ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২ বছর ধরে বন্ধ চমেক হাসপাতালের ক্যাথ ল্যাব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
২ বছর ধরে বন্ধ চমেক হাসপাতালের ক্যাথ ল্যাব ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে স্থাপিত একটি ক্যাথ ল্যাব (ক্যাথেটারাইজেশন ল্যাবরেটরি) । ফলে চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

সময় মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় হৃদরোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের অনেক সময় অবস্থার অবনতিও ঘটে।  

চিকিৎসকরা বলছেন, ক্যাথ ল্যাবটি চালু হলে রোগীদের যেমন ভোগান্তি কমবে, তেমনি আরও অধিক সংখ্যাক রোগীকে সেবা দেওয়া যাবে।

 

জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে দুটি ক্যাথ ল্যাব রয়েছে। এর মধ্যে একটি সচল থাকলেও অন্যটি ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এনিয়ে বার বার তাগাদা দিয়েও মিলছে না কোনো সমাধান। ফলে এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টিডের মতো জটিল অপারেশনগুলো করাতে রোগীদের দীর্ঘ সময় লাগছে।  

সাধারণত চট্টগ্রামে বেসরকারিভাবে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ কম হওয়ায় রোগীর চাপ থাকে অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় বেশি। তবে কয়েক বছর ধরে ক্যাথ ল্যাবটি বন্ধ থাকায় সেবা পাচ্ছে না রোগীরা।  

হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট ক্যাথ ল্যাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়। কিন্তু  ৩ বছর না যেতেই বিকল হয়ে পরে যন্ত্রপাতি। একদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু করা হলে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আবারও বিকল হয় ক্যাথ ল্যাবে স্থাপিত মেশিনটি।  প্রায় ২ মাস ২৪ দিন বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য চালু করা হয়। পরবর্তীতে সাত মাস সচল থাকলেও ২০২১ সালের ৩১ জুলাই আবারও বন্ধ হয় ল্যাবটি। একদিন পর চালু হলেও দুই মাসের মাথায় আবারও বন্ধ হয়ে যায় ক্যাথ ল্যাবের সেবা। এরপর থেকে গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় রয়েছে ল্যাবটি।  

বর্তমানে চমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী ভর্তি হয়। গত ২০২২-২৩ বর্ষে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন মোট ১৯ হাজার ২৯৭ জন। যার মধ্যে ১ হাজার ৯৭৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে ২০ হাজার ৫২৭ জনের ইসিজি, ৭ হাজার ৮৫ জনের ইকো, ২ হাজার ৪৭৩ জনের এনজিওগ্রাম এবং ৭০৩ জনের হার্টে রিং লাগানো হয়েছে। এর আগের বছর ২০২১-২২ ভর্তি হয়েছিলেন ১৮ হাজার ২১০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭৩০ জনের। ওই বছরে ক্যাথল্যাবে ইসিজি করোনা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৪০ জনের, ইকো ৪ হাজার ৯০৪ জনের, ২ হাজার ৩৮৬ জনের এনজিওগ্রাম এবং ২২০ জনের হার্টে রিং লাগানো হয়েছে।  

চমেক হাসপাতলের হৃদরোগ বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ডা. আশীষ দে বাংলানিউজকে বলেন, চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে হৃদরোগীর হার যেহেতু বাড়ছে, তাই সক্ষমতা আরও বাড়ানো উচিত। আমাদের দুটি ক্যাথ ল্যাবের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এ বিষয়ে আমরা চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি এবং মৌখিকভাবে একাধিকবার জানিয়েছি। একটি ক্যাথ ল্যাব মেশিন দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। আবার এ মেশিনটিতে মাঝে মাঝে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিচ্ছে।

চট্টগ্রাম হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম আহসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ক্যাথ ল্যাবটি চালুর বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে ল্যাবটি চালুর ব্যাপারে কাজ শুরু করা যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।