চট্টগ্রাম: নগরীর টাইগারপাস এলাকায় নির্মাণাধীন মেয়র বাংলোর কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদত হোসেন এ নির্দেশ দেন।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, পরিবেশবাদী একটি সংগঠনের দায়ের করা রিটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত মেয়র বাংলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। এ আদেশের চিঠি পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ বহাল থাকা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে এই মেয়র বাংলো বাংলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন পরিবেশবাদি সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী।
একই বছরের ৭ অক্টোবর রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের আদালত বাংলো নির্মাণের উপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। আবেদনের শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও রিটটি খারিজ করে দেওয়া হয়।
২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর একই সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়।
গত রোববার রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক সপ্তাহের জন্য নির্মাণ কাজের উপর আবারও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নিদের্শ দেন।
রিট আবেদনে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে পাহাড় কেটে মেয়র বাংলো নির্মাণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন,‘‘মেয়র বাংলো নির্মাণে কোন পাহাড় কাটা হয়নি। এটি রেলওয়ের একটি তিনতলা বাসভবন ছিল। মেয়র বাংলো নির্মাণের জন্য বাসভবনটি রেলওয়ে থেকে নিলামে নেওয়া হয়। শুধুমাত্র ভবনটি ভেঙ্গে আমরা একই স্থানে আরেকটি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। ’’
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,‘আগে থেকে সেখানে একটি ভবন থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হয়নি। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্যও আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি ও আইনি জটিলতা শেষ হলে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। ’
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. শহীদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘পাহাড়ে কোন স্থাপনা করতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অবস্থানগত ছাড়পত্রের প্রয়োজন রয়েছে। সিটি করপোরেশন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে। হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা থাকায় কাজ বন্ধ রাখতে ৪ ডিসেম্বর করপোরেশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা তুলে নিলে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৪