ঢাকা, সোমবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে আরও দুটি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৩
চট্টগ্রামে আরও দুটি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ ...

চট্টগ্রাম: কর্মজীবী নারীরা নিরাপদ ও নিশ্চিন্তে কাজ করার সুবিধার্থে সরকার ১৯৯১ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করে। নগরের হামজারবাগে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র-চট্টগ্রাম নামে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার আছে, যেটি কর্মজীবী নারীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি ডে-কেয়ার সেন্টার থাকলেও মাসিক ফি সহ আনুষঙ্গিক খরচ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না দরিদ্রদের।

এ অবস্থায় কর্মজীবী মায়েদের শিশুর জন্য এবার জেলা পর্যায়ে ৬০টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকা এবং কর্ণফুলী উপজেলায় একটি করে ডে কেয়ার স্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এর মাধ্যমে কর্মজীবী মায়েদের, গার্মেন্টস ও কারখানায় নারী শ্রমিকের ছোট শিশুদের (৬ মাস থেকে ৬ বছর) নিরাপদ দিবাকালীন সেবা দেওয়া হবে। প্রতিটি ডে-কেয়ারে ৫০ থেকে ৮০টি শিশু রাখা হবে। ডে কেয়ারে থাকবে শিশুর প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ। প্রত্যেক শিশুর জন্য ডে-কেয়ার সেন্টারে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। এখানে যেসব শিশু থাকবে তাদের ইপিআই এর ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হবে।

এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প সম্প্রতি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং জাতীয় মহিলা সংস্থা আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ডে-কেয়ার কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে ভাড়া বাড়িতে। তবে সরকারি/বেসরকারি দপ্তরে জায়গা পাওয়া গেলে  সেখানে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। প্রতি বছর এ প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার শিশুকে দিবাকালীন সেবা দেওয়া হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমানে কর্মরত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মজীবী মায়েদের ডে-কেয়ার সুবিধা না দিলে নারী অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেদের ভূমিকা রাখতে পারে না। ডে কেয়ার সেন্টারের স্থাপনের মাধ্যমে কর্মরত নারীদের কর্মস্থলে মনোযোগ নিশ্চিত হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার হার বৃদ্ধি পাবে, যা নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

নগরের হামজারবাগে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত ডে-কেয়ার সেন্টারে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত ৬০ জন শিশু রাখা যায়। এজন্য মাসিক ১০০ টাকা ফি নেওয়া হয়।  

এছাড়া কারিতাস মমতা প্রকল্পের উদ্যোগে বাকলিয়ার তুলাতলী এলাকায় ডে-কেয়ার সেন্টার, নারী শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য মুরাদপুরের মোহাম্মদপুরে ডে-কেয়ার সেন্টার, অক্সিজেনের চন্দ্রনগর ও হালিশহরে তিনটি ডে-কেয়ার সেন্টার, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা এ ব্লকে ডে-কেয়ার সেন্টার, গোলপাহাড় মোড়ে ‘ফ্লোরেট ডে-কেয়ার উইথ প্রিস্কুলিং’ নামে একটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে।

উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পুরোনো কার্যালয়ে ২০২২ সালে চালু হয় ডে-কেয়ার সেন্টার। এতে সহযোগিতা করে আল্লামা আবুল খায়ের ফাউন্ডেশন। উদ্যোক্তা ছিলেন সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জুবায়ের আহমেদ। তবে সেখানে ১০ জনের বেশি শিশু রাখার সুযোগ নেই।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ডে-কেয়ার সেন্টারে ডে-কেয়ার অফিসার, শিক্ষিকা, স্বাস্থ্য শিক্ষিকা, আয়া, কুক, সহকারী কুক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গার্ড ও অফিস সহায়ক থাকবে। ডে কেয়ারে শিশুদের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে মানসিক বিকাশে খেলাধুলার ব্যবস্থা ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হবে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেন, নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার স্থাপন করা হলে তাদের চাকরিতে ব্যাঘাত ঘটবে না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনে এগিয়ে এলে আমরা অনুমোদন দেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৩ 
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।