চট্টগ্রাম: ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন রাজনীতিকের নির্বাচনী হলফনামা পর্যালোচনা করে দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মো.বদিউজ্জামান।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান একথা জানান।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কয়েকজন রাজনীতিবিদ যারা ক্ষমতায় ছিলেন কিংবা এখনও আছেন, তাদের নির্বাচনী হলফনামা নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি। তদন্তে কিছু কিছু দুর্নীতির তথ্য আমরা পেয়েছি।
ক্ষমতাও দুর্নীতির অন্যতম কারণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, অনেক সময় পদ পেলে যা খুশি তা-ই করে। ক্ষমতায় বসে যদি কেউ যা খুশি তা-ই করে তাহলে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করে। তখন দেশে দুর্যোগ হয়।
গত কয়েক বছরে ব্যাংকি সেক্টরে সবচেয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখে নিরাপত্তার জন্য। সেই টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে যা ইচ্ছা তা-ই করে। হলমার্ক নিয়ে যা হয়েছে তাকে শুধু দুর্নীতি বলবনা, এটা লুটপাট, ডাকাতি। ডেসটিনি গাছ বিক্রির কথা বলে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গাছের নমুনা নাই, চিহ্ন নাই অথচ তারা নাকি গাছ বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকি সেক্টরে দুর্নীতির সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে কর্মকর্তারাও জড়িত। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছে দুর্নীতি।
দুদক পলিসি পরিবর্তন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন সবকিছুতে একসঙ্গে হাত দেবনা। বড় বড় কিছু ঘটনা অনুসন্ধান করে সুনির্দিষ্ট কিছু মামলা দিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করব। এক্ষেত্রে আমাদের পলিসিতে আমরা কিছুটা পরিবর্তন আনছি।
তিনি বলেন, সরকার ৪২০, ৪৬৭ কিংবা ৪৬৮ ধারায় প্রতারণার অভিযোগ তদন্তের ক্ষমতা দুদককে দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা প্রতারণায় যদি সরকারী স্বার্থ জড়িত থাকে সেটা তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি সরকারী স্বার্থ না থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ আগের মত তদন্ত করবে। এ বিষয়ে খুব শিঘ্রই দুদক বিধি সংশোধন করা হবে।
সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা দুর্নীতি করবেন না। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। তাহলে আমাদের কষ্ট কম হবে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, আয়কর কর্মকর্তা সৈয়দ দাউদ হায়দার, সিভিল সার্জন ডা.সরফরাজ খান বাবুল, চমেক অধ্যক্ষ ডা.সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯,২০১৪