ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মিতু হত্যা: পলাতক দুই আসামিকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির আদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২২
মিতু হত্যা: পলাতক দুই আসামিকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির আদেশ মাহমুদা খানম মিতু

চট্টগ্রাম: সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় পলাতক দুই আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত এ আদেশ দেন।

পলাতক দুই আসামি হলেন- মো.কামরুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ মুসা ও মো. খাইরুল ইসলাম প্রকাশ কালু।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল হাসান।

তিনি বলেন, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় পলাতক মো. কামরুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ মুসা ও মো. খাইরুল ইসলাম প্রকাশ কালু নামে দুই আসামির ঠিকানায় গিয়ে তাঁদের খুঁজে পায়নি পুলিশ। মামলা শুরু করার আগে দুই আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই অভিযোগপত্র গত ১০ অক্টোবর গ্রহণ করেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার পলাতক আসামি মো.কামরুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ মুসা ও মো. খাইরুল ইসলাম প্রকাশ কালুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে বাবুল আক্তার, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে। এহতেশামুল জামিনে রয়েছে।  

২০১৬ সালের ৫ জুন জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ জুন জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে স্বামী বাবুল আকতার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পর নগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের ভার পায় পিবিআই। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে এনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আবু নসুর গুন্নু, শাহ জামান ওরফে রবিন, সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু, শাহজাহান, মো. আনোয়ার ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিমকে আটক করেছিল পুলিশ। হত্যায় অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে আটক হন এহেতেশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনির। তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়, যেটি মিতু হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছিল।  

গ্রেফতার আনোয়ার ও মোতালেব মিতু হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে মিতু হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে নাম আসে বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে পরিচিত মো. মূছার। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য ২০২১ সালের ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়।  

হত্যাকাণ্ডে বাবুল জড়িত বলে সন্দেহ তৈরি হলে একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরের পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া। এ মামলায় ২০২১ সালের ১২ মে বাবুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে নিজের করা মামলায়ও ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি বাবুলকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। গত ৬ মার্চ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২২ 
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।