ঢাকা, সোমবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অনিবন্ধিত কোম্পানির ওষুধ

ধর্মঘটের হুমকি ফার্মেসি মালিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৪
ধর্মঘটের হুমকি ফার্মেসি মালিকদের ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে সম্পূরক খাদ্য(ফুড সাপ্লিমেন্ট) ও অনিবন্ধিত কোম্পানির ওষুধ লেখা বন্ধ না করলে আগামী ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর দেশব্যাপী ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি(বিসিডিএস)।

রোববার দুপুরে নগরীর একটি সামাজিক কেন্দ্রে আয়োজিত বিসিডিএস চট্টগ্রাম শাখা আয়োজিত ওষুধের নকল, ভেজাল ও অনিয়ম প্রতিরোধে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র মো. ছাদেকুর রহমান।



তিনি বলেন,‘‘চিকিৎসকরা ৯০ ভাগ অনিবন্ধিত কোম্পানির ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট লিখেন। ওষুধ ব্যবসায়ীরা পেটের দায়ে এসব ওষুধ বিক্রি করেন।
চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে না লিখলে আমরাতো আর বিক্রি করতে পারি না। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যবস্থাপত্রে ফুড সাপ্লিমেন্ট লেখা বন্ধ না হলে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর দেশব্যাপী ধর্মঘট পালন করা হবে। দুই দিন দেশের কোন ফার্মেসি খোলা থাকবে না। ’

বিসিডিএস চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি সমীর কান্তি সিকদারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসাইন মল্লিক।

লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন,‘ওষুধ বিক্রির জন্য ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১লাখ ১৩ হাজার ফার্মেসিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এত লাইসেন্স বিশ্বের কোথাও দেওয়া হয়েছে কি না জানা নেই। এরপরও যদি কেউ লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা করে তাহলে তাদের ফার্মেসি উচ্ছেদ করা হবে। ’

এছাড়া সম্পূরক খাদ্য(ফুড সাপ্লিমেন্ট), মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট, চিকিৎসকদের স্যাম্পল, নকল ও অনিবন্ধিত কোম্পানির ওষুধ বিক্রি করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর হোসাইন মল্লিক বলেন,‘‘কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কমিশন নিয়ে অনৈতিকভাবে ফুড সাপ্লিমেন্ট লিখছেন অনেক চিকিৎসক। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। ফুড সাপ্লিমেন্ট কোনো ওষুধ নয়। এগুলো দোকানে রাখবেন না। যাদের দোকানে ফুড সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

তিনি বলেন,‘নকল, ভেজাল ও মানহীন ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ বিষয়ে অধিদফতর অবস্থান জিরো টলারেন্স। ’’

ভেজালকারীদের নির্মূলে তিনি ওষুধ ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা কামনা করে নকল ও ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন,‘সঠিক সংরক্ষণের অভাবে ওষুধের গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে। সুতরাং ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ওষুধ ব্যবসা করতে হলে ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অধিকাংশ দোকানে ফার্মাসিস্ট নেই। ’

খাগড়াছড়ির ফার্মাসিস্টররা ফেনীর পরিবর্তে চট্টগ্রামে যাতে লাইসেন্স নবায়ন করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান  মহাপরিচালক।

বিসিডিএসের সভাপতি মো. ছাদেকুর রহমান বলেন,‘ফুড সাপ্লিমেন্টগুলো বিদেশ থেকে কমদামে নিয়ে এসে নতুন মোড়কে কয়েকগুন বেশি দামে বিক্রি করা হয়। এসব সম্পূরক খাদ্য আসে বন্দর ও বিমান বন্দর দিয়ে কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা তা ধরেন না। তারা কি বসে বসে ডুগডুগি বাজান?’

ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রস্তুতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে আইন করারও দাবি জানান তিনি।

বিসিডিএস ফেনী শাখার সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন,‘ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা কোম্পানিগুলো নিজেদের নামে মোড়ক তৈরি করে ভেতরে অন্য কোম্পানির ওষুধ সরবরাহ করছে। ’’ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার  দাবি জানান তিনি।

এসময় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে ইনোবায়োটিক ফার্মার একটি প্যাকেট দেন তিনি। যেটির ভেতরে অ্যালবিয়ন নামে একটি কোম্পানির ওষুধ রয়েছে।

মতবিনিময় সভায় ‍অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসনের পরিচালক এএ সেলিম বারামী, বিসিডিএস সহ সভাপতি মো. আবদুল হাই, ঢাকা জেলা শাখার অবৈতনিক সম্পাদক আবু বক্কর খান মিলন ও চট্টগ্রাম শাখার অবৈতনিক সম্পাদক ওমর ইবনে আলী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।