ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এইচএসসি: চট্টগ্রামে পাসের হার কমার কারণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২৩
এইচএসসি: চট্টগ্রামে পাসের হার কমার কারণ

চট্টগ্রাম: এবার গত তিন বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয়ই কমেছে। বন্যা পরিস্থিতি ও তিন বছর করোনার কারণে এ ফলাফল কমেছে বলে জানান শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলেন, করোনার তিন বছরের মধ্যে এক বছর পরীক্ষা হয়নি, আবার শেষ দুই বছরেও পুরো সিলেবাসে পরীক্ষা হয়নি। এ কারণে আগের বছরগুলোতে ফল ভালো হয়েছিল।

এবার পরিপূর্ণ সিলেবাসে সবগুলো পরীক্ষা হয়েছে। তাই গতবছরগুলোর তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ১০ দিন পেছানো হয়েছিল। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনি অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্রও বন্যায় ভেসে গেছে। এসব কিছু বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে।  

জানা গেছে, ২০২২ সালে যেখানে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিলেন সেখানে এবার ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ কমেছে। অর্থাৎ এবার পাস করেছেন ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকে। আগের বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৬৭০ জন পরীক্ষার্থী, সেখানে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৩৩৯ জন।

চট্টগ্রাম জেলায় এবার পাসের হার ৬৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ, যা আগের বছরে ছিল ৭৬ দশমিক ১২ শতাংশ। অন্যদিকে বান্দরবানে এবার পাসের হার মাত্র ৬৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা আগের বছরে ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি, ৮১ দশমিক ২০ শতাংশ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১০ দিন পেছানো হয়েছিল। পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী এই তিন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ১৭ আগস্টের পরিবর্তে ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়।

বন্যার সময় ঘরবাড়ি পানিবন্দী থাকা, বিদ্যুৎ না থাকা এবং বইপত্র নষ্ট হওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। শিক্ষক আর অভিভাবকেরও ছিলেন দুশ্চিন্তায়। শুধু তাই নয়, বন্যার কারণে বান্দরবানে ট্রেজারি অফিসও দুদিন পানিবন্দী ছিল। এ কারণে ৮০ শতাংশ প্রশ্নই নষ্ট হয়ে যায়। পরীক্ষা পেছানোর কারণে দ্রুত অন্যান্য জায়গা থেকে প্রশ্নপত্র সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।

বোর্ডের সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথ বাংলানিউজকে বলেন, বন্যায় চট্টগ্রাম জেলার একাংশ ও বান্দরবান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা জানতে পারি ঘরে পানি ঢোকায় অনেক শিক্ষার্থীকে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকতে হয়েছে। তাদের বই পত্রসহ জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছিল, পরীক্ষা পেছাতে। আমরা বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানাই। পরে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরীক্ষা ১০ দিন পেছানো হয়।  

তিনি আরও বলেন, এতে যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি সেসব এলাকার শিক্ষার্থীরা লাভবান হয়েছে। তবে যেহেতু বইপত্র নষ্ট হয়ে যায়, সে কারণে পরীক্ষা পেছানোর সুবিধাটা হয়তো তেমন একটা নিতে পারেনি শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আগের তিন বছরে করোনার কারণে এক বছর পরীক্ষা হয়নি, আবার শেষ দুই বছরেও পুরো সিলেবাসে পরীক্ষা হয়নি। এ কারণে আগের বছরগুলোতে ফল ভালো হয়েছিল। এবার পরিপূর্ণ সিলেবাসে সবগুলো পরীক্ষা হয়েছে। সেদিকে হিসাব করলে ২০১৯ সালের পরীক্ষার তুলনায় এবার পাসের হার বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।