয়া মাহমুদুল্লাহ। তাইবুরকে নিয়ে জুটি গড়ে স্কোবোর্ডে তিনি ৫৭ রান যোগ করেন। ৪৪ বলে চারটি চার আর চারটি ছক্কায় মাহমুদুল্লাহ করেন ৬২ রান। তাইবুর অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ২১ রান করে।
১৫৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন ঢাকা ডায়নামাইটসের দুই ওপেনার কুমার সাঙ্গাকারা ও মেহেদি মারুফ। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওভারের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় ঢাকা। দলীয় ১০ রানের মাথায় ওপেনার মেহেদি মারুফকে এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন কেভিন কুপার। চার রান যোগ হতেই ফেরেন আরেক ওপেনার সাঙ্গাকারা। ব্যক্তিগত ২ রান করে জুনায়েদ খানের বলে মাহমুদুল্লাহর ক্যাচে বিদায় নেন সাঙ্গা। আর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে নাসির হোসেনকে (৭) শফিউলের তালুবন্দি করেন কুপার। দলীয় ২২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ঢাকা।
দলীয় ৩০ রানের মাথায় ম্যাট কোলসকে বোল্ড করেন শফিউল ইসলাম। বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান। কিছুটা স্বপ্ন দেখাতে থাকেন সাকিব-মোসাদ্দেক জুটি। ইনিংসের ১০তম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিং আক্রমণে আসেন মোশাররফ রুবেল। এসেই সাকিবকে (৮) বোল্ড করেন তিনি। দলীয় ৬৮ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় ঢাকা। বিদায়ের আগে সাকিব ৩৮ রানের জুটি গড়েন মোসাদ্দেকের সঙ্গে।
ইনিংসের ১১তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভোকে বিদায় করেন তাইবুর রহমান। ব্যক্তিগত ৪ রান করে জুনায়েদ খানের তালুবন্দি হন ব্রাভো। দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা মোসাদ্দেককে ফিরিয়ে দেন মোশাররফ রুবেল। শুভাগত হোমের তালুবন্দি হওয়ার আগে মোসাদ্দেক ২৮ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন ৩৫ রান। দলীয় ৮৩ রানের মাথা সাত উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর জুটি গড়েন সেকুজে প্রসন্ন এবং সাঞ্জামুল ইসলাম। ১৮তম ওভারে সাঞ্জামুল ব্যক্তিগত ১২ রানে মোশাররফ রুবেলের শিকারে ফিরে গেলেও ব্যাট হাতে ঝড় থামাননি ১৮ বলে অর্ধশতকের দেখা পাওয়া সেকুজে প্রসন্ন।
ইনিংসের ১৯তম ওভারে রান আউট হন সোহরাওয়ার্দি শুভ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার হয় ১০ রান। বোলিংয়ে আসেন কেভিন কুপার। প্রথম বলেই বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রসন্ন। ১৪৮ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। প্রসন্ন ২২ বলে সাতটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৫৩ রান।
দিনের অপর ম্যাচে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় মাঠের লড়াইয়ে নামবে মাশরাফির কুমিল্লা আর ড্যারেন স্যামির রাজশাহী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ১৯ নভেম্বর ২০১৬
এমআরপি