ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিচারকের বাসা ও অফিসের নিরাপত্তা জোরদার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৪
বিচারকের বাসা ও অফিসের নিরাপত্তা জোরদার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচারক চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের সরকারী বাসভবন ও অফিসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম আদালতের সার্বিক নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।



আগামী ৩০ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণার সময় নির্ধারিত আছে। রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতার আশংকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতা ঠেকানোর প্রস্তুতি হিসেবে বিচারকের বাসায় এবং আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল থাকবে। ’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে রোববার থেকে এক প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুরো আদালত ভবনে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে।

এছাড়া নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় মহানগর দায়রা জজের বাসভবনের সামনে পালাক্রমে দিনরাত সার্বক্ষণিক টহলের ব্যবস্থা রাখার জন্য পাঁচলাইশ থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রোববার থেকে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে।

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, বিচারকের জন্য গানম্যানসহ প্রাপ্য নিরাপত্তা তো আছেই। এর বাইরে থানা পুলিশের মাধ্যমে তার বাসায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে থাকবে গোয়েন্দা পুলিশের টিমও।

গত ১৩ জানুয়ারি দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ওইদিনই বিচারক আগামী ৩০ জানুয়ারি রায় দেয়ার ঘোষণা দেন।

পরদিন ১৪ জানুয়ারি বিচারকের বাসার সামনে বাগানে পেট্রল বোমা সদৃশ বস্তু পাওয়া যায়। ওই বস্তুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে লেখােএকটি চিঠিও উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ১০ নভেম্বর বিচারকের বাসার সামনে সীমানা প্রাচীরের ভেতর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ বলেন, ‘বিচারকের বাসার সামনে দু’দফা নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তা জোরদারের প্রসঙ্গটি এসেছে। তবে আমরা এখনও পুলিশের কোন অফিস আদেশ পাইনি। তবে মামলার রায়কে ঘিরে রোববার থেকে আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ’

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আসামি হিসেবে আছেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ দু’টি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তারা।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) জেটিঘাটে দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি খালাসের সময় ধরা পড়ে। এমভি শাহ আমান ও এমভি খাজার দান নামে দু’টি ফিশিং ট্রলার থেকে অস্ত্রগুলো খালাসের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে সেগুলো আটক করে।

এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানার তৎকালীন ওসি আহাদুর রহমান বাদি হয়ে অস্ত্র আইনের ১৯ (ক) ধারায় ও চোরাচালানের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ধারায় পৃথক দু’টি মামলা মামলা দায়ের করেন।

এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় ঘাট শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, ট্রলারের সারেং, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ৪৩ জনকে আসামী করা হয়। চোরাচালান মামলায় আসামী করা হয় ৪৫ জনকে।

মামলা দু’টির সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তৎকালীন অতিরিক্ত মহানগর পিপি হুমায়ন কবির রাসেলের আবেদনে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন আদালত।

প্রায় সাড়ে তিন বছর অধিকতর তদন্তের পর ২০১১ সালের ২৬ জুন নতুনভাবে আরও ১১ আসামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের তৎকালীন এএসপি মো.মনিরুজ্জামান।

এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯,২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।