আফগানিস্তানের বোলাররা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের বিধ্বংসী হতে দিলেন না তত একটা। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমেও আফগানিস্তানকে পেল দারুণ শুরু।
শুক্রবার অ্যাডিলেইড ওভালে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার খেললেও ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানিস্তান।
গ্রুপ 'ওয়ান' থেকে সবার আগে সেমি নিশ্চিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। ৫ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা কিউইদের নেট রানরেটও (+২.১১৩) সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে সমান পয়েন্ট নিয়েও দুইয়ে থাকা অজিদের নেট রানরেট (-০.১৭৩) অবশ্য ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট পাওয়া ইংল্যান্ডের (+০.৫৪৭) চেয়ে কম। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলেই সেমিতে উঠে যাবে ইংলিশরা। আর গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়া মাঠে নেমেছে নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে ছাড়াই। অজি ওপেনার ফিটনেসের সমস্যায় এই ম্যাচে মাঠে নামতে পারেননি। তার জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন আরেক ওপেনার ক্যামেরন গ্রিন। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। মাত্র ২ বল মোকাবিলা করে মাত্র ৩ রান করে আফগান পেসার ফজলহক ফারুকির শিকার হয়ে ফিরেছেন তিনি।
দলীয় ২২ রানে প্রথম উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায়। এই বিশ্বকাপে এখনও সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারা ওয়ার্নার আজ ১৮ বলে ২৫ রান করে নাভিন-উল-হকের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। এরপর দ্রুত ফেরেন চারে নামা স্টিভেন স্মিথ (৪)। তার বিদায়ের পর মার্কাস স্টইনিসকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মার্শ।
অস্ট্রেলিয়াকে ৮৬ রানে রেখে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ড্রেসিংরুমে ফেরেন মার্শ। তবে এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩০ বলে ৪০ রানের ঝলমলে ইনিংস। এরপর রশিদ খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টইনিস (২৫)। ততক্ষণে অবশ্য অজিদের ১৬তম ওভারেই স্কোরবোর্ডে ১৩৯ রান উঠে গেছে। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল রীতিমত আফগান বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন।
ম্যাক্সওয়েলকে যোগ্য সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন ম্যাথু ওয়েড (৬), প্যাট কামিন্স (০) ও কেন রিচার্ডসন (১)। এর মধ্যে রিচার্ডসন ফেরেন রানআউট হয়ে। তবে বিপর্যয়ের মধ্যেও একপ্রান্তে অটল থেকে রানের চাকা সচল রাখেন ম্যাক্সওয়েল। ২৯ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ৫৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ইনিংসটি ৬ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো।
বল হাতে আফগানিস্তানের নাভিন-উল-হক ৩টি, ফজলহক ফারুকি ২টি এবং মুজিব-উর-রহমান ও রশিদ খান ১টি করে উইকেট নেন।
অজিদের জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভার থেকেই ১০ রান তুলে আফগানিস্তান। যদিও তৃতীয় ওভারেই তাদের হারাতে হয় প্রথম উইকেট। ৭ বল খেলে ২ রান করে জশ হ্যাজলউডের বলে প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন উদ্বোধনী ব্যাটার উসমান গনি। আরেক ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ অবশ্য ছিলেন বিধ্বংসী। এই ব্যাটার ২ চার ও সমান ছক্কায় ১৭ বলে ৩০ রান করে ঝাই রিচার্ডসনের শিকার হন।
আফগানদের হয়ে ঝড় তুলেন ইব্রাহিম জাদরান ও গুলবাদিন নাইবও। তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারে গিয়ে ছন্দপতন হয় আফগানিস্তানের। অ্যাডাম জাম্পার ওভারে চার বলের মধ্যে তারা হারায় তিন উইকেট। প্রথমে ২৩ বলে ৩৯ রান করে রান আউট হন গুলবাদিন নাইব। এরপর এক বল বিরতি দিয়ে ইব্রাহিম ও নাজিবউল্লাহ জাদরানকে ফেরান জাম্পা। যথাক্রমে তারা করেন ২৬ ও শূন্য রান।
আফগানদের জয়ের সম্ভাবনা সেখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ঘুরে দাঁড়ান রশিদ খান। শেষদিকে চার-ছক্কার ঝড়বৃষ্টি বইয়ে দিয়েও অবশ্য জয় এনে দিতে পারেননি তিনি। ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ২৩ বলে ৪৮ রান করেন রশিদ।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২২
এমএইচবি