ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মাদার ভেসেল কিনছে বিএসসি-সাইফ পাওয়ারটেক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৭
মাদার ভেসেল কিনছে বিএসসি-সাইফ পাওয়ারটেক বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও সাইফ পাওয়ারটেক

চট্টগ্রাম: বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক’র সঙ্গে যৌথ কোম্পানি গঠনের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অপরিশোধিত তেল পরিবহনে দুটি বড় জাহাজ কিনতে এ কোম্পানি গঠন করতে চায় বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নিজস্ব বড় জাহাজ না থাকায় বিদেশি জাহাজ দিয়ে বর্তমানে ক্রুড অয়েল পরিবহন করছে। যৌথ কোম্পানি গঠনে বিএসসি সম্প্রতি সমঝোতা স্বাক্ষরের বিষয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেয়েছে।

সাইফ পাওয়ারটেক’র প্রস্তাবের বিষয়ে বিএসসি’র নির্বাহী কমিটিতে আলোচনার পর মন্ত্রণালয়ে পাঠালে এ বিষয়ে সম্মতি দেয় মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্য ও সৌদি আরবের দুই কোম্পানি থেকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বছরে ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে।

এতে ৫০ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়।

বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, চীনের অর্থায়নে তিনটি বাল্ক ও তিনটি অয়েল ট্যাংকার কেনার প্রক্রিয়া চলছে। ছয়টি জাহাজ কিনতে বিএসসিকে ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে চীন সরকার।

সূত্র জানায়, যৌথ কোম্পানি গঠন করে জাহাজ কিনে ক্রুড অয়েল পরিবহনের প্রস্তাব দেয় সাইফ পাওয়ারটেক। প্রস্তাব অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ার হবে সমান(৫০ শতাংশ হারে)। এক লাখ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি জাহাজ কিনতে তারা স্থানীয় অথবা বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে।

সাফই পাওয়ারটেকের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দুটি জাহাজ কেনা হলে বিএসসি নিজস্ব মাদার ভেসেলে ক্রুড অয়েল পরিবহন করতে পারবে। এতে একদিকে পাবলিক কোম্পানি হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের লাভ হবে অন্যদিকে কষ্টার্জিত অর্থ সাশ্রয় হবে। নতুন জাহাজ না কেনা পর্যন্ত যৌথ কোম্পানি তেল পরিবহন করবে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাইফ পাওয়ারটেক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমীন বাংলানিউজকে জানান, বারবার চেষ্টা করেও জাহাজ কেনার জন্য ঋণ নিতে পারেনি বিএসসি। অথচ তেল পরিবহনে বাংলাদেশের বিপুল মুদ্রা ব্যয় হয়। যৌথ কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে তেল পরিবহন করতে পারলে অর্থ সাশ্রয় হবে।

জাহাজ কেনার জন্য কম সুদে ঋণ পেতে এরই মধ্যে কোরিয়া ও চীনের বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাইফ পাওয়ারটেক বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে কার্গো হ্যান্ডেলিং এর কাজ করছে। শিপিং ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এইচআর ভূঁইয়া বলেন, সাইফ পাওয়ারটেক’র পক্ষ থেকে যৌথ কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব পেয়েছি। অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, সমঝোতা স্বাক্ষরের পর আমরা উভয় পক্ষ আলোচনায় বসবো। কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে জাহাজ কিনে তেল পরিবহন করে বিএসসি যদি আর্থিকভাবে লাভবান হয় তবেই চুক্তি করবো।  

২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএসসি যৌথভাবে জাহাজ কিনতে পার্টনার খুঁজলেও তথন সাড়া পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি কয়লা ও ডিজেল পরিবহনের জন্য মাদার ভেসেল কেনার অনুমতি দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে ক্রুড অয়েল পরিবহনে কোন মাদার ভেসেল কেনার অনুমতি পাওয়া যায়নি।

সাইফ পাওয়ারটেক’র প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তারা নিজেদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব নিয়ে এসেছে তাই আমরা এটাকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছি। তবে সবদিক বিবেচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

বিএসসির বহরে বর্তমানে ৭৬ হাজার টন তেল পরিবহনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৫টি জাহাজ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বিএসসি গঠন করে সব ধরনের তেল পরিবহনের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭ 

এমইউ/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।