ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

'সাকিব-তামিম ছাড়া জিম্বাবুয়েও চ্যালেঞ্জ'

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
'সাকিব-তামিম ছাড়া জিম্বাবুয়েও চ্যালেঞ্জ' হাবিবুল বাসার সুমন। ছবি: শোয়েব মিথুন

ঢাকা: একটা সময় ছিলো যখন জিম্বাবুয়ের সঙ্গে কোন রকম জিততে পারলেই বেজায় খুশি হতো বাংলাদেশ। নেইল জনসন, অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিকদের হারাতে পারলে তখন পুরো দেশ উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে উঠতো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই জিম্বাবুয়ের ওপরেই এখন সাকিব-তামিমের ব্যাটে প্রভাব বিস্তার করে জিতে চলছে বাংলাদেশ। 

বিপত্তিটা এখানেই। কেননা ইনজুরি বাগরায় ২১ অক্টোবর থেকে ‍দলটির বিপক্ষে শুরু হওয়া হোম সিরিজে এই দুই টাইগার পারফর্মার খেলতে পারছেন না।

দলের এই দুই শক্তি ছাড়া জিম্বাবুয়ের মতো দলটিকেও টাইগার নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনের  কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে!

শনিবার (১৩ অক্টোবর ) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া লাউঞ্জে সংবাদ মাধ্যমকে হাবিবুল বাসার একথা বলেন। কথা বলেন রোডিশিয়ানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজকে সামনে রেখে ঘোষিত স্কোয়াড নিয়েও।  

৩০ বছর বয়সী ফজলে রাব্বিকে জাতীয় দলে কেনো নেয়া হলো? মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত কেন বাদ পড়লেন? আর কেনইবা পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফ উদ্দীনকে দলে ফেরানো হলো? এমন সব প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
 
বাংলানিউজ পাঠকদের জন্য মূল অংশটুকু তুলে ধরা হলো।  
 
প্রশ্ন: ওয়ানডে দল থেকে কেমন প্রত্যাশা করছেন?
 
হাবিবুল বাশার: আমার মনে হয় এই সিরিজটা বেশ রোমাঞ্চকর হবে। কাল জিম্বাবুয়ের ম্যাচ দেখছিলাম। দল হিসেবে তারা এখন অনেক ভাল। আমাদের জন্য এই সিরিজটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ আমাদের দুইজন বড় পারফর্মার খেলতে পারছেন না। পারফর্মেন্সের সাথে তাদের অভিজ্ঞতার অভাবটাও অনুভব করব এই সিরিজে। এটা আমাদের নতুনদের জন্য একটা সুযোগ। সামনে বিশ্বকাপ আছে। আমাদের কিছু প্লেয়ারকে দেখার বিষয় ছিল। তবে সব মিলিয়ে আমি আশাবাদি।  

প্রশ্ন: ফজলে রাব্বি দলে কেন?
 
হাবিবুল বাশার: ওর ক্যারিয়ারটা কিন্তু বেশ ইন্টারেস্টিং। সে আমাদের এইচপি(হাই পারফরম্যান্স) স্কোয়াডে ছিল পাঁচ ছয় বছর আগে। তখন কিন্তু খুবই প্রমিসিং স্টার ছিল। তারপর অফফর্মে চলে যায়। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানে ছিল। কিন্তু শেষ তিন বছর ধরে সে অনেক বদলে গেছে। ওর খেলায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। সে এখন অনেক পরিনত।

প্রশ্ন: রাব্বির বিশেষত্ব কী? 

হাবিবুল বাশার: আমি তাকে অনেক আগে থেকেই দেখেছি। ওর ব্যাটিংটা এখন অনেক বদলে গেছে। আগে খুব আগ্রাসী ব্যাটিং করত। কিন্তু এখন আমি দেখছি (আয়ারল্যান্ড সিরিজ), সে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাটিং করে। প্রান্ত বদল করে খেলে। একই সাথে যখন দরকার তখন বড় শট খেলার সামর্থ্য রাখে। প্লাস সে একজন ভাল ফিল্ডার। সাথে স্পিন বল করতে পারে। সব মিলিয়ে আমাদের জন্য প্যাকেজ বলা চলে।
 
প্রশ্ন: মোসাদ্দেক ও মুমিনুলের বাদ পড়ার কারণ?

