ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চেক প্রতারণা

নূরজাহান গ্রুপের জহিরের বিচার শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৪
নূরজাহান গ্রুপের জহিরের বিচার শুরু

চট্টগ্রাম: সাড়ে ২৩ কোটি টাকার চেক প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান নূরজাহান গ্রুপের দু’কর্ণধার জহির আহমেদ ও টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি আদালতে বিচার শুরু হয়েছে।

সোমবার দু’টি মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমান।

এসময় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

অভিযোগ গঠনের মধ্য কার্যত আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বিচারের মুখোমুখি হলেন বলে জানিয়েছেন মহানগর পিপি কামাল উদ্দিন আহমেদ।


অভিযুক্ত জহির আহমেদ নূরজাহান গ্রুপের মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার ভাই টিপু সুলতান একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।  

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, চেক প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় জহির আহমেদ ও টিপু সুলতান নামে দু’জন শিল্পপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে। আদালতে হাজির ‍না থাকায় বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নূরজাহান গ্রুপের মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে কমার্স ব্যাংক থেকে ৫৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। এ ঋণ পরিশোধের অংশ হিসেবে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ন্যাশনাল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার বিপরীতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ছয় কোটি টাকার একটি চেক দেয়া হয়।

২০১২ সালের ২১ জুন কমার্স ব্যাংকের পক্ষ থেকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে ‘অপর্যাপ্ত তহবিলের’ জন্য চেক ডিজঅনার হয়। ১২ জুলাই মেরিন ভেজিটেবল কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দেয় কমার্স ব্যাংক।

কিন্তু ঋণগ্রহীতার সাড়া না পেয়ে কমার্স ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার বেলায়েত হোসেন বাদি হয়ে নিগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট এর ১৩৮ ও ১৪০ ধারায় মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় জহির আহমেদ ও তার ভাই টিপু সুলতানকে আসামী করা হয়।  

একইভাবে অগ্রণী ব্যাংক থেকে মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে নেয়া ঋণ পরিশোধের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার একটি চেক দেয়া হয়। পরদিন পূবালী ব্যাংকের আন্দরকিল্লা শাখায় চেকটি জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে তা ডিজঅনার হয়।

২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর টাকা উদ্ধারে আসামীকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু সাড়া না পেয়ে ২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র অফিসার সুলতান আহমেদ বাদি হয়ে মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে মামলাগুলো বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়ে আসার পর আদালত অভিযোগ গঠনের সময় নির্ধারণ করেন। এছাড়া আদালত অভিযোগ গঠনের দিন আসামীদের হাজির হওয়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত সময়ে সোমবার আসামীরা আদালতে হাজির ছিলেন না।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চেক প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া চারটি মামলায় নূরজাহান গ্রুপের দু’কর্ণধার জহির আহম্মদ ও তার ভাই টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরদিন তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।

এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় ১০১ কোটি টাকার চেক প্রতারণার দায়ে জহির আহম্মেদ ও টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ‍অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আগামী ৯ মার্চ থেকে এসব মামলায় পর্যায়ক্রমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর কথা রয়েছে।

এছাড়া রোববার (২ মার্চ) ৭৫ কোটি টাকার চেক প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় জহির আহমেদ ও আছাদগঞ্জের মিজান ট্রেডার্সের মালিক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ঘণ্টা, মার্চ ০৩,২০১৪ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad