ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আইল্ল্যা জ্বালিয়ে নগরে ফিরল পৌষমেলা

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
আইল্ল্যা জ্বালিয়ে নগরে ফিরল পৌষমেলা আইল্ল্যা জ্বালিয়ে পৌষমেলার উদ্বোধন করা হচ্ছে। (ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)

ভুলতে বসা আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি পৌষমেলা আবার ফিরে এসেছে।  নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথমবারের অনুষ্ঠিত হয়েছে পূর্ণাঙ্গ পৌষমেলা।

চট্টগ্রাম: ভুলতে বসা আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি পৌষমেলা আবার ফিরে এসেছে।   নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথমবারের অনুষ্ঠিত হয়েছে পূর্ণাঙ্গ পৌষমেলা।


বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিল্পকলার অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে আইল্ল্যা জ্বালিয়ে মেলার উদ্বোধন করা হয়।   এসময় উপস্থিত ছিলেন শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফি, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদেও সভাপতি ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, প্রকৌশয়লী দেলোয়ার মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নিরুপম দাশগুপ্ত, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, সাংস্কৃতিক সংগঠক হাবিব বিপ্লব, পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের সমন্বয়কারী রাশেদ হাসান এবং আহ্বায়ক শরীফ চৌহান।

প্রথমবারের মতো আয়েজিত এই পৌষমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত লোকসঙ্গীতের দিকপাল আবদুল গফুর হালীকে।    
শহীদ জায়া বেগম মুশতারি শফি বলেন, নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিটি অনুষঙ্গের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। তাহলেই নতুন প্রজন্ম আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।
‘আজ আমরা সবাই পৌষমেলায় একত্রিত হয়েছি।   বাংলার পৌষমেলা আমরা প্রায় সবাই ভুলতে বসেছি।   এগুলো আমাদের নিজস্ব প্রাচীন ঐতিহ্য।   অথচ এই প্রজন্ম এসব ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারছে না। আমাদের শৈশবে খেজুর রসের পায়েস খেতাম।   এখানকার শিশুরা হয়তো বলতেই পারবে না খেজুর রসের স্বাদ কেমন। শুধু মুখে সংস্কৃতির কথা বললে হবে না নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সব অনুষঙ্গের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।   তাহলেই তারা বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তা লালন করতে পারবে। ’ বলেন মুশতারি শফি।
পরিষদের পক্ষে শরীফ চৌহান বলেন, আমরা যখন পৌষমেলায় মিলিত হলাম তার একদিন আগে চলে গেলেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান, মাইজভান্ডারী গান ও মরমি গানের অমর স্রষ্টা আবদুল গফুর হালী।   শুধু চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় জীবদ্দশায় তিনি যথাথ মূল্যায়ন পেলেন না।   আজকের অনুষ্ঠান থেকে আমরা দাবি জানাই, আবদুল গফুর হালীকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিতে হবে।   শুধু অনুষ্ঠান করাই সংস্কৃতি লালন নয়। আবদুল গফুর হালী বাঙালি সংস্কৃতির এক কিংবদন্তি।   তার মত মহান শিল্পীদের মূল্যায়ন করা হলেই বাঙালি সংস্কৃতি টিকে থাকবে। আইল্ল্যা জ্বালিয়ে পৌষমেলার উদ্বোধন করা হচ্ছে।  (ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)
ঢোল বাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।   দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে অভ্যুদয়, সৃজামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং ছন্দানন্দ সাংস্কৃতিক পরিষদ।   দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে শুভ্রা সেনগুপ্তের পরিচালনায় স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ডান্স, রিয়া দাশ চায়নার পরিচালনায় নৃত্য নিকেতন এবং স্বপন দাশের পরিচালনায় ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র।
বাউল গানে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির আবহ ফিরিয়ে আনেনন বাউলগুরু পাগলা বাবলু।  
এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করেন কল্পনা লালা, গীতা আচার্য্য, ইলমা বিনতে বখতিয়ার, আবদুর রহিম, হাম্মাদুর রহমান ও শঙ্কর প্রসাদ দে।
আবৃত্তি পরিবেশন করেন মিসফাক রাসেল, দেবাশীষ রুদ্র, মাহবুবুর রহমান মাহফুজ, মশরুর হোসেন, এহতেশামুল হক, সাইদুল করিম সাজু, সেলিম রেজা সাগর ও শামীমা শীলা।
মেলা প্রাঙ্গনে খড় দিয়ে তৈরি ঘরে মাটির চুলার গরম পিঠা এবং খেজুর রসের স্বাদ মনে করিয়ে দিয়েছে আবহমান বাংলার চিরায়ত রূপ।   মেলায় আসা লোকজন পিঠার স্বাদ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।