হাবিবুল বাশার: মুমিনুলের বাদ পড়া একটু দুর্ভাগ্য বলব। তার জন্য আমার সহানুভূতি। আমি মনে করি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ার কখনই শেষ হয়ে যায় নি। আমার মনে হয় ওয়ানডেতে তার দেয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আমাদের কিছু ক্রিকেটারকে দেখতে হত। এটা আমাদের সুযোগ, কিছু খেলোয়াড় দেখে নেয়া। যেহেতু সামনে আমাদের অনেকগুলো সিরিজ আছে। জিম্বাবুয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড (নিউজিল্যান্ড) সিরিজের পর বিশ্বকাপ আছে। আমাদের সেরা কম্বিনেশন ও অভিজ্ঞতার দিকে নজর নিয়ে দল সাজাতে হয়েছে। মুমিনুল এশিয়া কাপে যেই দুটি ম্যাচ খেলল, আমি বলব দুটি ইনিংস একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যথেষ্ট না।

আর মোসাদ্দেকের ফর্ম নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নই। যেখানে সে ব্যাট করছে, সাত নম্বরে, সেখানে সে কার্যকরী ব্যাটিং করতে পারছে না। তাকে ব্রেক দেয়া হচ্ছে। আশা করি সে ঘরোয়া ক্রিকেটে রানে ফিরবে। সাম্প্রতিক সময়ে ওর ফর্মটা ভাল যাচ্ছে না।  

প্রশ্ন: সাইফউদ্দিন কেন, সৌম্য-আরিফুল কেন নয়?

হাবিবুল বাশার: দেখুন, ৭ নম্বরে আমরা একজন বোলিং অলরাউন্ডারের খোঁজে ছিলাম। আপনি যেই দুজনের নাম নিয়েছে তারা কিন্তু মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তাদের কাছ থেকে আমরা প্রথমে ব্যাটিং ও পরে বোলিং আশা করি। ৭ নম্বরে আমাদের আসলে বোলিং অলরাউন্ডার দরকার, যে মূলত বোলিং করে থাকেন, সাথে ব্যাটিংটা করতে পারবেন। এই জন্য আমরা সাইফউদ্দিনকে এই সিরিজে নিয়েছি। আমরা এখন পর্যন্ত ৭ নম্বরে যাকেই খেলিয়েছি, সবাই মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার ছিল। এবার আমরা একটু পরিবর্তন করতে যাচ্ছি।  
সৌম্য কিন্তু বোলিং খুব একটা খারাপ করে না। যাই একটু বোলিং করে, যথেষ্ট ভাল বোলিং করে থাকে। কিন্তু সে একজন জেনুইন বোলার নয়। আরিফুল হক কিন্তু এসেছিল বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে।

প্রশ্ন: ৩০ বছর বয়সে দলে সুযোগ পাওয়ার নতুন প্রথা নিয়ে যদি বলতেন (ফজলে রাব্বি)
 
হাবিবুল বাশার: দলে অভিজ্ঞতা ও নতুনদের একটা মিশ্রণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আমাদের দুইজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নেই, তাই ওই মিশ্রণটা খুব দরকার ছিল। আর আমাদের দেশে এখন কিন্তু একটু একটু পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের যারা সিনিয়র আছে তাদের খেলার সুযোগটা কম থাকত। আর এখন আমরা প্রচুর প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলছি, পারফর্মও করছে তারা। ফিটনেসের মান অনেক বেড়েছে। আগে ৩০ বছরের পর একটা ছেলের ফিটনেস ধরে রাখাও কঠিন ছিল। সেটা থেকে এখন বেরিয়ে এসেছি।

প্রশ্ন: রাব্বির ভুমিকা কি হবে?

হাবিবুল বাশার: ও শুরু করেছিল একজন ওপেনার হিসেবে। সেখান থেকে ৩ নম্বরে ব্যাট করেছে। এখন সে মিডেল অর্ডারে, পাচ-ছয়ে ব্যাট করছে। ‘এ’ দলের হয়ে সফর গুলোতে পাঁচ ছয়ে ব্যাট করেছে সে কিন্তু তিন নম্বরে সে ব্যাট করতে পারে। ওর জন্য তিন থেকে পাঁচ ছয়ের মধ্যে ব্যাট করা আদর্শ হবে। মূলত মিডেল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
এইচএল/এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।