ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

একজন ‘৩৬০ ডিগ্রি’ যোদ্ধার গল্প

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৮
একজন ‘৩৬০ ডিগ্রি’ যোদ্ধার গল্প এবি ডি ভিলিয়ার্স - ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট নয়, বিষাদটা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে। বুধবার বিকেল তখন ৫.২০ এর মতো। হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ঘোষণা। ‘আমি ক্লান্ত, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ছি।’ দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের এমন হঠাৎ ঘোষণা যেন হজম করতেই কষ্ট হচ্ছিলো ক্রিকেট সমর্থকদের।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপেই হয়তো শেষ দেখা যাবে, এমনটা অনুমেয়ই ছিলো কিন্তু এভাবে বিশ্বকাপের আগেই তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়টা যেন মেনে নেওয়া কঠিন। জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের কথা একাধিকবার বলা ৩৪ বছরের ডিভিলিয়ার্স খেললেন না সেই বিশ্বকাপই।

স্বপ্নটা চোখে নিয়েই চলে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দল থেকে।

গেলেন, কিন্তু গেলেন কী? ডি ভিলিয়ার্সের অবদান ভুলতে পারবে কি ক্রিকেট বিশ্ব? ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের রেকর্ড এবং পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে প্রোটিয়া ক্রিকেট তার কাছে চিরকৃতজ্ঞই থাকবে। এবির ঝুলিতে  দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে এক ইনিংসে অপরাজিত ২৭৮ রান করার রেকর্ড রয়েছে।  ওয়ানডেতে রয়েছে সবচেয়ে কম বলে (৩১ বল) সেঞ্চুরির রেকর্ড।

এবি ডি ভিলিয়ার্স - ছবি: সংগৃহীতএবির ব্যাট শুধু টেস্ট আর ওয়ানডেতেই কথা বলেনি। সমান তালে চলেছে সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও। টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে করেছেন ২৬.১২ গড়ে ১৬৭২ রান।

জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘ইএসপিএন’ কর্তৃক ঘোষিত সেরা ১০০ ক্রীড়াবিদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স।

২০০৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের মধ্য দিয়ে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় ডি ভিলিয়ার্সের। সাদা পোশাকের এই ফরম্যাটে ১১৪টি ম্যাচে ২২টি সেঞ্চুরি, ৪৬টি হাফসেঞ্চুরি ও ৫০.৬৬ গড়ে ৮ হাজার ৭৬৫ রানের মালিক তিনি।

পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইংলিশদের বিপক্ষে ডি ভিলিয়ার্সের ওয়ানডে অভিষেক হয়। এই ফরম্যাটেও কম যাননি তিনি। ৫০ ওভারে এই ফরম্যাটে ২২৮ ম্যাচ খেলে ২৫টি সেঞ্চুরি ও ৫৩টি ফিফটি সহ ৫৩.৫০ গড়ে ৯ হাজার ৫৭৭ রান করেছেন।

সবচেয়ে নবীনতম ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে ২০০৬ সালে অভিষেক হয় উইকেটরক্ষক ও ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানের। যেখানে ৭৮ ম্যাচে ১০টি হাফসেঞ্চুরি ও ১৩৫.১৬ স্ট্রাইকরেটে এক হাজার ৬৭২ রান করেছেন।

এবি ডি ভিলিয়ার্স - ছবি: সংগৃহীতক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ডি ভিলিয়ার্স ৪৬৩ ক্যাচ, ১৭ স্টাম্পিং (উইকেটরক্ষ থাকাকালীন) করেছেন। তার ব্যাট থেকে ৩২৮ ছক্কা ও ২০০৪ চারের মার এসেছে। গ্রায়েম স্মিথের পরবর্তী দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেরই অধিনায়ক ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স।

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের হয়ে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় করা এই ক্রিকেটার এক ভিডিও বার্তায় নিজের বিদায় ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১১৪ টেস্ট, ২২৮ ওয়ানডে ও ৭৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পর আমার মনে হয়েছে, এখন অন্যদের সুযোগ দেওয়া উচিত। সত্যি বলতে আমি ক্লান্ত। ’।

তার ক্যারিয়ারের হিসেবে তিনি ক্লান্ত হতেই পারেন। কিন্তু তাই বলে বিশ্বকাপের আগেই এমন বিদায় মেনে নেওয়া কঠিন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৮
এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।