ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

থানায় ‘মানসিক নির্যাতন’, তরুণের আত্মহত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
থানায় ‘মানসিক নির্যাতন’, তরুণের আত্মহত্যা ...

চট্টগ্রাম: এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মিনহাজুল ইসলাম রাফি’র (২০)। ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে মা-বাবার সঙ্গে থানায় ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ।

সেখানে তাদের মানসিক নির্যাতন করা হয়। অপমান সইতে না পেরে সেখান থেকে ফিরে বাসায় আত্মহত্যা করেছে ওই তরুণ।

 
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর লালখান বাজার টাংকির পাহাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাফি ওই এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. মামুনের ছেলে।  

মা রানু বেগমের অভিযোগ, বুধবার কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরমান হোসেন তাদের ফোন করে থানায় যেতে বলেন। সন্ধ্যায় থানায় যাওয়ার পর অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। একপর্যায়ে রাফি’র মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয় এবং দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় রাফিকে গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।

রানু বেগম বলেন, ‘আমি আর ছেলের বাবা আধাঘণ্টা ওসি’র (তদন্ত) পা ধরে অনুরোধ করেছি। পুলিশ দুই লাখ টাকা দাবি করে। আমাদের সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা আছে জানালে তিনি তার কক্ষের বাথরুমে রেখে আসতে বলেন। সেখানে টাকা রেখে আসার পর আমাদের ছেড়ে দেয়। বাকি টাকা ২৪ তারিখের মধ্যে দিতে বলেছে’।

কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরমান হোসেন বলেন, ৯ ডিসেম্বর এক তরুণী রাফির বিরুদ্ধে জিডি করেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে জিডি তদন্তের জন্য রাফিকে মা-বাবা সহ ডেকে আনা হয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য তার মোবাইল জব্দ করা হয়। তার মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করেছে। আমি বলেছি, আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে লাভ নেই। আপনাদের ছেলে পুলিশের কাছে দোষ করেনি, ক্ষমা চাইলে ছেলের মা-বাবার কাছে চান’।

তবে দুই লাখ টাকা দাবি ও পাঁচ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মিথ্যা কথা’।  

ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার এক তরুণী জিডিতে অভিযোগ করেন, রাফি’র সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করেছেন। এ সময় রাফি তার সঙ্গে ছবি তুলেছে। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি ওই তরুণীর পরিবার জেনে যাওয়ায় মা-বাবা রাফি’র সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিষেধ করেন। তরুণী বিষয়টি রাফিকে জানান এবং তার মোবাইলে থাকা ছবিগুলো ডিলিট করে দিতে বলেন। রাফি তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ছাড়া তার বাবাকে ফোন করে হুমকি দেন।

রাফির বোনের জামাই মো. কালাম বলেন, তারা থানা থেকে বাড়ি ফিরে আমার বাসায় আসেন। থানায় কি হয়েছে- তারা তা জানিয়েছিলেন। এরমধ্যে আমার এক বন্ধু ফোন করে জানান, রাফি আত্মহত্যা করেছে। ছাদের বিমের সঙ্গে মাফলার পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।  

খুলশী থানার এসআই জামাল উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।