ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আত্মসমর্পণের পর কারাগারে ইউসুফ আলী মৃধা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৪
আত্মসমর্পণের পর কারাগারে ইউসুফ আলী মৃধা

চট্টগ্রাম: রেলওয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে পলাতক থাকা ইউসুফ আলী মৃধা আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর ‍নির্দেশ দিয়েছেন।



সোমবার মৃধা চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


দুর্নীতি দমন কমিশনের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, রেলওয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগে দুর্নীতির পাঁচটি মামলায় ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। এসব মামলায় আজ (সোমবার) তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

জামিন শুনানিতে অংশ নিয়ে মৃধার আইনজীবী ছানোয়ার হোসেন লাবলু বলেন, নিয়োগের জন্য ১০ সদস্যের একটি সিলেকশন কমিটি হয়েছিল। ওই কমিটিতে জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ছিলেন না। তার দায়িত্ব ছিল শুধু চূড়ান্তভাবে মনোনীত হওয়ার পর নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করা। নিয়োগ পরীক্ষার খাতায় ঘষামাঝা করলে, টেম্পারিং করলে সেটি করেছেন সিলেকশন কমিটির সদস্যরাই। অথচ ওই কমিটির ৮ জনকেই এ মামলায় আসামী কিংবা সাক্ষী করা হয়নি।

জবাবে দুদকের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ বলেন, ইউসুফ আলী মৃধা ছিলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সুপার অথরিটি। তার অজ্ঞাতসারে কেউ ঘষামাঝা করে প্রার্থীকে চাকুরি দেবে সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর মৃধা যদি কিছুই না জানতেন তাহলে পালিয়ে গেলেন কেন ? তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কেন তিনি সশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য দিলেন না ? আসলে এসব ঘটনা উনার হস্তক্ষেপে উনার নিয়ন্ত্রণে থাকা আসামীরা করেছেন।

এরপর আদালত মৃধার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে ‍কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বস্তাভর্তি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় আলোচিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে এবং ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৩টি মামলা দায়ের হয়।

এর মধ্যে পাঁচটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলাগুলো হলো-ফুয়েল চেকার, সহকারী কেমিস্ট, টুল কিপার, টিকিট ইস্যুয়ার ও ট্রেন নাম্বার চেকার পদে নিয়োগে দুর্নীতর মামলা।

এর মধ্যে ফুয়েল চেকার পদের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় মৃধার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। ওই পদে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া দু’প্রার্থীকে গত রোববার কারাগারে পাঠান আদালত।

এছাড়া সহকারী কেমিস্ট পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য অপেক্ষমাণ আছে।

বাকি তিনটি মামলার অভিযোগপত্র এখনও আদালত আমলে নেননি।

এছাড়া ১৩টি মামলার মধ্যে বাকি ৮টি মামলা এখনও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তাধীন আছে।

প্রসঙ্গত ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল সাবেক রেলওয়ে মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ফারুকের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জওয়ানরা। এ সময় গাড়িতে অভিযুক্ত ওই দু’জন ছাড়াও রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও ছিলেন। সে রাতে ফারুকের গাড়ি চালক আলী আজম বিজিবি দফতরে টাকাভর্তি গাড়িটি ঢুকিয়ে দেন। ঘটনার পরদিন থেকে আলী আজম ‘রহস্যজনকভাবে’ নিখোঁজ আছেন।

পরে ওই ঘটনার জেরে রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়েন সুরঞ্জিত। বরখাস্ত হন ফারুক এবং সাময়িক বরখাস্ত হন বহুল আলোচিত মৃধা ও এনামুল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।